বিসর্জনে কার্নিভাল, জনপ্লাবন  

কার্নিভাল শুরু হওয়ার কথা ছিল সন্ধ্যা ৬টায়। কিন্তু বিকেল থেকেই মানুষের ঢল নামতে শুরু করেছিল বনগাঁ শহরে যশোর রোডের দু’পাশে। রাস্তায় আলপনা আঁকা হয়েছিল। রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ শুরু হয় কার্নিভ্যাল। 

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র

বনগাঁ শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৮ ০০:৩৪
Share:

উৎসব: বনগাঁয়। নিজস্ব চিত্র।

প্রতিমা নিয়ে কার্নিভাল হয়ে গেল বনগাঁতেও। সোমবার সন্ধ্যা থেকে রবিবার ভোর পর্যন্ত সেই অনুষ্ঠান দেখতে পথের দু’ধারে জড়ো হয়েছিলেন অসংখ্য মানুষ।

Advertisement

কখনও ঝুমুর, কখনও ছৌ, কখনও রণপা— ঝাঁ চকচকে শোভাযাত্রা এগোল নানা শিল্প আঙ্গিকে। ছিল ব্রতচারী, মহিলাদের ঢাকের বাদ্যি, ভাটিয়ালি, বাউল। থিম হিসাবে উপস্থিত ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইভ’, ‘কন্যাশ্রী’, ‘বাল্য বিবাহের কুফল’, ডেঙ্গি প্রতিরোধের বার্তা।

কার্নিভাল শুরু হওয়ার কথা ছিল সন্ধ্যা ৬টায়। কিন্তু বিকেল থেকেই মানুষের ঢল নামতে শুরু করেছিল বনগাঁ শহরে যশোর রোডের দু’পাশে। রাস্তায় আলপনা আঁকা হয়েছিল। রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ শুরু হয় কার্নিভ্যাল।

Advertisement

বহু দিন পরে শহরের বুকে ফিরল এই কার্নিভাল। বছর দশেক আগে বনগাঁ শহরে দুর্গাপুজোর বিসর্জনে আয়োজিত হত এই অনুষ্ঠান। শহরের সাংস্কৃতিক মানচিত্রে যা নতুন এক পালক যোগ করেছিল। কিন্তু বছর দু’য়েক চলার পরে হঠাৎই নিরাপত্তার কারণে পুলিশ-প্রশাসন কার্নিভাল আয়োজনের ঝুঁকি নিতে পারেনি। বন্ধ হয় উৎসব। যা নিয়ে বহু মানুষের আক্ষেপ ছিল।

এ বার পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য সিদ্ধান্ত নেন, ফের কার্নিভাল হবে। পুজো উদ্যোক্তারাও উৎসাহ দেখান। পুলিশের তরফে নিরাপত্তার আশ্বাস দেওয়া হয়।

শঙ্কর বলেন, ‘‘এ দিন মানুষের উৎসাহ ও আবেগ দেখে মনে হচ্ছিল, পুরনো ঐতিহ্য ফিরে এসেছে। এখন থেকে প্রতি বছর কার্নিভালের আয়োজন করা হবে।’’ পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৭টি পুজো উদ্যোক্তা কার্নিভালে যোগ দিয়েছিলেন। স্থানীয় অভিযান সঙ্ঘের মাঠ থেকে শুরু করে যশোর রোড হয়ে, বনগাঁ-চাকদহ সড়ক দিয়ে শোভাযাত্রা শেষ হয় বনগাঁ থানার কাছে। রাতেই ইছামতীর ঘাটে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। যোগদানকারী দলগুলিকে পুরসভার তরফে আর্থিক সাহায্য করা হয়। প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় স্থান পাওয়া ক্লাবগুলিকে আর্থিক পুরস্কার ও ট্রফিও দেওয়া হবে। সাজসজ্জায়, জাঁকজমকে ক্লাবগুলির একে অন্যকে টেক্কা দেওয়ার চেষ্টা ছিল দেখার মতো। ছিলেন বিচারকেরা। গাঁধীজির ডান্ডি অভিযান, স্বামীজির শিকাগো বক্তৃতা, পথের পাঁচালির স্রষ্টা বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়কেও তুলে ধরা হয়েছে ট্যাবলোয়। আলোর মাধ্যমেও নানা বৈচিত্র আনার চেষ্টা ছিল। পুলিশের অনুমান, প্রায় এক লক্ষ মানুষ শোভাযাত্রা দেখতে এসেছিলেন। রাত যত বেড়েছে ভিড়ও বেড়েছে। আঞ্চলিক ভাষায় কবিতা লেখেন বনগাঁর বাসিন্দা অচিন্ত্য ঘোষ। তিনি কার্নিভালে ঝুমুর দেখ অভিভূত। বালিগঞ্জ থেকে এক মহিলা আত্মীয়ের বাড়িতে এসেছিলেন। কার্নিভাল দেখবেন বলে থেকে গিয়েছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘বনগাঁর মতো মফস্‌সল শহরে এমন কার্নিভাল দেখতে
পাব ভাবিনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন