এসেছে লাইফ জ্যাকেট

তবু ঘাটের নিরাপত্তা নিয়ে সংশয়

সার সার মানুষের মাথাকে ডুবে যেতে দেখেছিলেন অনিল রায়, পূজা ঘোষ, সুজয় মুখোপাধ্যায়রা। তেলেনিপাড়া ঘাটে যখন দুর্ঘটনা ঘটে তখন পাশেই আতপুর ঘাটে ফেরি পার হওয়া যাত্রীরা জলের তোড়ে ভেসে আসা মানুষজনকে বাঁচানোর মরিয়া চেষ্টা করতে দেখেছেন।

Advertisement

বিতান ভট্টাচার্য

ব্যারাকপুর শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৭ ০২:১১
Share:

ফেরি: আতপুর ঘাট। নিজস্ব চিত্র

সার সার মানুষের মাথাকে ডুবে যেতে দেখেছিলেন অনিল রায়, পূজা ঘোষ, সুজয় মুখোপাধ্যায়রা। তেলেনিপাড়া ঘাটে যখন দুর্ঘটনা ঘটে তখন পাশেই আতপুর ঘাটে ফেরি পার হওয়া যাত্রীরা জলের তোড়ে ভেসে আসা মানুষজনকে বাঁচানোর মরিয়া চেষ্টা করতে দেখেছেন। আতপুর ঘাটের উল্টো দিকেই রয়েছে চন্দননগরের গোন্দলপাড়া ঘাট। বানের তোড়ে সাঁকো ভেঙে পড়ে যাওয়ার পরে বহু লোক ভাসতে ভাসতে গোন্দলপাড়া ঘাটে পৌঁছেছিলেন। শ্যামনগর, আতপুর ও গোন্দলপাড়া ঘাটের যাত্রীদের কাছে সেই স্মৃতি এখনও টাটকা।

Advertisement

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার পরে আতপুর ঘাটে বাঁশের সাঁকো শক্তপোক্ত করা হয়েছে। চারটি ফেরি নৌকার ফুটোফাটা মেরামত হয়েছে। লাইফ জ্যাকেট আর এয়ার রিং রাখাও শুরু হয়েছে।

কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, এ সবের ব্যবহার নিয়েও।

Advertisement

প্রতি দিন এই ঘাট দিয়ে হাজার দেড়েক যাত্রী পারাপার করেন। যাত্রীদের প্রশ্ন, চারটি নৌকায় খানচারেক লাইফ জ্যাকেট এবং এয়ার রিং কি যথেষ্ট? যথেচ্ছ বালি তোলার ফলে নাব্যতার তারতম্য ঘটেছে গঙ্গায়। বাণের ক্ষিপ্রতা কোথাও কোথাও এতটাই বেশি যে, প্রায় সমুদ্রের ঢেউ মনে হয়। ওই জলোচ্ছ্বাসের কাছে বাঁশের সাঁকো সব সময়েই দুর্বল। সমস্যা আরও বাড়ে বর্ষায়। এমনিতেই নদীতে ঢেউ থাকে। হাওয়া আর বৃষ্টিতে নৌকা থেকে আঁকাবাঁকা সাঁকো পেরিয়ে ঘাটে পৌঁছতে না পৌঁছতেই ভিজে যান যাত্রীরা। বাঁশের সাঁকো পিচ্ছিল হওয়ায় দুর্ঘটনা ঘটেছে, এমন উদাহরণও আছে।

পুরনো এই ফেরি ঘাটে ছাউনি, শৌচাগার— কিছুই নেই। যাত্রীদের পক্ষ থেকেই দাবি করা হয়েছে, যাত্রী ছাউনি, পরিচ্ছন্ন শৌচাগার ও পাকা জেটির ব্যবস্থা করা। গোন্দলপাড়ার বাসিন্দা সমীরকুমার ঘোষ পেশায় ভাটপাড়ার একটি কারখানার কর্মী। নিয়মিত এই ঘাট দিয়ে পারাপার করেন। তিনি বলেন, ‘‘বছরের পর বছর একটা ফেরিঘাট বিনা সংস্কারে চলছে। তেলেনিপাড়ার যেটুকু সচেতনতা বাড়িয়েছে, তার থেকে অনেক বেশি উন্নত পরিষেবা ৫ টাকার টিকিট কেটে কলকাতার ঘাটগুলিতে পারাপার করার সময়ে পাওয়া যায়। তবে আমরা কেন সে সব পাব না?’’

ভাটপাড়া পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সোমনাথ তালুকদারের কথায়, ‘‘আমরা চেষ্টা করছি ঘাট সংস্কার ও ভাল পরিষেবা দেওয়ার। কিন্তু এই ঘাট আমাদের আওতায় পড়ে না। তাই এখান থেকে পুরসভার নিজস্ব কোনও আয় হয় না। তবু যাত্রীদের স্বার্থে এগুলি বানাতেই হবে।’’

ঘাটের দায়িত্ব হুগলি জেলা পরিষদের। সভাধিপতি মেহবুব রহমান জানিয়েছেন, নিরাপত্তা ইতিমধ্যেই বাড়ানো হয়েছে ওই ঘাটে। বাকি বিষয়গুলিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন