শাসনের সহরা গ্রামে পুলিশের উপরে হামলার ঘটনায় জড়িত অভিযোগে পুলিশ শনিবার রাতভর তল্লাশি চালিয়ে চার মহিলা-সহ মোট ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের রবিবার বারাসত জেলা আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক চার মহিলাকে চোদ্দ দিনের জেলহাজতে ও বাকিদের চার দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। উত্তর ২৪ পরগনার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুলিশের উপরে হামলা, সরকারি কাজে বাধা দেওয়া-সহ একাধিক অভিযোগে ধৃতদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।’’ ঘটনার পর থেকেই এলাকার পুরুষেরা ঘরছাড়া। থমথমে পরিবেশ। পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। টহলও চলছে।
পুলিশ জানায়, শনিবার বিকেলে সহরা এলাকার কিছু বাসিন্দা স্থানীয় মেছোভেরি-সংক্রান্ত বিবাদের জেরে বাপি মণ্ডল নামে এক যুবককে মারধর করে একটি ঘরে আটকে রাখে। খবর পেয়ে শাসন থানার পুলিশ ওই যুবককে উদ্ধার করতে গেলে পুলিশকে ঘিরে ফেলে গ্রামবাসীরা বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। বাপিকে উদ্ধার করে আনার সময়ে পুলিশকে লক্ষ থেকে ইটবৃষ্টি শুরু হয়। জখম হন দুই পুলিশ কর্মী। পুলিশ তখনকার মতো ফিরে গেলেও পরে বিশাল পুলিশ বাহিনী এসে লাঠি চালিয়ে বাপিকে উদ্ধার করে বারাসত হাসপাতালে ভর্তি করে। পুলিশের লাঠির ঘায়ে কয়েক জন মহিলা জখম হয়েছেন বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বাম আমলে সিপিএম নেতারা মেছোভেরির নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে রেখেছিলেন। এখন তা দেখভাল করে শাসক দলের নেতারা। অতীতে প্রতি বছর ভেড়ি লিজে নেওয়ার সময়ে গ্রামবাসীদের লভ্যাংশের একটা অংশ দেওয়া হতো। শাসনে দু’ধরনের মেছোভেরি আছে। ব্যক্তিগত মালিকানার ভেরি এবং খাস জমির ভেরি। খাসজমিতে থাকা ভেরি লিজের সময়ে গ্রামবাসীদের টাকা দেওয়া হতো। কিন্তু গত চার বছর ধরে গ্রামবাসীরা ওই টাকা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। ওই টাকার দাবি নিয়েই গোলমালের সূত্রপাত।