থমকে: অশোকনগর স্টেশনে আটকে পড়ল ট্রেন। বুধবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
নয় বগি কেন, চাই বারো বগির ট্রেন— এই দাবিতে বুধবার সকাল থেকে উত্তাল হল অশোকনগর স্টেশন। রেল অবরোধ করেন নিত্যযাত্রীরা। বনগাঁ-শিয়ালদহ শাখায় ঘণ্টাখানেক ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়। পরে রেল কর্তৃপক্ষের তরফে আশ্বাস দেওয়া হলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।
সকালের দিকে বনগাঁ-শিয়ালদহ লোকাল ট্রেনের কামরায় ভয়ঙ্কর ভিড় হয়। বসার জায়গা তো দূরের কথা, সুস্থ ভাবে দাঁড়ানোর জায়গাটুকুও মেলে না। দরজার হাতল ধরে ঝুলতে ঝুলতে যান অনেকে। ‘অভিজ্ঞ’ নিত্যযাত্রীদের অনেকেই ব্যাগ-বোঁচকা লোহার শিক দিয়ে ঝুলিয়ে দেন জানলার সঙ্গে।
নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, অশোকনগরে সকাল ৮টা ৩২ মিনিটের বনগাঁ-শিয়ালদহ ডাউন লোকাল বারো কামরারই আসে। কিন্তু মাঝে মধ্যে নয় কামরার ট্রেন দেওয়া হয়। তাতে দুর্ভোগ বাড়ে। গরমে ভিড়ে ঠাসা ট্রেনে উঠতে-নামতে নাকাল হন মানুষ। শিশু, বয়স্ক বা মহিলাদের কষ্টের শেষ থাকে না। প্ল্যাটফর্মে নামতে-উঠতে গিয়ে অনেকে পড়ে গিয়ে চোট পান।
রেল পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার থেকে নয় বগির ট্রেন দেওয়া হচ্ছিল। বুধবারও সাড়ে ৯টা নাগাদ ট্রেনটি অশোকনগর স্টেশনে ঢোকে। দেখায় যায়, এ দিনও নয় কামরার ট্রেনই দেওয়া হয়েছে। ভিড়ের জন্য অধিকাংশ যাত্রী উঠতে পারেননি। ভিড়ের জন্য সোম-মঙ্গলবারও এই ট্রেন অনেকে ধরতে পারেননি। এ দিন সহ্যের সীমা ছাড়ায়। লাইনে নেমে পড়ে ট্রেন আটকে দেন অনেকে।
যাঁরা বনগাঁ থেকে ওই ট্রেনে আসছিলেন, তাঁরাও নেমে পড়ে অবরোধে সামিল হন। অভিযোগ, ডাউন লাইনের ট্রেনে গার্ডকে চাপ দিয়ে কামরার ফ্যানগুলি বন্ধ করে দেন কিছু নিত্যযাত্রী। যাঁরা ভিতরে ছিলেন, তাঁদের তখন সঙ্গীন অবস্থা। তাঁদের অনেকে অবরোধকারীদের সঙ্গে কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন।
ওই ট্রেনের যাত্রী গোপালনগরের বাসিন্দা শিক্ষক দীপেন বসু বলেন, ‘‘অবরোধের সময়ে ট্রেনের ফ্যান বন্ধ করে দেওয়াটা ঠিক হয়নি। গরমে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন।’’
অবরোধকারীরা জানিয়েছেন, জিআরপি, আরপিএফ ও রেল কর্তৃপক্ষ অবরোধের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান। পরে রেলের তরফে নিয়মিত বারো কামরার ট্রেন চালানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। এরপরেই অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। বেলা ১০টা ২০ মিনিটের পরে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয় ডাউন লাইনে।