প্রথম ভোট

বুথে যাবেন বলে নতুন জামা বেছেছেন লাভলি

প্রথম বার ভোট দেবো মানে তো বড়ই হয়ে গেলাম। একগাল হেসে বলেন পাপিয়া মণ্ডল। কাঁচরাপাড়ার জোড়ামন্দির এলাকার বাসিন্দা সদ্য তরুণীর কথায়, ‘‘ভোটার কার্ড থাকার কত সুবিধা। নিজের মোবাইল ফোনের সিমটা নিজের নামে কিনতে পারব। এত দিন তো বাবা-দাদাদের থেকে ধার করতে হত।

Advertisement

বিতান ভট্টাচার্য

কাঁচরাপাড়া শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৫ ০১:১৬
Share:

প্রথম বার ভোট দেবো মানে তো বড়ই হয়ে গেলাম। একগাল হেসে বলেন পাপিয়া মণ্ডল। কাঁচরাপাড়ার জোড়ামন্দির এলাকার বাসিন্দা সদ্য তরুণীর কথায়, ‘‘ভোটার কার্ড থাকার কত সুবিধা। নিজের মোবাইল ফোনের সিমটা নিজের নামে কিনতে পারব। এত দিন তো বাবা-দাদাদের থেকে ধার করতে হত। বেড়াতে গেলেও পরিচয়পত্র মানে সেই স্কুলের কার্ড। অশোক স্তম্ভ লাগানো কার্ড আমার নিজের হবে, আমি এ দেশের নাগরিক তার বৈধতা থাকবে, এটাই তো বেশ রোমাঞ্চের।’’

Advertisement

ভোট নিয়ে উত্তেজনার শেষ নেই পাপিয়ার। এখন থেকেই ভোটার কার্ডটা সব সময় সঙ্গে সঙ্গে রাখে। সুযোগ পেলেই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখে। কাঁচরাপাড়া কলেজের কলা বিভাগের ছাত্রী পাপিয়া ভোট দেবে অনেক প্রত্যাশা নিয়ে। নতুন পুরবোর্ড যেন শহরকে আরও সুন্দর করতে পারে। নিকাশির সমস্যা যাতে নির্মূল হয়। রাস্তায় জল জমে বর্ষার আনন্দটাই মাটি হয়ে যায়। তাই জল তাড়াতাড়ি নামার ব্যবস্থা যাতে হয়, এ সবই চাহিদা তাঁর। কাঁচরাপাড়ায় একটা আইটিআই কলেজ হলে বড় ভাল হয়, প্রচারে প্রার্থীদের দেখলে এ কথাও মনে করিয়ে দেবেন ভেবে রেখেছেন। আর এলাকায় এ বার একটা অন্তত মাল্টিপ্লেক্স হোক, এটাও তাঁর চাহিদার তালিকায়। পাপিয়া বলেন, ‘‘চাওয়ার তো অনেক কিছুই আছে। আর চাইতে হলে ভোট তো দিতেই হবে।’’

প্রথম ভোট নিয়ে উন্মাদনার শেষ নেই ব্যারাকপুর মহকুমার সীমান্ত শহর কাঁচরাপাড়ায়। পাপিয়ার মতো সিটি বাজার কলোনির নীলম দাসও ভোট দেবে এলাকার উন্নয়নের আশায়। নীলমের কথায়, ‘‘আগে বাবা, মা ভোট দিতে যেতেন। আমি বাড়িতে থাকতাম। কিন্তু এ বার আমিও যাব। অনেক স্বপ্ন নিয়ে যাব।’’ নীলমের প্রথম প্রত্যাশা, এলাকা যাতে দূষণমুক্ত হয়। নিকাশি নালা ঠিক হয়। যত্রতত্র আবর্জনা যেন পড়ে না থাকে।

Advertisement

২১ নম্বর ওয়ার্ডের সাহাপুকুর মোড়ের লাভলি রায় তো প্রথম ভোট দিতে যাওয়ার আনন্দে নতুন জামা আলমারিতে গুছিয়ে রেখেছে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ভোট মানে তো উৎসব। নতুন জামা পরে প্রথম ভোটটা দেব। অনেক আশা নিয়েই দেব। আমাদের এখানেও আবর্জনা আর নিকাশি সমস্যা প্রবল। সাহাপুকুর মাঠটা তো এখন খেলার অযোগ্য হয়েছে আবর্জনা জমে। আর ঝড় উঠলে সব আবর্জনা উড়ে এসে আশপাশের বাড়িতে নোংরা করে দেয়।’’

১৯ নম্বর ওয়ার্ডের মাম্পি দাসের ভোট দেওয়ার ইচ্ছে ইভিএম মেশিন জীবনে প্রথমবার ছুঁয়ে দেখবে বলে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘নিকাশি নালা ও নোংরার সমস্যা আছে। তবে এখন কাঁচরাপাড়া অনেক নিরাপদ। ভোট দেবো শহর যাতে নির্মল হয়, এই প্রত্যাশা নিয়ে।’’

নিশ্চিন্তে বিনা বাধায় ভোট দিতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে অবশ্য খানিকটা সংশয় আছে ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের মান্দারি বাজারের রন্তিম বন্দ্যোপাধ্যায়ের। রন্তিম কাঁচরাপাড়া কলেজে বিএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র। তাঁর অভিযোগ, ‘‘গত পাঁচ বছরে প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। এত খেলার মাঠ তবু খেলাধুলো তেমন হয় না। ভোট দিতে যাওয়ার ইচ্ছে তো আছেই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত গিয়ে যদি দেখি আমার ভোট পড়ে গিয়েছে, খুব খারাপ লাগবে।’’

রেলকলোনির অমৃত সিংহও ভোট নিয়ে খুব উত্তেজিত। তাঁর বক্তব্য, ‘‘প্রথম ভোট তাই দেবো তো বটেই। আমার গণতান্ত্রিক অধিকার প্রকাশের প্রথম সুযোগ বলে কথা। কিন্তু আমার প্রত্যাশা, পরিকাঠামো সামগ্রিক উন্নয়ন নিয়ে। আগে নিকাশি ও আবর্জনা সমস্যা মেটাতে হবে নির্বাচিত প্রতিনিধিকে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন