বেতন বৃদ্ধির দাবি

মাছের বাজারে নোট সমস্যা মিটলেও কাজে অরাজি শ্রমিক

মিটেও মিটল না সমস্যা। নোট নিয়ে ডামাডোলের জেরে সোমবার সন্ধ্যা থেকে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল রাজ্যের অন্যতম বড় পাইকারি মাছের আড়ত ডায়মন্ড হারবারের নগেন্দ্রবাজার।

Advertisement

দিলীপ নস্কর ও শান্তশ্রী মজুমদার

ডায়মন্ড হারবার ও কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৬ ০১:৫৭
Share:

ডায়মন্ড হারবারের নগেন্দ্রবাজারে মাছ-বোঝাই ম্যাটাডোরের লম্বা লাইন। নিজস্ব চিত্র।

মিটেও মিটল না সমস্যা।

Advertisement

নোট নিয়ে ডামাডোলের জেরে সোমবার সন্ধ্যা থেকে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল রাজ্যের অন্যতম বড় পাইকারি মাছের আড়ত ডায়মন্ড হারবারের নগেন্দ্রবাজার। রাজ্যের মাছ বাজারগুলির অন্যতম ‘সাপ্লাই লাইন’ এই বাজারে মাছ কেনাবেচা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আতান্তরে পড়েন মৎস্যজীবী, আড়তদার এবং পাইকারি ব্যবসায়ীরা। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার পেট্রোল পাম্পগুলিতে পুরনো টাকা নেওয়ার সময়সীমা বাড়ানোর পরে আপাতত নগেন্দ্রবাজারে পুরনো নোটেই ব্যবসা চালুর সিদ্ধান্ত হয়।

কিন্তু এ বার বেঁকে বসেছেন মাছ বাজারের শ্রমিকেরা। তাঁদের দাবি, দৈনিক কমিশন নয়, মাসিক বেতন চালু করতে হবে। নইলে তাঁরা কাজ করবেন না। ফলে মঙ্গলবার থেকে পাইকারি ব্যবসায়ী এবং আড়তদারদের মাছ কেনাবেচা শুরু করার কথা থাকলেও তা প্রায় হয়নি বললেই চলে। বুধবারও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে কিনা, সেই সংশয় থেকেই যাচ্ছে।

Advertisement

গত মঙ্গলবার দেশ জুড়ে ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট বাতিল হওয়ার প্রভাবে বেশ কয়েক দিন ধরেই নগেন্দ্র বাজারে মাছের কেনাকাটা কম হচ্ছিল। ১০০ টাকার জোগান কমে যাওয়ায় রবিবার রাতে পাইকারি মাছ ব্যবসায়ীরা জানান, নতুন টাকার জোগান পর্যাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা মাছ কিনতে পারবেন না। তাই বাজার আপাতত বন্ধ থাকবে। সেই মতো সোমবার বাজার বন্ধ থাকে। পরে মৎস্যজীবী সংগঠনের নেতা বিজন মাইতি, সতীনাথ পাত্ররা জানান, পেট্রোল পাম্পগুলিতে পুরনো টাকা নেওয়ার সময়সীমা বাড়ানোয় আপাতত ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট নেওয়া হবে। তাই বাজার চালু হয়ে যাবে। কিন্তু শ্রমিকদের নতুন দাবির পরে আপাতত সেই উদ্যোগ সম্ভব হল না। এর ফলে নষ্ট হতে বসেছে লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্রমিকদের পিছনে রয়েছে তৃণমূলের একটি গোষ্ঠী। তাঁদের সমর্থনেই শ্রমিকেরা মাসিক বেতনের দাবি তুলে কাজ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিষয়টি মেনে নিয়ে ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল বিধায়ক দীপক হালদার বলেন, ‘‘শ্রমিকদের দাবি নিয়ে অবশ্যই ভাবা হবে। কিন্তু আগে মাছ বাজার চালু করা দরকার। আমাদের দলেরই কয়েকজন শ্রমিকদের পিছনে রয়েছেন বলে শুনেছি। সকলের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করছি।’’ মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের বক্তব্য, ‘‘নগেন্দ্রবাজারে মাছ ব্যবসা স্বাভাবিক করার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’’ ডায়মন্ড হারবার আড়তদার সমিতির সম্পাদক জগন্নাথ সরকার বলেন, ‘‘শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে বেতনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানানো হলেও শ্রমিকরা নিজেদের দাবিতে অনড়।’’

সোমবার নগেন্দ্রবাজার বন্ধ থাকার পর মঙ্গলবার থেকে বাজার চালু করা হবে ট্রলার মালিকদের কাছে খবর পাঠানো হয়েছিল। সেই মতো বিভিন্ন এলাকা থেকে মাছ ভর্তি গাড়ি নগেন্দ্রবাজারে চলে আসে। রাত পর্যন্ত ২০০টির বেশি গাড়ি দাঁড়িয়ে রয়েছে। আড়তদারেরা জানিয়েছেন, এক একটি গাড়িতে আড়াই থেকে তিন টন করে মাছ রয়েছে। এমনিতেই মাছগুলি দিন কয়েক আগে ধরা হয়েছে। তার উপরে যদি সেগুলিকে ফেলে রাখা হয়, তা হলে মাছ নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন