পায়ে জল ঠেকলে পুন্যিও তো হয়!

বাঁশের সাঁকোটা ফুট কয়েক গিয়েই ফুরিয়ে গিয়েছে। ওই অব্দি গিয়ে বেশ বদলের পালা। পায়ের চপ্পল উঠে আসবে হাতে। প্যান্ট গুটিয়ে উঠবে হাঁটুর উপরে।

Advertisement

বিতান ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৭ ০২:৩১
Share:

আজব: এভাবেই জল ঠেঙিয়ে নৌকোয় পা। নিজস্ব চিত্র

বাঁশের সাঁকোটা ফুট কয়েক গিয়েই ফুরিয়ে গিয়েছে।

Advertisement

ওই অব্দি গিয়ে বেশ বদলের পালা। পায়ের চপ্পল উঠে আসবে হাতে। প্যান্ট গুটিয়ে উঠবে হাঁটুর উপরে। লজ্জার মাথা খেয়ে তুলতে হবে শাড়ি-ধুতি। জল কম, পাঁকই বেশি। সে সব নিয়ে রামশরণের বিশেষ হেলদোল নেই। বরং বললেন, ‘‘হোক না কাদা, গঙ্গা মাঈজির জল ছুঁয়ে ঘাট পেরোলে পুন্যিও তো কম নয়!’’

কিন্তু যাঁরা এ হেন পড়ে পাওয়া চোদ্দো আনা পুণ্যে যাঁদের রুচি নেই, তাঁদের দুর্ভোগের শেষ নেই। নৈহাটির গরিফায় রামঘাটে ওপারে হুগলি ঘাট। দু’বেলা যে ঘাটের পারাপার করতে তিতিবিরক্ত যাত্রীরা।

Advertisement

ঘাট-লাগোয়া শ্মশান। স্নান, প্রতিমা বিসর্জন সবই এখানে। সে সব জায়গায় সৌন্দর্যায়ন হলেও স্নান করার ব্যবস্থা বা ফেরি পারাপারের অবস্থা থেকে গিয়েছে সাবেক দুর্গতির পর্যায়েই।

ঘোষপাড়া রোড থেকে ৪ নম্বর পুলের আগের পিচ রাস্তা এসে শেষ হয়েছে গঙ্গার ঘাটে। এ ঘাটে ফেরি পারাপারের বয়স অন্তত সাত দশক। আলাদা করে জেটি নেই। বাঁশ আর কাঠের সরু সাঁকোই ভরসা। সাঁকোর উপর দিয়ে জোয়ারের জল বয়ে যায়। ভাটার সময়ে কাদায় লুটোপুটি খেতে হয় যাত্রীদের। সারা দিনে দু’টো নৌকো কখনও চলে, কখনও চলে না। তবে জোয়ার-ভাটায় পারাপার বন্ধ। তুফান উঠলেও সেটাই দস্তুর।

স্থানীয় বাসিন্দা শিবাণী চক্রবর্তী বলেন, ‘‘জলে পা ডুবিয়ে তবে নৌকোয় ওঠা। মোটর সাইকেল বা ভারি কিছু তুলতে হয় কসরত করে। সন্ধ্যার পর থেকে নৌকো অনিয়মিত হওয়ায় মাঝে মধ্যেই পারাপার বন্ধ হয়ে যায়।’’ পাপিয়া সরকার নামে স্কুলছাত্রীর কথায়, ‘‘হুগলির স্কুলে পড়ি। সকালে স্কুলে তাড়া থাকে। যাত্রী ভর্তি না হলে ছাড়তে চায় না ভুটভুটি। বাঁশের সাঁকো এত সরু দু’জন পাশাপাশি আসা-যাওয়া করতে অসুবিধা হয়।’’

নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক বলেন, ‘‘ঘাটের চারপাশের পরিবেশ এখন অনেক সুন্দর। আগে ওই ঘাটে সন্ধ্যায় যাওয়াটাই ভয়ের ছিল। এখন তো লোকজন বেড়াতে যান। কিছু সমস্যা আছে। দেখছি, কত দ্রুত সমাধান করা যায়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement