এক মহিলা তার ছেলের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের রোগীদের লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে চিকিৎসককে দেখিয়ে বাইরে এসে ফোন করবেন বলে ব্যাগ থেকে মোবাইল বের করতে গিয়ে দেখেন, টাকা-মোবাইল সবই খোওয়া গিয়েছে।
এমন অভিজ্ঞতা শুধু ওই মহিলার একার নয়। ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে এসে প্রায়ই রোগী বা তাঁর আত্মীয়দের মোবাইল-টাকা-ব্যাগ খোওয়া যাচ্ছে।
মহকুমা সদর হাসপাতাল হওয়ার সুবাদে প্রতিদিনই হাজার হাজার মানুষ চিকিৎসার জন্য আসেন এখানে। অভিযোগ, ইদানীং ভিড়ের সুযোগ নিয়ে দুষ্কৃতীরা তাদের হাতসাফাই শুরু করেছে হাসপাতালেই। সন্ধে নামলে আবার হাসপাতাল চত্বরে বাড়ছে বহিরাগতদের আনাগোনা। মদ-গাঁজা-জুয়ার আসর চলে। তেমন কোনও লুকোছাপাও নেই। এমনকী, বাইরে থেকে মহিলাদের নিয়ে এসে হাসপাতালের পরিত্যক্ত ঘরগুলিতে নানা ধরনের ‘অপকর্ম’ চলছে বলেও অভিযোগ তুলছেন স্থানীয় মানুষজন।
হাসপাতালের এক কর্মী বলেন, সন্ধ্যের পর থেকে হাসপতাল চত্ত্বরে অসামাজিক লোকজনের আনাগোনা বেড়ে যায়। ওদের কিছু বলতে গেলে হুমকি দেয়। আমরা অনেক সময় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগি।
সম্প্রতি ক্যানিং-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পরেশ রাম দাস এমন অভিযোগ পেয়ে হাসপাতালে এসে জুয়াড়িদের তাড়া করতেই তারা পালিয়ে যায়। এই ঘটনার পর বেশ কিছুদিন হাসপাতাল চত্ত্বরে বহিরাগতদের আনাগোনা কম হলেও আবার তা বেড়ে গিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা বাবলু সরকার, অঞ্জন দাস বলেন, ‘‘যত দিন যাচ্ছে, হাসপাতালের পরিবেশ খারাপ হচ্ছে। মাঝে মধ্যেই চুরির ঘটনা ঘটছে। রোগী ও তাঁর আত্মীয়েরা মোবাইল-টাকা খুইয়ে সমস্যায় পড়ছেন। মদ-গাঁজা-জুয়ার আসর বসছে। সেই সূত্রেই বাড়ছে দুষ্কৃতীদের আনাগোনা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বা প্রশাসনের কোনও নজরই নেই।’’ স্থানীয় বাসিন্দারা অনেকে সমাজবিরোধীদের ভয়ে সামনে প্রতিবাদ করতেও সাহস পান না বলে জানালেন।
ক্যানিং ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির সদস্য পরেশরাম দাস বলেন, ‘‘এমন ঘটনা আমারও কানে এসেছে। হাসপাতালের মধ্যে কোনও রকম নোংরামি বরদাস্ত করা হবে না। প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে কী ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তা দেখা হচ্ছে।’’ হাসপাতালের সুপার অর্ঘ্য চৌধুরী বলেন, ‘‘এমন কিছু ঘটনা শুনেছি। কিন্তু আমার একার পক্ষে কিছু করা সম্ভব নয়। প্রশাসনকে জানিয়েছি, ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।’’