হাবরায় লক্ষ্মীপুজো

আগাম ব্যবস্থা সত্ত্বেও বন্ধ হল না শব্দবাজি

রাত ১০টা: শুনশান যশোর রোড। যানবাহনের সংখ্যা হাতেগোনা। রাস্তায় লোক নেই বললেই চলে। জয়গাছি এলাকায় ভেসে আসছে বাজির কান ফাটানো আওয়াজ। রাত ১১টা: কামারথুবা এলাকায় বাজির শব্দে কান পাতা দায়। রাত ১২টা: বাণীপুর চৌমাথায় শব্দবাজির দাপট তুলনায় কম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হাবরা শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৬ ০১:০২
Share:

রাত ১০টা: শুনশান যশোর রোড। যানবাহনের সংখ্যা হাতেগোনা। রাস্তায় লোক নেই বললেই চলে। জয়গাছি এলাকায় ভেসে আসছে বাজির কান ফাটানো আওয়াজ।

Advertisement

রাত ১১টা: কামারথুবা এলাকায় বাজির শব্দে কান পাতা দায়।

রাত ১২টা: বাণীপুর চৌমাথায় শব্দবাজির দাপট তুলনায় কম।

Advertisement

পুলিশের আগাম প্রস্তুতি সত্ত্বেও লক্ষ্মীপুজোর রাতে হাবরার নানা জায়গায় দেদার ফাটল শব্দবাজি। তবে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, দেদার শব্দবাজি ফাটলেও গত কয়েক বছরের তুলনায় তার মাত্রা ছিল কম। শব্দবাজি ফাটানোর অভিযোগে শনিবার হাবরার বিভিন্ন এলাকা থেকে ১০ জন নাবালক-সহ ৪৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আটক করা হয়েছে শব্দবাজি।

উত্তর ২৪ পরগনা জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুলিশ শব্দবাজির বিরুদ্ধে সব ধরনের পদক্ষেপ করেছে। অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে। কালীপুজোর আগে শব্দবাজির বিরুদ্ধে অভিযান আরও বাড়ানো হবে।’’

কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো হল হাবরায় অন্যতম প্রধান উৎসব। পুজোর রাতে হাবরার অলিগলিতে ফাটানো হয় শব্দবাজি। এত বছর ধরে বাজির দাপটে লক্ষ্মীপুজোর দিনে অলিখিত বন্ধের চেহারা নিত এই জনপদ। বারুদের গন্ধ এবং ধোঁয়ায় যশোর রোড দিয়ে যাতায়াত করাই দায় হত। অবস্থা বদলাতে পুজোর পর থেকে পথে নেমেছিল পুলিশ। শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। পুলিশের আশ্বাস ছিল, এ বার শব্দবাজি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে থাকবে। সেই লক্ষ্যে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে হাবরা থানার আইসির মোবাইল নম্বর ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।

কিন্তু পুজোর দিনে সে কথা পুরোপুরি রাখতে পারল না পুলিশ। লক্ষ্মীপুজোর সন্ধ্যা থেকেই শব্দবাজির দাপট শুরু হয় হাবরায়। কামারথুবা, হাটথুবা, গণদীপায়ন, জয়গাছি, চোংদা, উত্তর হাবরা, স্টাফ কোয়ার্টার, প্রফুল্লনগর, আশুতোষ কলোনি, বাণীপুর, আয়রা, ইতনা কলোনি, ডহরথোবা-সহ বিভিন্ন এলাকায় শনিবার গভীর রাত পর্যন্ত শব্দবাজির দাপট চলেছে। শহর এলাকার পাশাপাশি হাবরার গ্রামীণ এলাকা যেমন ফুলতলা, বাউগাছি, সালতিয়া, সলুয়া, পায়রাডাঙা, মছলন্দপুর প্রভৃতি এলাকাতেও শব্দবাজি ফেটেছে। তবে অন্য বছরের তুলনায় স্বাভাবিক ছিল নগরউখরা রোড, গৌরবঙ্গ রোডের মতো কয়েকটি রাস্তা। যশোর রোডেও অন্য বছরের তুলনায় শব্দবাজির মাত্রা ছিল অনেক কম।

পুলিশ জানিয়েছে, আইসির ফোন নম্বর দেওয়ার ফলে অনেকেই ফোন করে শব্দবাজির দাপটের কথা জানিয়েছেন। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া তিনটি স্কুটি করে ৬ জন মহিলা পুলিশ কর্মী, ১২টি মোটরবাইকে মোট ২৪ জন পুলিশ কর্মী হাবরা জুড়ে টহল এছাড়াও ছিল পুলিশের ৫টি গাড়ি। হাবরা থানার আইসি মৈনাক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং জেলা পুলিশের ডিএসপি (হেড কোয়ার্টার) দুর্বার বন্দ্যোপাধ্যায় টহল দিয়েছেন বিভিন্ন এলাকায়।

কিন্তু এত আয়োজনের পরেও সেভাবে সাফল্য এল না কেন? হাবরা পুরসভার পুরপ্রধান নীলিমেশ দাস বলেন, ‘‘অতীতের তুলনায় শব্দবাজি এ বার কম ফেটেছে। পুলিশ ভাল পদক্ষেপ করেছিল। কিন্তু মানুষ সচেতন না হলে শব্দবাজি বন্ধ করা যাবে না। ভবিষ্যতে আমরা আরও বেশি করে মানুষকে সচেতন করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন