বাংলার গ্রামে চিকিত্সা করছেন সাহেব ডাক্তাররা

একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের হয়ে কলকাতা এসেছেন লন্ডনের চিকিৎসক জেরি ব্রাউনি। সঙ্গে এনেছেন ওষুধপত্র। জেরি লন্ডনের নরউইচ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক। স্ত্রী এমিলিও একই হাসপাতালে নার্স। তাঁদের মেয়েও এসেছে সঙ্গে।

Advertisement

নির্মল বসু

শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৭ ০৭:৩০
Share:

পরীক্ষা: রোগী দেখছেন লন্ডনের চিকিৎসক। নিজস্ব চিত্র

চেহারা ভারী হচ্ছে, কী খেলে কমবে? মেয়েটা বড্ড রোগা, আর একটু ভাল চেহারা হয় না? ‘সাহেব’ ডাক্তারকে সামনে পেয়ে এমন অজস্র প্রশ্ন।

Advertisement

বসিরহাট শহরের কেন্দ্রে জাতীয় পাঠাগার ক্লাব। সোমবারের সকাল। রাখি পূর্ণিমার উৎসব ছেড়ে অনেককে তখন দেখা গেল ক্লাবের সামনে ডাক্তার দেখানোর জন্য লম্বা লাইনে দাঁড়াতে। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের হয়ে কলকাতা এসেছেন লন্ডনের চিকিৎসক জেরি ব্রাউনি। সঙ্গে এনেছেন ওষুধপত্র। জেরি লন্ডনের নরউইচ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক। স্ত্রী এমিলিও একই হাসপাতালে নার্স। তাঁদের মেয়েও এসেছে সঙ্গে। কলকাতার একটি চার্চের ডাকে ভারতে এসেছেন তাঁরা। সেখান থেকেই একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ডাকে বসিরহাটে পৌঁছেছেন।

বসিরহাটের এসডিপিও শ্যামল সামন্ত সুন্দরবন এলাকায় গড়ে তুলেছেন ‘লৌহ মানবী’ গ্রন্থাগার। মহকুমার প্রায় প্রতিটি থানা এলাকাতেই গড়ে উঠেছে মহিলা পরিচালিত এমন গ্রন্থাগার। জাতীয় পাঠাগার ক্লাবেও গ্রন্থাগার হয়েছে। এ দিন বসিরহাট শহরের এই গ্রন্থাগারের একটি ঘরে বসেছিলেন চিকিৎসক। ছিলেন এসডিপিও-ও। তিনি বলেন, ‘‘একজন বিদেশি চিকিৎসকের কাছ থেকে চিকিৎসা পরিষেবা পেয়ে খুশি এখানকার মানুষ। গ্রন্থাগারের সঙ্গে যুক্ত মহিলারাও তাঁর পরামর্শ নিয়েছেন।’’

Advertisement

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষে অনিরুদ্ধ সরকার জানান, বসিরহাট ছাড়াও বিনা খরচে এমন স্বাস্থ্য শিবির করা হবে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী ইটিন্ডা, মেরুদন্ডী, টাকি, ভেবিয়া, রাঘবপুর ও হাসনাবাদে।

কেমন দেখলেন সাহেব ডাক্তারকে?

জয়ন্ত কুণ্ডু নামে এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘খুব কম খাচ্ছি। অথচ দেহের ওজন বেড়েই চলেছে। তাই সাহেব ডাক্তারকে দেখাতে আসা। উনি সব মন দিয়ে শুনলেন। ওষুধ দিলেন।’’ কল্পনা চৌধুরী নামে আর এক রোগীর মা বলেন, ‘‘মেয়েটার চেহারা কিছুতেই ভাল হচ্ছে না। সাহেব গুরুত্ব দিয়ে দেখেছেন। ওষুধও দিয়েছেন। প্রয়োজনে ফোনে যোগাযোগ করার জন্য বলেছেন।’’

জেরি যে শুধু রোগী দেখছিলেন তা নয়। ব্লাড সুগার পরীক্ষা ও ইসিজিও করছিলেন। জেরি দোভাসির মাধ্যমে রোগী দেখার পরে তা ল্যাপটপে লিখে রাখছিলেন। স্ত্রী এমিলি মহিলাদের ওষুধ দিচ্ছিলেন। মেয়েও সাহায্য করছিলেন তাঁদের। প্রায় দু’শো রোগী দেখেন জেরি। তাঁর কথায়, ‘‘খুব সুন্দর শহর। এখানকার মানুষ খুব ভাল। এঁদের সেবা করতে পারলে নিজেদের ধন্য মনে করব।’’

চিকিৎসক বসিরহাটে এক সপ্তাহ থাকবেন। তাঁরা চলে যাওয়ার পরে, কোনও প্রয়োজনে রোগীরা কী ভাবে যোগাযোগ করবেন? অনিরুদ্ধবাবু জানান, কোনও সমস্যা হলে বা প্রয়োজনে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারবেন রোগী ও তাঁদের পরিজনেরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement