মানুষের ভিড়ে জমজমাট মতুয়া মহামেলা

ভক্তদের নিজেদের বাড়িতে আশ্রয় দিয়ে খাওয়ার ব্যবস্থা করেন এখানকার বাসিন্দারা। সর্বত্র খোলা হয়েছে জলসত্র। ভক্তদের বিশ্রামের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গাইঘাটা শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০১৮ ০২:১৫
Share:

আকাশপথে: ড্রোনের নজর মেলা প্রাঙ্গণে। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

কামনা সাগরের (বড় একটি পুকুর) পাড়ে বসে বুধবার দুপুরে ঘনঘন নিজের মোবাইলে সময়ে দেখছিলেন প্রৌঢ়া। ‘মাহেন্দ্রক্ষণ’ বেলা ৩টের সময়ে তিনি নেমে পড়লেন জলে। ডুব দিয়ে উঠেই চোখে মুখে ছড়িয়ে পড়ল স্বস্তি। বললেন, ‘‘এই স্নান বড় পুণ্যের। প্রতি বছর দল বেঁধে এখানে ছুটে আসি।’’

Advertisement

ধর্মগুরু হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মতিথি মধুকৃষ্ণ ত্রয়োদশী উপলক্ষে গাইঘাটার ঠাকুরনগরে বুধবার থেকে শুরু হয়েছে মতুয়া ধর্ম মহামেলা। মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি তথা বনগাঁর সাংসদ মমতা ঠাকুর বলেন, ‘‘কামনা সাগরে পুণ্যস্নান শুরু হয়েছে বুধবার বেলা ৩টে থেকে। স্নান চলবে বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টে ৪৬ মিনিট পর্যন্ত। ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বহু মানুষ ভিড় করতে শুরু করেছেন।’’ মেলা চলবে সাতদিন। বাংলাদেশের ওরাকান্দিতে ওই মেলা শুরু হয়েছিল। ১৯৪৮ সাল থেকে ঠাকুরনগরে মেলা বসছে। এ দিন দেখা গেল, পুণ্যস্নানের পরে ভক্তেরা হরিচাঁদ ও গুরুচাঁদ মন্দিরে পুজো দিচ্ছেন। মতুয়া মহাসঙ্ঘের প্রধান উপদেষ্টা বীণাপানি ঠাকুর (বড়মা) আশীর্বাদ নিচ্ছেন। ঠাকুরনগর জুড়ে বসেছে শ’য়ে শ’য়ে দোকানপাট।

ভক্তদের নিজেদের বাড়িতে আশ্রয় দিয়ে খাওয়ার ব্যবস্থা করেন এখানকার বাসিন্দারা। সর্বত্র খোলা হয়েছে জলসত্র। ভক্তদের বিশ্রামের ব্যবস্থা করা হয়েছে। গাইঘাটা পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি তথা ঠাকুরনগরের বাসিন্দা ধ্যানেশনারায়ন গুহ বলেন, ‘‘ভক্তদের খাওয়ানর জন্য কয়েকশো কুইন্ট্যাল চাল-ডালের ব্যবস্থা হয়েছে।’’ পাঙ্খাবাবার চায়ের স্টলে মিলছে বিনামূল্যে চা। চারদিক থেকে ভেসে আসছে ডঙ্কা-কাঁসি, শিঙার শব্দ। অনেকের হাতে লাল-সাদা মতুয়া নিশান। কারও হাতে হরিচাঁদ ঠাকুরের ছবি। মুখে ‘হরি বোল’ ধ্বনি। ৩০০ পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ার রয়েছে নিরাপত্তার দায়িত্বে। পুলিশি সহায়তা কেন্দ্র চালু হয়েছে। এসডিপিও বনগাঁ অনিল রায় বলেন, ‘‘মেলায় আসা ভক্তদের জন্য সমস্ত রকম নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ২৪ ঘণ্টা পুলিশি নজরদারি রাখা হয়েছে।’’

Advertisement

এ দিন মেলায় এসেছিলেন বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়। দলের জলসত্রের উদ্বোধন করেন। ঠাকুরবাড়িতে গিয়ে বড়মার সঙ্গে দেখাও করেন। পঞ্চায়েত ভোটের মুখে যার রাজনৈতিক তাৎপর্য রয়েছে বলে মনে করছেন অনেকেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন