ঝামেলা: কাকদ্বীপে তোলা নিজস্ব চিত্র
চিকিৎসক সময়ে আসেন না। রোগীদের সঠিক দেখভাল করেন না—এরকম নানা গাফিলতি নিয়ে নানা অভিযোগ পেয়ে কাকদ্বীপ মহকুমা হাসপাতালে বৈঠকে বসেছিলেন মহকুমা প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা। শুক্রবার সেই বৈঠকে এসে ফের তাঁদের শুনতে হল চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ।
এ দিন হাসপাতালে অভিযোগ জানাতে এসেছিলেন শান্তুপদ দাস। তাঁর স্ত্রী বছর ছাব্বিশের সুষমাদেবী গত ২৩ ফেব্রুয়ারি সন্তান প্রসব করেন। তার পর থেকেই তিনি নানা জটিলতায় ভুগছেন। প্রস্রাব হচ্ছে না বললেই চলে। তাঁর অভিযোগ, বিষয়টি নিয়ে বার বার বলা সত্ত্বেও চিকিৎসকেরা গুরুত্ব দেননি। ওই অবস্থাতেই রোগীকে ছুটি দিয়ে দেন তাঁরা। বাড়ি যাওয়ার পরে সমস্যা আরও বাড়ে। ৫ মার্চ তাঁকে ফের কাকদ্বীপ মহকুমা হাসপাতালে আনা হয়। অভিযোগ, তখন ভাল করে পরীক্ষা না করেই শুধুমাত্র ‘ভাল করে জল খান’ বলে ছেড়ে দেওয়া হয়। অবস্থা বুঝে সুষমাদেবীকে ওই দিনই ডায়মন্ডহারবার মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে শয্যা মেলেনি। এখন তিনি একটি নার্সিংহোমে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি রয়েছেন।
পেশায় সমবায়কর্মী শান্তুপদবাবুর ক্ষোভ, ‘‘চিকিৎসক, নার্সেরা আমাদের কথা শোনেননি। উল্টে রোগীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছে। আমার স্ত্রীর কিছু হলে কে দায় নেবে?’’ কাকদ্বীপ মহকুমা হাসপাতালের সুপার বলেন, ‘‘আমরা অভিযোগের তদন্ত করব। ওই রোগীর পরিবারকে বলা হয়েছে, তাঁরা রোগীকে নার্সিংহোম থেকে ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে তাঁর চিকিৎসার সব রকম ব্যবস্থা করা হবে।’’ বিষয়টি এ দিন মহকুমা প্রশাসনের কর্তাদের নজরে আসার পরে হাসপাতালের কাছে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এর আগে সেখানে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে এক যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছিল। এছাড়া হাসপাতালের চিকিৎসকদের বাইরে ‘প্র্যাকটিস’ করা এবং তাঁদের কাজের সময় নিয়ে বিস্তর অভিযোগ জমা পড়েছিল কাকদ্বীপ মহকুমা প্রশাসনে। মূলত সেই সব কারণেই এ দিনের বৈঠক হয়। ছিলেন কাকদ্বীপের মহকুমাশাসক রাহুল নাথ এবং কাকদ্বীপ ব্লকের বিডিও পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিনের বৈঠকে হাসপাতালে কাজের সময়ে যাতে কেউ বাইরে চিকিৎসা না করেন সেই বিষয়ে এ দিন সতর্ক করা হয়েছে। চিকিৎসকদের ‘ডিউটি রোস্টার’ নতুন করে সাজাতেও বলা হয়েছে।