বাড়িতে ঢুকে কিশোরীর ‘যৌন হেনস্থা’

মেয়ের আর্ত চিৎকার শুনে তার বাবা বাধা দিতে গেলে তাঁকে মাটিতে ফেলে বেধড়ক মারধর করে সেই ব্যক্তি। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বাড়ি থেকে চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে ছুটে আসেন পড়শিরা। সঞ্জিত বিশ্বাস নামে ওই ব্যক্তিকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেন বাসিন্দারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৮ ০১:৪৬
Share:

দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন হেনস্থার চেষ্টা মধ্যবয়সী এক প্রতিবেশীর। প্রতীকী ছবি।

মত্ত অবস্থায় রাতে ঘরের দরজা ভেঙে দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন হেনস্থা ও তাকে অপহরণের চেষ্টা করল মধ্যবয়সী এক প্রতিবেশী। শনিবার ভোরে এমনই অভিযোগ জমা পড়েছে দেগঙ্গা থানায়। আরও অভিযোগ, মেয়ের আর্ত চিৎকার শুনে তার বাবা বাধা দিতে গেলে তাঁকে মাটিতে ফেলে বেধড়ক মারধর করে সেই ব্যক্তি। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বাড়ি থেকে চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে ছুটে আসেন পড়শিরা। সঞ্জিত বিশ্বাস নামে ওই ব্যক্তিকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেন বাসিন্দারা। ঘটনার পর থেকে আতঙ্কে বাড়ি থেকে বেরোচ্ছে না ওই কিশোরী।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কিশোরীর মা অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী। বাবা বিদ্যুৎ দফতরের ঠিকা সংস্থায় কাজ করেন। তাঁদের একমাত্র মেয়ে মছলন্দপুরের একটি স্কুলের পড়ুয়া। এ দিন ওই কিশোরীর বাবা বলেন, ‘‘ভোর চারটে নাগাদ দরজা ভাঙার শব্দে ঘুম ভেঙে যায়। ঘর থেকে বেরিয়েই দেখি, প্রতিবেশী সঞ্জিত আমার মেয়ের ঘরে ঢুকে অসভ্যতা করছে। মেয়ে চিৎকার করছে। আমার মেয়ের হাত ধরে টেনে ওকে ঘর থেকে বার করার চেষ্টা করছিল সঞ্জিত।’’

এমন ঘটনায় প্রথমে হতভম্ভ হয়ে পড়েন ওই কিশোরীর বাবা-মা। বাবা বলেন, ‘‘অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছিল সঞ্জিত। বাধা দিতে গেলে আমার মুখে সজোরে ঘুষি মারে। আমি মাটিতে পড়ে যাই। আমাকে লাথি মেরে মেয়েকে নিয়ে পালানোর চেষ্টাও করে।’’ এরই মধ্যে ওই কিশোরীর মা বাড়ি থেকে বেরিয়ে অন্য পড়শিদের ডাকেন। তাঁর কান্না শুনে এলাকার মানুষ ছুটে আসেন। তাঁরাই ধরে ফেলেন সঞ্জিতকে। কিন্তু নেশার ঘোরে সে সবাইকে মারতে থাকে। এর পরেই শুরু হয় গণধোলাই। পরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে সঞ্জিতকে উদ্ধার করে। সব শুনে গ্রেফতার করা হয় তাকে।

Advertisement

এ দিন ওই কিশোরী বলে, ‘‘উনি আমাদের বাড়ির পাশেই থাকেন। আমি দাদু বলে ডাকি। তিনি আমার সঙ্গে এমন করলেন কেন?’’ কাঁপতে কাঁপতে মেয়েটি বলে, ‘‘খুব ভয় করছে। বাবা ও মা বাড়িতে থাকে না। একাই স্কুলে যাই। এর পরে যদি আবার কিছু হয়।’’ একই চিন্তা মায়েরও। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা স্বামী-স্ত্রী সকালেই কাজে বেরিয়ে যাই। মেয়ে তো একাই বাড়িতে থাকে। এর পরে আমরা কী করে ওকে একা রেখে যাব?’’

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত সঞ্জিত বছর দশেক আগে বিয়ে করে। তার এক সন্তানও ছিল। চার বছর আগে সন্তানের মৃত্যু হয়। এর পরে তার স্ত্রীও তাকে ছেড়ে চলে যান। স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, বেশ কিছু দিন ধরেই খুব নেশা করছিল ওই ব্যক্তি। কী কারণে সে ওই কিশোরীর বাড়ি ঢুকে এমন কাজ করল, তার তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন