সব তৈরি। শুধু মুখ্যমন্ত্রী সময় দিলেই উদ্বোধন করা হবে। এমনটাই দাবি করেছিলেন পুরকর্তারা। এরপর তিন বার পিছিয়েছে উদ্বোধনের দিন। এ বার স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, ডায়মন্ড হারবারের জলপ্রকল্প চালু হবে তো? কিন্তু তার স্পষ্ট উত্তর মেলেনি।
পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহ করার জন্য ২০১০ সালে ৩৪ কোটি ৮০ লক্ষ টাকার জল প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল। শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৩ সালে। কিন্তু তা হয়নি। ফলে এখন খরচ বেড়ে গিয়েছে ২ কোটি টাকারও বেশি। এ দিকে এখনও চার মাসের কাজ বাকি বলে জানাচ্ছেন পুর-ইঞ্জিনিয়রেরা। কেন এত দেরি হচ্ছে প্রকল্পের রূপায়নে? তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার চেয়ারম্যান মীরা হালদার বলেন, ‘‘কয়েক বার প্রকল্পের টেন্ডার বাতিল করতে হয়েছে বলে কাজ শুরু করতে দেরি হয়েছে। তবে শেষ অংশের কাজ শুরু হবে শীঘ্রই।’’
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রকল্পের দু’টি অংশের কাজ শেষের মুখে। কিন্তু তৃতীয় অংশের কাজ করাতে গিয়ে বিপদে পড়েছে পুরসভা। কাজে তিন বার টেন্ডার বাতিল করে দিয়েছে ইঞ্জিনিয়ারিং অধিকর্তার দফতর। কিন্তু কেন? জানা গিয়েছে, গত বছর প্রথমবার শেষ পর্যায়ের ওই টেন্ডার ডাকার পরে কেউ তাতে যোগ দেয়নি। দ্বিতীয়বার যাঁরা যোগ দিয়েছিল, তাঁরা যা দর দিয়েছিল তা বেশি বলে বাতিল করে পুরইঞ্জিনিয়ারিং অধিকর্তার দফতর। তৃতীয়বারেও একই ঘটনা ঘটে। চতুর্থবারের জন্য নতুন করে টেন্ডার ডেকে তা পাঠানো হয়েছে পুর ইঞ্জিনিয়ারিং অধিকর্তার দফতরের কাছে। টেন্ডার অনুমোদন হলে আরও ৪ মাসের কাজ করা হবে।
এখনও পর্যন্ত কী কী কাজ হয়েছে?
হুগলির যেখান থেকে জল তুলে শোধন করা হবে সেই জেটি, ট্রিটমেন্ট প্লান্ট তৈরি, তিনটি জলাধারের মধ্যে দু’টির কাজ হয়েছে। সেগুলিতে জল তুলে পরীক্ষাও করেছেন পুরসভার ইঞ্জিনিয়রেরা। তৃতীয় জলাধারের কাজ বাকি। প্রকল্পে মোট ১৬টি ওয়ার্ডে ধাপে ধাপে পাইপলাইন বসানোর কথা ছিল। ১, ২, ৩, ৪, ১৫ ও ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে কাজ প্রায় ৯৫ শতাংশ হয়ে গিয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ৫, ১২, ১৩ ও ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাজও ৮৫ শতাংশ শেষ। পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে, এই কাজেও দেরি হয়েছে প্রায় ১ বছর। এখন প্রায় ১ মাসের কাজ বাকি। তৃতীয় পর্যায়ের কাজের তালিকায় ৬ থেকে ১১ নম্বর ওয়ার্ডে পাইপ বসানো ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডেও একটি জলাধার তৈরির কাজ হবে। তার টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
তবে এলাকাবাসীর প্রশ্ন, এই জল প্রকল্প চালু করতে দু’টি বড় ভোট পার করে দিয়েছে তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ড।
এ বার কড়া নাড়ছে তিন নম্বর। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগেই কী তা চালু হবে? পুরসভার থেকে ইঙ্গিত মিলেছে, দু’টি অংশে জল প্রকল্প চালু করে দিয়ে তৃতীয় অংশের কাজ হতে পারে। তবে তা পুরকর্তৃপক্ষ করবে কি না তা স্পষ্ট করা হয়নি। দীর্ঘদিন আগের জলের পাইপের অবস্থা কয়েকটি ওয়ার্ডে বেশ খারাপ। প্রতিনিয়ত শ্যাওলা, নোংরা বেরিয়ে আসে। তাই নতুন প্রকল্পের দিকে তাকিয়ে ডায়মন্ড হারবারবাসী।