এ বার সূর্য থেকে বিদ্যুৎ কামারহাটিতে

প্রতি মাসে কয়েক লক্ষ টাকা বিদ্যুতের বিল মেটাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছিল কামারহাটির পুর-কর্তৃপক্ষকে। কী ভাবে খরচ কমানো যায়, তা নিয়ে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছিল তাঁদের। অবশেষে পুর ভবনের ছাদকে ব্যবহার করেই বিদ্যুতের খরচ কমানোর পথে হাঁটছেন পুর কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

শান্তনু ঘোষ

শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৭ ১৪:২০
Share:

উদ্যোগ: কামারহাটি পুর ভবনের ছাদে। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়

প্রতি মাসে কয়েক লক্ষ টাকা বিদ্যুতের বিল মেটাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছিল কামারহাটির পুর-কর্তৃপক্ষকে। কী ভাবে খরচ কমানো যায়, তা নিয়ে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছিল তাঁদের। অবশেষে পুর ভবনের ছাদকে ব্যবহার করেই বিদ্যুতের খরচ কমানোর পথে হাঁটছেন পুর কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

বি টি রোডের উপরে কামারহাটি পুর ভবনের ছাদের একাংশে বসানো হয়েছে সৌর বিদ্যুতের প্যানেল। সৌর বিদ্যুতেই গোটা পুরসভার আলো জ্বলবে, তেমনটা কিন্তু নয়। ওই সৌর প্যানেল থেকে যে বিদ্যুৎ তৈরি হবে, সরাসরি তা যাবে সিইএসসি-র গ্রিডে। বিনিময়ে ওই পরিমাণ বিদ্যুতের দাম বাদ যাবে সিইএসসি-র বিল থেকে।

কামারহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল সাহা বলেন, ‘‘সৌর শক্তির ব্যবহার বাড়ানোর জন্য সর্বত্র প্রচার হচ্ছে। রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ধীরে ধীরে সমস্ত সরকারি ভবন এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাদে বসাতে হবে সৌর প্যানেল। সেই অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত। ফলে পুরসভার প্রতি মাসের বিদ্যুতের বিল কমবে। প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ হয়েছে। আগামী দিনে এই প্রকল্পটি আরও বাড়ানো হবে।’’

Advertisement

কামারহাটি পুরসভা সূত্রের খবর, কয়েক মাস আগে বোর্ড মিটিংয়ে মাসিক বিদ্যুতের বিল নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয়, বিদ্যুতের খরচ কমানোর জন্য সৌর বিদ্যুতের ব্যবহার শুরু করতে হবে। এর পরেই সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দেন পুর কর্তারা। সেই মতো সৌর বিদ্যুতের প্যানেল তৈরি করার একটি সংস্থা যোগাযোগ করে কামারহাটি পুর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। ওই সংস্থার টেকনিক্যাল ডিরেক্টর পার্থপ্রতিম চক্রবর্তী জানান, পুরসভার ছাদের এক পাশে কিছুটা জায়গা কর্তৃপক্ষ দিতে পেরেছেন। সেখানেই অগ্নি-প্রতিরোধকারী প্যানেল বসানো হয়েছে। তা থেকে দৈনিক গড়ে ৩৫ ইউনিট বিদ্যুৎ তৈরি হবে। তিনি বলেন, ‘‘যদিও এখন প্রতি দিন প্রায় ৫২ ইউনিট করে বিদ্যুৎ তৈরি হচ্ছে।’’

এই সৌর প্যানেলের মাধ্যমে কী ভাবে বিদ্যুতের খরচ কমছে পুরসভার?

সংস্থার তরফে দুলাল কর জানান, প্রতি দিন সৌর রশ্মি থেকে তৈরি হওয়া বিদ্যুৎ সিইএসসি-র দেওয়া একটি বিশেষ মিটারের মাধ্যমে তাদের গ্রিডে চলে যাচ্ছে। ধরা যাক, কামারহাটি পুরসভায় প্রতিদিন ১০০ ইউনিট সিইএসসি-র বিদ্যুৎ খরচ হচ্ছে। আর ওই দিন পুরসভার সৌর প্যানেলে ৫২ ইউনিট বিদ্যুৎ তৈরি হল। তা সরাসরি সিইএসসি-র গ্রিডে চলে যাওয়ায় ওই দিনের ১০০ ইউনিট থেকে ৫২ ইউনিট বাদ দিয়ে বাকি ৪৮ ইউনিটের টাকা পুরসভা থেকে নেবে সিইএসসি।

কামারহাটি পুরসভার কম্পিউটার থেকেই প্রতি মিনিটে কত সৌর বিদ্যুৎ তৈরি হচ্ছে, সে দিকেও নজর রাখা সম্ভব হচ্ছে। গোপালবাবু বলেন, ‘‘পুরসভায় প্রতি দিন প্রায় ৪০০ ইউনিট বিদ্যুৎ খরচ হয়। এই ব্যবস্থার ফলে বিদ্যুতের বিল বেশ কিছুটা কমবে। এটা খুবই লাভজনক হয়েছে। আগামী দিনে ওই রকম সৌর প্যানেল আরও বেশ কয়েকটি বসানো হবে।’’

এই পুরো প্রকল্পের জন্য প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। তবে এই টাকাও পুরসভাকে একবারে মেটাতে হবে না। পুরসভা সূত্রের খবর, প্রতি মাসে যে পরিমাণ বিদ্যুতের বিল সিইএসসি থেকে মকুব হবে, তার কুড়ি শতাংশ কেটে নিয়ে বাকিটা
সৌর বিদ্যুৎ তৈরির ওই সংস্থাকে দেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন