বিপজ্জনক-যাত্রা: রেলগেট পেরিয়ে এ ভাবেই চলে যাতায়াত। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়
স্টেশন রোডের যানজট এড়াতে এ বার একটি উড়ালপুল পেতে চলেছেন খড়দহবাসী। খড়দহ পুরসভা সূত্রের খবর, বিটি রোডের কাছে নতুন বাজার থেকে উড়ালপুলটি শুরু হয়ে রহড়ার অরুণাচল বা তার একটু আগে রামকৃষ্ণ মিশন অর্থাৎ পূর্ণানন্দ সরণির মুখ পর্যন্ত যাবে সেটি।
রেললাইন দিয়ে ট্রেন যাওয়ার সময়ে লাইন পারাপারের অপেক্ষায় থাকা মানুষ ও গাড়ির দীর্ঘ লাইন পড়ে যায় খড়দহ রেলগেটে। এর জেরে ভোগান্তি হয় যাত্রীদের। নিত্যযাত্রী এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে এই নিয়ে ক্ষোভও আছে। বাসিন্দা তৃষা রায় জানালেন, এক বার রেলগেট পড়লে অনেকক্ষণ আটকে থাকতে হয়। এর জন্যে অফিসযাত্রী ও পড়ুয়াদের হামেশাই দেরি হয়।
সেই সমস্যা মেটাতে উড়ালপুলের পরিকল্পনা, জানাচ্ছেন পুর কর্তৃপক্ষ। প্রতি দিন রেললাইন পেরিয়ে রহড়া-খড়দহ দিয়ে যাতায়াত করে কয়েক হাজার মিনিবাস, বাস, হাল্কা মালবাহী, কৃষিপণ্যবাহী লরি এবং ব্যক্তিগত গাড়ি। সম্প্রতি এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে এই তথ্য। পুরসভা সূত্রে খবর, এলাকাবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবি মেনে স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের উদ্যোগে উড়ালপুলটি বাস্তবায়িত হতে চলেছে।
এক পুর আধিকারিক জানান, স্টেশন রোডের রাস্তা কোথাও ১৮ ফুট, কোথাও ২২ ফুট। রাস্তার সবচেয়ে চওড়া অংশ ৩৬ ফুট। সম্প্রতি রহড়ায় কিছু প্রোমোটিংয়ের কাজ হয়েছে। জায়গা ছেড়ে নতুন নির্মাণ হওয়ায় সেখানে রাস্তা চওড়া হয়েছে। স্টেশন রোডের সূর্য সেন-বিটি রোড অংশ যথেষ্ট সঙ্কীর্ণ। সেই অংশের বেশির ভাগই পড়েছে পুরসভার ১১ এবং ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে। এই অংশেই ভাঙাভাঙির কাজ বেশি হবে।
উড়ালপুলটির দায়িত্বে রাজ্য পূর্ত দফতর। পিডব্লিউডি প্রথম দফার সমীক্ষা শেষ করেছে গত নভেম্বরে। দফতরের এক আধিকারিক জানান, উড়ালপুলের দু’প্রান্ত রহড়া এবং বিটি রোডের দিকে চওড়া হবে ১৬ মিটার। উড়ালপুলের মূল রাস্তাটি ১২ মিটার চওড়া। গাড়ি যাতায়াতের জন্যে রাস্তা থাকছে সাড়ে সাত মিটার। কোনও ফুটপাথ থাকবে না। উড়ালপুলের নীচে রাস্তার দু’ধারে ছোট গাড়ি যাতায়াতের জন্যে
তিন মিটার রাস্তা থাকবে। সব মিলিয়ে এই প্রকল্পের জন্যে আনুমানিক খরচ ধার্য হয়েছে ২০২ কোটি ২০ লক্ষ টাকা।
পুরসভার উপপ্রধান তৃণমূলের সুকণ্ঠ বণিক বলেন, ‘‘এই কাজে কিছু বাড়ি এবং দোকান ভাঙা পড়বে। সেই কাজের ক্ষেত্রে যাতে সমস্যা না হয় তার জন্যে একটি কমিটি গঠন করেছে পুরসভা। এই জায়গা দিয়ে গিয়েছে অ্যান্টি ম্যালেরিয়া খাল। সব কিছু নিয়ে এগোতে একটু সময় লাগবে। প্রকল্প যে এত দিনে রূপ পেতে চলেছে সেটাই খড়দহবাসীর কাছে বড় খবর।’’