Unemployment

চাকরি হল না, পাতা হল না সংসারও

বনগাঁ শহরের মাঝেরপাড়া এলাকায় থাকেন প্রশান্ত। বনগাঁ মহকুমা আদালত সংলগ্ন পুরসভার হকার্স মার্কেটে তাঁর চায়ের দোকান। সকাল ১০টায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে দোকানে আসেন। বাড়ি ফিরতে ফিরতে রাত ১১টা।

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র  

বনগাঁ শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৯:৩৬
Share:

ব্যস্ত: নিজের দোকানে প্রশান্ত

স্বপ্ন ছিল, সরকারি চাকরি করে নিজের পায়ে দাঁড়াবেন। বিয়ে করে সংসার পাতবেন। সেই স্বপ্নপূরণে পরিশ্রম কম করেননি। কিন্তু সরকারি চাকরি জোটেনি বনগাঁর প্রশান্ত মিত্রের। ফলে জীবনে ঘর-সংসার পাতার স্বপ্ন চুরমার। বছর পঞ্চাশের প্রশান্ত এখন চা বিক্রি করেন।

Advertisement

বনগাঁ শহরের মাঝেরপাড়া এলাকায় থাকেন প্রশান্ত। বনগাঁ মহকুমা আদালত সংলগ্ন পুরসভার হকার্স মার্কেটে তাঁর চায়ের দোকান। সকাল ১০টায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে দোকানে আসেন। বাড়ি ফিরতে ফিরতে রাত ১১টা।

প্রশান্ত জানালেন, চায়ের দোকানটি তাঁর বাবার। চাকরি না পেয়ে ২০০৭ সাল থেকে এই দোকানেই বসেন তিনি। এখন রোজ ৬০০-৭০০ টাকার কেনাবেচা হয়।

Advertisement

অথচ, জীবনটা অন্য ভাবে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন প্রশান্ত। ১৯৯৬ সালে বনগাঁ দীনবন্ধু মহাবিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে অনার্স নিয়ে স্নাতক হন। পড়াশোনায় ভালই ছিলেন। পেশা হিসাবে বেছে নিতে চেয়েছিলেন শিক্ষকতাকে। তিনবার শিক্ষক নিয়োগের এসএসসি পরীক্ষায় বসেন। দু’বার লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে মৌখিক পরীক্ষায় ডাকও পান। তবে চাকরি হয়নি। প্রশান্তের কথায়, “এসএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি ভাল ছিল। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা দেওয়ার পরে আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। কিন্তু চাকরি হয়নি। চাকরি পেতে শিক্ষকতার যোগ্যতা, পরিশ্রম বা ভাল পরীক্ষা দেওয়ার কোনও মূল্য নেই। টাকার মূল্য আছে। আমার মনে হয়, চাকরি পেতে হলে যোগ্যতার পাশাপাশি আরও কিছু থাকতে হয়।”

সকাল থেকে অনেকেই আসেন প্রশান্তের চায়ের দোকানে। অনেক শিক্ষিত বেকার যুবকেরাও আসেন। তাঁদের হতাশার শরিক হতে দেখা যায় প্রশান্তকে। সাম্প্রতিক শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির নানা অভিযোগ তাঁর নজর এড়িয়ে যায়নি। যা দেখেশুনে তাঁর আক্ষেপ, “চাকরিতে স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করা জরুরি। তা হলে শিক্ষিত যুবকদের আমার মতো বঞ্চনার শিকার হতে হবে না। সব দেখে কষ্ট হয়!”

প্রশান্ত থাকেন দাদা-বৌদির সঙ্গে। তিনি বলেন, “সরকারি চাকরি পাওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। নিজের পায়ে দাঁড়াতে চেয়েছিলাম। পারিনি। তাই বিয়ে করে সংসার করা হল না।”

— ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন