অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা নিয়ে টানাপড়েন কাকদ্বীপে

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, একজন করে মহিলা স্বাস্থ্যকর্মী থাকবেন জিপিএস লাগানো অ্যাম্বুল্যান্সগুলিতে। নির্দিষ্ট নম্বরে  ফোন করলে যে কোনও প্রত্যন্ত এলাকাতেও পৌঁছে যাবে অ্যাম্বুল্যান্স।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৮ ০২:০৬
Share:

মহকুমাশাসকের অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে দু’টি অ্যাম্বুল্যান্স। ছবি: শান্তশ্রী মজুমদার

বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে চুক্তিতে যে আধুনিক অ্যাম্বুল্যান্স চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার, তা মানতে চাইছেন না বহু জেলার অ্যাম্বুল্যান্স চালক-মালিকেরা। কোথাও কোথাও বিক্ষোভ কর্মসূচিও হয়েছে। কাকদ্বীপেও একই পরিস্থিতি। দু’টি চুক্তিভিত্তিক অ্যাম্বুল্যান্স এসেছিল শুক্রবার। কিন্তু সেগুলি চালাতে দেননি অন্য অ্যাম্বুল্যান্স মালিক-চালকেরা। দু’টি অ্যাম্বুল্যান্স পড়ে আছে মহকুমাশাসকের দফতরের সামনে।

Advertisement

ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্যজেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস রায় বলেন, ‘‘বেসরকারি অ্যাম্বু‌ল্যান্সগুলিকে তুলে দেওয়া হচ্ছে না। তা হলে তাঁদের আশঙ্কার কারণ কী? এ রকম চললে সাধারণ মানুষকে কী ভাবে সরকারি পরিষেবা দেওয়া যাবে?’’

কী বাড়তি পরিষেবা দেবে নতুন অ্যাম্বুল্যান্সগুলি?

Advertisement

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, একজন করে মহিলা স্বাস্থ্যকর্মী থাকবেন জিপিএস লাগানো অ্যাম্বুল্যান্সগুলিতে। নির্দিষ্ট নম্বরে ফোন করলে যে কোনও প্রত্যন্ত এলাকাতেও পৌঁছে যাবে অ্যাম্বুল্যান্স। তবে গড়পড়তা বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্সগুলি যে টাকায় সরকার ভাড়া নেয়, তার চেয়ে প্রতি কিলোমিটারে সরকারকে প্রায় ৮ টাকা বেশি দিতে হবে ওই অ্যাম্বুল্যান্সগুলিকে।

এই নিয়েই বেধেছে গোল।

স্বাস্থ্যভবন থেকে শুক্রবার আধুনিক পরিষেবাযুক্ত ৫টি অ্যাম্বুল্যান্স মহকুমায় পাঠিয়েছিল। পাথরপ্রতিমা, নামখানায় একটি করে এবং কাকদ্বীপ হাসপাতালের জন্য বরাদ্দ হয়েছে তিনটি। নিশ্চয়যান পরিষেবাদানকারী বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স চালক এবং মালিকদের একটি অংশ সেগুলিকে ঢুকতে দেয়নি। বাধ্য হয়ে কাকদ্বীপের জন‌্য বরাদ্দ তিনটির মধ্যে একটিকে সাগরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাকি দু’টি শনিবারও পড়ে ছিল মহকুমাশাসকের দফতরের বাইরে।

বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স মালিকদের দাবি, তাঁরা অনেক কম টাকায় পরিষেবা দিচ্ছেন। অথচ, সরকারের ঘরে তাঁদের মাস ছ’য়েকের বিল বাকি। তা দেওয়ার ব্যাপারে কোনও উচ্চবাচ্য করছেন না কেউ। অথচ, করে বেশি টাকা দিয়ে নতুন অ্যাম্বুল্যান্স আনা হচ্ছে। বেসরকারি একটি অ্যাম্বুল্যান্সের মালিক গৌতম সামন্ত বলেন, ‘‘আমরা দীর্ঘ দিন ধরে কম টাকায় পরিষেবা দিয়ে আসছি। আমাদের টাকাও তাহলে বাড়ানো হোক। গরিব কিছু যুবক এই পরিষেবা দিয়ে সংসার চালাচ্ছে। আমাদের পেটে টান পড়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে কেন?’’

কাকদ্বীপ হাসপাতাল চত্বরে নিশ্চয়যান হিসাবে ৩৮টি অ্যাম্বুল্যান্সের থাকার কথা। কিন্তু এ দিন দেখা গেল, অনেক অ্যাম্বুল্যান্সের ‘নিশ্চয়যান’ লেখা বোর্ডই নেই। কোনওটির গায়ে আবার সরাসরি বেসরকারি নার্সিংহোমের নাম লেখা। এ রকম অনেক অ্যাম্বুল্যান্সই হাসপাতাল চত্বরে পার্কিং করা থাকছে। তা নিয়ে প্রশ্নও তুলেছে স্বাস্থ্যভবনের সাম্প্রতিক রিপোর্ট।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন