এই ঘর থেকেই উদ্ধার হয়েছে দেহ। ইনসেটে, সোমা ঘোষ। নিজস্ব চিত্র।
থানার বিশ্রামকক্ষ থেকে উদ্ধার হল মহিলা কনস্টেবলের ঝুলন্ত দেহ।
মঙ্গলবার গাইঘাটার এই ঘটনায় মৃতার নাম সোমা ঘোষ (২৭)। বাড়ি স্থানীয় রামপুর এলাকায়। ঘটনার তদন্তে আসেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরুণ হালদার। তিনি জানান, ওই কনস্টেবল মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। দেহ বনগাঁ হাসপাতালে ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে।
সোমাদেবীর বাপের বাড়ির লোকজন পুলিশকে জানিয়েছেন, শ্বশুরবাড়িতে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হতো তাঁর উপরে। বিশেষ করে তাঁর এক দেওরের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। পুলিশের অনুমান, নির্যাতন সহ্য করতে না পেরেই সোমাদেবী আত্মঘাতী হয়ে থাকতে পারেন। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, কিছু দিন আগে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা সোমাকে মারধর করেছিল। ভোটের সময়ে তাঁকে উত্তরবঙ্গে ডিউটি করতে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু অসুস্থ হয়ে পড়ায় সোমাকে ফিরিয়ে আনা হয়। তাঁর চিকিৎসাও চলছিল। শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে অবশ্য রাত পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ হয়নি। আপাতত একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছরখানেক ধরে গাইঘাটা থানায় কর্মরত ছিলেন সোমা। তাঁর শ্বশুরবাড়ি স্থানীয় ফুলসরা গ্রামে। বছর চারেক আগে বিয়ে হয়েছিল ওই গ্রামের বাসিন্দা পার্থ ঘোষের সঙ্গে। পার্থবাবুও পুলিশে কর্মরত। বর্তমানে ঝাড়গ্রাম জিআরপিতে আছেন। তাঁদের একটি ছোট ছেলে আছে।
মঙ্গলবার সকাল ৯টা নাগাদ সোমাদেবী থানায় ডিউটি আসেন। সহকর্মীদের সঙ্গে গল্পগুজবও করেন। পরে থানায় মহিলাদের বিশ্রামকক্ষে যান। সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ সোমার এক সহকর্মী গিয়ে দেখেন, ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। সন্দেহ হওয়ায় তিনি জানালা দিয়ে উঁকি মেরে দেখেন, সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়নার ফাঁসে ঝুলছে সোমার দেহ। দ্রুত দরজা ভেঙে উদ্ধার করা হলেও বাঁচানো যায়নি সোমাকে।
এ দিকে, সহকর্মীর এ হেন আকস্মিক মৃত্যুতে হতচকিত হয়ে জ্ঞান হারান স্মৃতি মণ্ডল নামে অন্য এক মহিলা কনস্টেবল। তাঁকে চাঁদপাড়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়।