বর্জ্য থেকে উৎপন্ন বিদ্যুতে জ্বলল আলো

সম্প্রতি এই প্ল্যান্ট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়েছে। প্রকল্প- এলাকার সমস্ত আলোই জ্বলছে ওই প্ল্যান্ট থেকে উৎপন্ন বিদ্যুতে।

Advertisement

সমীরণ দাস

জয়নগর শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৯ ০১:৫১
Share:

n বায়োগ্যাসের প্ল্যান্ট। ইনসেটে, চা তৈরি হচ্ছে। ছবি: সুমন সাহা

বর্জ্য পচিয়ে তৈরি হচ্ছে বায়োগ্যাস। সেই গ্যাস থেকে উৎপন্ন হচ্ছে বিদ্যুৎ। সেই বিদ্যুতেই জ্বলছে আলো। জয়নগর-মজিলপুর পুরসভার উদ্যোগে কয়েকমাস আগেই তৈরি হয়েছিল বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ তৈরির প্ল্যান্ট। সম্প্রতি এই প্ল্যান্ট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়েছে। প্রকল্প- এলাকার সমস্ত আলোই জ্বলছে ওই প্ল্যান্ট থেকে উৎপন্ন বিদ্যুতে।

মাস পাঁচেক আগে নিমপীঠ রামকৃষ্ণ আশ্রমের অধীনস্থ বিবেকানন্দ ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজির সঙ্গে যৌথ ভাবে এই প্রকল্প শুরু করে জয়নগর-মজিলপুর পুরসভা। শাহাজাদাপুরে পুরসভার ময়লা ফেলার জায়গার পাশেই তৈরি হয় বায়োগ্যাস তৈরির প্ল্যান্ট। পুরসভা সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় সরকারের ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজির অর্থসাহায্যে প্ল্যান্টটি তৈরি হয়।
কিছুদিন হল সেই প্ল্যান্ট থেকেই বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে প্রকল্পের জায়গার যাবতীয় আলো প্ল্যান্ট থেকে উৎপন্ন বিদ্যুতেই জ্বলছে। এক পুরকর্তা জানান, খুব তাড়াতাড়ি স্থানীয় সমস্ত রাস্তার আলো এই বিদ্যুতেই জ্বালানোর পরিকল্পনা রয়েছে। তারপর ধীরে ধীরে পুর এলাকার অন্য জায়গাতেও বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা হবে। পুরসভা সূত্রে খবর, প্রকল্প থেকে তিন ভাবে লাভ হচ্ছে। ওই পুরকর্তার কথায়, প্রথমত, বর্জ্য পচিয়ে সেখান থেকে তৈরি হচ্ছে বায়োগ্যাস। বিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশি এই গ্যাস রান্না-সহ অন্য কাজেও ব্যবহার করা যাবে। দ্বিতীয়ত, বর্জ্যের অবশিষ্ট অংশ জৈব সার হিসেবে থেকে যাচ্ছে। চাষের কাজের জন্য খুবই কার্যকরী এই সার। তৃতীয়ত, বায়োগ্যাস থেকে উৎপন্ন হচ্ছে বিদ্যুৎ।
পুরপ্রধান সুজিত সরখেল বলেন, ‘‘রাজ্যের কয়েকটি পুরসভায় শুধুমাত্র বর্জ্য থেকে সার তৈরির প্রকল্প রয়েছে। কিন্তু তারা কেউই বিদ্যুৎ উৎপাদন করে না। সে দিক থেকে আমরাই প্রথম এরকম একটা প্রকল্প সফল ভাবে করে দেখালাম।’’পুরসভা সূত্রে খবর, বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট-এলাকাকে শিক্ষামূলক পার্ক হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারের একটা অনুদান দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সেই অনুদান আটকে রয়েছে। পুরপ্রধানের কথায়, ‘‘প্ল্যান্ট তৈরির ক্ষেত্রে কারিগরি দিকগুলির জন্য কেন্দ্র সরকার থেকে আর্থিক অনুদান পেয়েছি। সেই টাকাতেই প্ল্যান্ট তৈরি এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়েছে। পরিকাঠামোগত সাহায্য করার কথা রাজ্য সরকারের। সেই অনুদান এখনও আসেনি। ওটা পেলে প্রকল্প এলাকাটাকে সাজিয়ে তুলব। একটি পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠবে এটি। সংশ্লিষ্ট বিষয়ের ছাত্রছাত্রীদের কাছেও এটা একটি শিক্ষামূলক ভ্রমণের জায়গা হতে পারে।’’ তিনি আরও জানান, রাজ্যের অন্যত্র পুরসভার বর্জ্য থেকে সার তৈরির প্রকল্পে রাজ্য সরকার সাহায্য করছে। কোনও পুরসভা শুধু সার তৈরি করে আন্তর্জাতিক পুরস্কারও পেয়েছে। কিন্তু তাঁরা সারের পাশাপাশি বিদ্যুৎও উৎপাদন করছেন। সরকারি সাহায্য পেলে আরও এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন