দিন কয়েক আগে খুন হয়েছে ছেলে। এ বার বাবাকেও গুলি করে, কুপিয়ে খুনের চেষ্টা হল। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে পেট্রাপোল গ্রামে।
পুলিশ জানিয়েছে, যে এলাকায় হামলা চালানো হয়েছে, সেটি ভারত-বাংলাদেশের শেষ সীমানায়। ঘটনায় মোট ন’জনের নামে অভিযোগ হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজন বাংলাদেশির নামও আছে। ধরা পড়েছে একজন। বাবর আলি নামে জখম প্রৌঢ় আরজিকর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর হাতে গুলি লেগেছে। মাথায় ধারাল অস্ত্রের কোপ পড়েছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ গুলির খোল উদ্ধার হয়েছে।
উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুরনো শত্রুতার জেরে ওই বৃদ্ধকে খুনের চেষ্টা করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। বাংলাদেশিরা কী ভাবে সীমান্ত পেরিয়ে এ দেশে ঢুকল, তা জানতে বিএসএফের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত ১টা নাগাদ বাবর আলি শৌচকর্ম করতে বাড়ির বাইরে বেরোন। সে সময়ে দুষ্কৃতীরা তাঁকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত করে। তিনি পালাতে গেলে গুলি চালানো হয়। তাঁর চিৎকারে আশপাশের লোকজন বেরিয়ে এলে দুষ্কৃতীরা পালায়। পালিয়ে যাওয়ার সময়ে শূন্যে গুলি ছোড়ে দুষ্কৃতীরা।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বাবরকে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরে পাঠানো হয় আরজিকরে।
পুলিশ জানিয়েছে, দিন কয়েক আগে বাবরের বছর চব্বিশের ছেলে জসিম মণ্ডলকে বাড়ির কাছে পিটিয়ে খুন করে কয়েকজন দুষ্কৃতী। থানায় ছ’জনের নামে অভিযোগ করেন বাবা। এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি ওই ঘটনায়।
বাবরের পরিবারের দাবি, সম্প্রতি দুষ্কৃতীরা বাবরকে হুমকি দিচ্ছিল, যাতে তিনি ছেলে-খুনের মামলায় দৌড়ঝাঁপ বন্ধ করেন। মামলা তুলে নেওয়ার জন্যও চাপ আসছিল। কিন্তু সন্তানহারা বাবার কানে তোলেননি সে কথা। সে কারণেই খুনের চেষ্টা হয়েছে তাঁকে, এমনটাই দাবি পরিবারের।
এলাকার মানুষের বক্তব্য, জসিম খুনের ঘটনায় দুষ্কৃতীরা গ্রেফতার হলে আর এই ঘটনা ঘটত না। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অতীতে জসিম অপরাধমূলক কাজে যুক্ত ছিল ঠিকই, কিন্তু খুনের কিছু দিন আগে তিনি সুস্থ জীবনে ফিরেছিলেন।
পেট্রাপোল বন্দর এবং সংলগ্ন এলাকার নিরাপত্তা বাড়ানোর লক্ষ্যে গত বছর বন্দর এলাকায় একটি থানা চালু হয়। তারপরও এমন ঘটনা ঘটায় এলাকার মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এলাকা দিয়ে চোরাচালান পাচার রমরমিয়ে চলে বলেও বাসিন্দাদের অভিযোগ। ঘটনাস্থলে পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে।