পুরনো রেডিওর টান এখনও যায়নি দুলালের

রাখঢাক না রেখেই দুলাল বলছেন, ‘কংগ্রেসের বিধায়ক হয়েও মানুষের জন্য কাজ করতে পারছিলাম না। এর থেকে কষ্টের আর কী হতে পারে। বাগদার মানুষের ইচ্ছায় আমি বিধায়ক হয়েছি। তাঁদের ইচ্ছে পূরণের জন্যই আমি তৃণমূলে ফিরেছি।’’

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র

বাগদা শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৮ ০২:৪০
Share:

কান-পেতে: নিজের অফিসে দুলাল। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

হঠাৎ করেই নিজের পরিচিত জগতটা পাল্টে গিয়েছে বাগদার বিধায়ক দুলাল বরের। বেড়েছে ব্যস্ততা। দিন কয়েক আগেও যিনি বলতেন, বিধায়ক হয়েও তাঁর কোনও কাজ নেই।

Advertisement

সেই মানুষটারই এখন ছুটে বেড়াচ্ছেন। মানুষের চাহিদাও তাঁর কাছে বেড়েছে। সবটাই হয়েছে, সম্প্রতি তৃণমূলে ফিরে আসার সুবাদে। রাখঢাক না রেখেই দুলাল বলছেন, ‘কংগ্রেসের বিধায়ক হয়েও মানুষের জন্য কাজ করতে পারছিলাম না। এর থেকে কষ্টের আর কী হতে পারে। বাগদার মানুষের ইচ্ছায় আমি বিধায়ক হয়েছি। তাঁদের ইচ্ছে পূরণের জন্যই আমি তৃণমূলে ফিরেছি।’’

দিন কয়েক আগে সকালের দিকে বাগদায় দুলালের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, উঠোনে নিজের অফিসে বসে কাজে ব্যস্ত। ভোর ৫টায় ঘুম থেকে উঠে সোজা নিজেদের জমিতে চলে যান। সেখানে আনাজের পরিচর্যা করেন। সেখান থেকে ফিরে ৬টার মধ্যে অফিসে। সেখানে আছে পুরনো একটি রেডিও। মাঝে মধ্যে খবরে কান পাতছেন।

Advertisement

ইন্টারনেট-টেলিভিশন, মোবাইলের যুগেও দুলাল খোঁজ-খবর রাখেন বেতারের মাধ্যমেই। বললেন, ‘‘পুরনো দিনের অভ্যাস, সংস্কার চট করে ফেলতে পারি না।’’ যা শুনে উপস্থিত কয়েকজন বললেন, ‘‘সে জন্যই দাদা পুরনো দল তৃণমূলে ফিরে এলেন।’’

দুলাল জানান, বিধানসভায় কংগ্রেসের প্রার্থী হওয়ার সময়ে তৃণমূলের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা অনেকে তাঁকে সমর্থক জুগিয়েছিলেন। অনেকে পঞ্চায়েত স্তরের জনপ্রতিনিধি ছিলেন। তাঁরা দলে গুরুত্ব পাচ্ছিলেন না। তিনি দলে ফেরায় বাকিরাও গুরুত্ব পেতে শুরু করেছেন বলে জানান দুলাল। তাঁর কথায়, ‘‘আমি বিধায়ক হয়েও এত আনন্দ পাইনি, ওই লোকগুলোকে দলে গুরুত্ব দিয়ে ফিরিয়ে দিতে পেরে যতটা পেয়েছি।’’ দুলালের অবস্থান ঘাসফুল শিবিরে ফের শক্ত হওয়ায় তাঁর অনুগামীদের অনেকেই এ বার পঞ্চায়েত ভোটে ফের তৃণমূলের টিকিট পেয়েছেন। বিধায়কের কথায়, ‘‘দল যে এত সম্মান দেবে, তা ভাবতে পারিনি।’’ পার্থ চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকদের কাছে কৃতজ্ঞ তিনি, বলেন, দুলাল।

বাগদার প্রাক্তন বিধায়ক উপেন বিশ্বাসের সঙ্গে দুলালে সম্পর্কের আড়াআড়া স্থানীয় রাজনীতিতে কারও অজানা নয়। উপেন অনুগামীরাও এখন তাঁর সঙ্গে দেখা করছেন, পরামর্শ নিচ্ছেন বলে দাবি দুলালের। দুলাল বলেন, ‘‘উপেনবাবুকে কয়েকবার ফোন করেছিলাম। উনি ব্যস্ত বলে হয় তো ফোনটা ধরতে পারেননি। তবে আমি ওঁর সঙ্গে দেখা করব। দলের স্বার্থে আমরা এক সঙ্গে কাজ করতে চাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন