ধৃত: জয়নগর থানায়। নিজস্ব চিত্র
এক চিকিৎসকের কাছ থেকে ভয় দেখিয়ে টাকা তোলার অভিযোগে দু’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। দেবব্রত দাস নামে ওই চিকিৎসকের বাড়ি জয়নগর থানার দক্ষিণ বারাসতে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম আমির হোসেন সর্দার ও গৌরাঙ্গ হালদার।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আয়কর দফতরের নাম করে দিন কয়েক আগে প্রথম ফোন আসে দেবব্রতবাবুর কাছে। বলা হয়, তাঁর আয়কর ফাইলে গোলমাল আছে। তা ঠিক করতে টাকা দিতে হবে। কিন্তু দেবব্রত রাজি না হওয়ায় তারপর থেকে রীতিমতো হুমকি দিয়ে ফোন করতে থাকে দুষ্কৃতীরা।
পুলিশ জানিয়েছে, এ বার সরাসরি সত্তর লক্ষ টাকা দাবি করা হয় তাঁর কাছে। না দিলে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়। দেবব্রতবাবু জানান, ‘‘মাস কয়েক আগে জয়নগর বিধায়কের গাড়িতে যে বোমা-গুলি ছোড়ার ঘটনা ঘটে তার উল্লেখ করে ওরা বলে আমাকে ওই ভাবেই মারবে।’’
এরপরই একটু ভয় পেয়ে যান তিনি। দুষ্কৃতীদের সঙ্গে রফা করার চেষ্টা করেন। শেষ পর্যন্ত ২ লক্ষ টাকা নিতে রাজি হয় তারা। দেবব্রত বলেন, ‘‘সামনেই আমার মেয়ের বিয়ে। তাই কোনও ঝামেলা হোক চাইনি। সে কারণেই ওদের টাকা দিয়ে ব্যাপারটা মিটিয়ে নিতে চেয়েছিলাম।’’
চিকিৎসক জানান, জয়নগরের গোরেরহাটের কাছে একটি জায়গায় গত শুক্রবার তাঁকে টাকা নিয়ে দাঁড়াতে বলে দুস্কৃতীরা। সেই মত তিনি সেখানে গিয়ে দাঁড়ান। একটি বাইকে করে হেলমেট পরে দু’জন এসে তাঁর কাছ থেকে টাকা নিয়ে চলে যায়।
এরপরই ঘটনা বাড়ির লোকজনকে জানান দেবব্রত। তাঁর ভাই শুভব্রত দাস সব ঘটনা শুনে তাঁকে নিয়ে থানায় যান। শনিবার সকালে জয়নগর থানায় গোটা ঘটনা জানিয়ে লিখিত অভিযোগ করা হয়। তদন্তে নামে পুলিশ।
যে নম্বর থেকে দেবব্রতবাবুকে ফোন করা হয়েছিল, তার সূত্র ধরেই ১২ ঘন্টার মধ্যে দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কেন এরা হুমকি দিয়ে টাকা তুলছিল, এদের সঙ্গে অন্য কোনও দলের যোগাযোগ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে তারা। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত গৌরাঙ্গের বাড়ি বারুইপুরে। আমির জয়নগরেরই বাসিন্দা।
আমির এলাকায় যুব কংগ্রেস কর্মী হিসেবে পরিচিত। কংগ্রেসের জেলার যুব সভাপতি তারিক আনোয়ার শেখ জানান, আমির সম্প্রতি কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিল। এই ঘটনার পর তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।