অসমাপ্ত: চালু হচ্ছে না সেতু। ছবি: দিলীপ নস্কর
সেতুর কাজ শেষ হয়েছে বছরখানেক আগে। কিন্তু সেতুর সংযোগকারী দু’দিকের অ্যাপ্রোচ রোড এখনও তৈরি না হওয়ায় সেতু ব্যবহার করা যাচ্ছে না। রায়দিঘির মথুরাপুর ২ ব্লক ও জয়নগর ২ ব্লকের মাঝে প্রায় ২০০ মিটার চওড়া ঠাকুরান নদী। এই নদীর উপরে দুই ব্লকের সংযোগকারী সেতুটিতে চলাচল শুরু হলে দু’পারের বহু মানুষ উপকৃত হবেন।
২০০৮ সালে জয়নগর ২ ব্লকের চুপড়িঝাড়া ও রায়দিঘির মথুরাপুর ২ ব্লকের পূর্বজটা গ্রামের সংযোগরক্ষাকারী ওই সেতু নির্মাণের জন্য সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদ থেকে অনুমোদন মিলেছিল। কাজ শুরু হয়। কিন্তু বছরখানেক চলার পরে কাজ বন্ধ করে ঠিকাদার চলে যায়। কয়েক বছর কাজ বন্ধ ছিল। ২০১৩ সালে সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদ থেকে ফের এই কাজের জন্য সাড়ে ১৬ কোটি টাকা অনুমোদিত হয়। শুরু হয় কাজ। ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে সেতুর নির্মাণকাজ শেষও হয়। কিন্তু দু’দিকের অ্যাপ্রোচ রোড তৈরি না হওয়ায় সেতু চালু করা যায়নি।
সেতু চালু হলে দুই ব্লকের যোগাযোগ ব্যবস্থার অনেকটাই উন্নতি হবে। জয়নগর ২ ব্লকের চুপড়িঝাড়া, নলগোড়া, মনিরতট, মথুরাপুর ২ ব্লকের কঙ্কনদিঘি, নগেন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ বাড়বে। দুই ব্লকের প্রত্যন্ত এলাকায় মূলত কৃষিজীবী মানুষের বাস। সেতু ব্যবহার করা গেলে তাঁরা তাঁদের চাষের শাক-আনাজ নিয়ে সরাসরি রায়দিঘি বড়বাজারে পৌঁছতে পারবেন। ওই দুই ব্লক ছাড়াও কুলতলি ব্লকের বাসিন্দাদের একাংশও সেতু পার হয়ে রায়দিঘিতে আসতে পারবেন। এলাকার বহু ছাত্রছাত্রী নৌকোয় নদী পেরিয়ে রায়দিঘি কলেজে আসেন। সময় লাগে বেশি। সেতু খুলে গেলে তাঁরা কম সময়ে সরাসরি কলেজে পৌঁছতে পারবেন।
অ্যাপ্রোচ রোড তৈরির জন্য দু’দিকে ব্যক্তি মালিকানার চাষের জমি রয়েছে প্রায় ১০ বিঘা। ওই জমির অংশীদার ১৫ জন চাষি। ওই জমি অধিগ্রহণ করেই রাস্তা তৈরির কথা। চাষিরা উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পেলে জমি দিয়ে দেবেন, সে কথাও সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রীকে জানিয়ে রেখেছেন। জমির মালিক নিকুঞ্জ হালদার বলেন, ‘‘অ্যাপ্রোচ রোড তৈরির জন্য জমি ছাড়তে আমরা রাজি। ২০১৬-র জানুয়ারি মাসে মন্ত্রীর কাছে এই মর্মে লিখিত ভাবে জানিয়েও রেখেছি। কিন্তু আমাদের সঙ্গে এখনও পর্যন্ত কেউ যোগাযোগ করেনি।’’ ওই এলাকার বাসিন্দা শিক্ষক উদয় মণ্ডল জানান, চাষিদের জোট করে তিনি প্রশাসনের কাছে ক্ষতিপূরণের আবেদন করে এসেছেন। অ্যাপ্রোচ রোডটি দ্রুত তৈরি হোক, চান তাঁরাও।
এ বিষয়ে সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরা বলেন, ‘‘সেতুর দু’দিকের অ্যাপ্রোচ রোডের কাজ খুব শীঘ্রই শুরু হবে। দফতরে ডেকে চাষিদের বলে দেওয়া হয়েছে, ক্ষতিপূরণের টাকা তাঁরা সময় মতো পেয়ে যাবেন।’’