শেষ মুহূর্তে ছাদনাতলায় পুলিশ, বন্ধ হল বিয়ে

সমস্ত আয়োজন সারা। ছাদনাতলা তৈরি। রান্নাও শুরু হয়ে গিয়েছে। আত্মীয়-স্বজনেরাও সেজেগুজে আসতে শুরু করেছেন। এ বার অপেক্ষা বরের। কিন্তু বরের পৌঁছনোর আগে পুলিশ এসে হাজির হল বিয়েবাড়িতে। সঙ্গে চাইল্ড লাইনের সদস্যেরা। সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া ছাত্রীটির বিয়ে বন্ধ করার নির্দেশ দিলেন পুলিশ কর্তারা। বিয়েবাড়িতে আসা লোকজন সব হতভম্ব।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হাবরা ও রানাঘাট শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৫ ০১:১৪
Share:

সমস্ত আয়োজন সারা। ছাদনাতলা তৈরি। রান্নাও শুরু হয়ে গিয়েছে। আত্মীয়-স্বজনেরাও সেজেগুজে আসতে শুরু করেছেন। এ বার অপেক্ষা বরের। কিন্তু বরের পৌঁছনোর আগে পুলিশ এসে হাজির হল বিয়েবাড়িতে। সঙ্গে চাইল্ড লাইনের সদস্যেরা। সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া ছাত্রীটির বিয়ে বন্ধ করার নির্দেশ দিলেন পুলিশ কর্তারা। বিয়েবাড়িতে আসা লোকজন সব হতভম্ব।

Advertisement

বৃহস্পতিবার দুপুরে হাবরার গোয়ালবাটি এলাকার ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, এক সূত্র মাধ্যমে হাবরা থানার আইসি মৈনাক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে নাবালিকার বিয়ের খবর পৌঁছয়। মেয়েটি পিতৃহীন। মা সেলাইয়ের কাজ করেন। স্থানীয় শ্রীনগর এলাকার এক যুবকের সঙ্গে কিশোরীর বিয়ের ঠিক হয়েছিল। ওই যুবকও সেলাইয়ের কাজ করেন। মেয়ের বাড়ির আর্থিক অবস্থা খারাপ। মা চেয়েছিলেন, কোনও মতে যেন মেয়ের বিয়েটা তাড়াতাড়ি সেরে ফেলতে পারেন।

কিন্তু পরে পনেরো বছরের ওই নাবালিকার মাকে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে বিয়ে আটকানো গিয়েছে। এক পুলিশ কর্তার কথায়, ‘‘এই বয়সে বিয়ে হলে মেয়ের কী কী শারীরিক সমস্যা হতে পারে, তা মেয়েটির মাকে বোঝানো হয়। স্থানীয় এক পঞ্চায়েত সদস্যকেও ডেকে নিয়ে আসা হয়। তিনি মেয়ের মাকে বোঝান। এরপরেই বিয়ে বন্ধ হয়।’’ পুলিশের কাছে মেয়ের পরিবার মুচলেকা দিয়ে জানিয়েছে, পরিণত বয়সের আগে মেয়ের বিয়ে দেবেন না তাঁরা। এ কারণে কাউকে আর গ্রেফতার করা হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ। নাবালিকাকে আপাতত চাইল্ড লাইনের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। মেয়েটির পড়াশোনায় সাহায্য করা হবে বলে জানিয়েছে তারা।

Advertisement

অন্য দিকে, বৃহস্পতিবারই নদিয়ার তাহেরপুর থানার বারাসত পঞ্চায়েতের ফুলিয়া মোড়ে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল বছর ষোলোর এক কিশোরীর। ফুলিয়ায় তার দাদুর বাড়ি। নিজের বাড়ি বর্ধমানের কাটোয়ায়। বিয়ের আয়োজন চলছিল জোরকদমে। ধানতলার বহিরগাছির এক যুবকের সঙ্গে তার বিয়ে ঠিক হয়। বিয়ের ঘণ্টা খানেক আগে বিষয়টি এলাকার লোকজনের নজরে আসে। তাঁরাই এলাকার একটি মানবাধিকার সংগঠনের সদস্যদের বিষয়টি জানান। তাঁদের মারফত পুলিশ-প্রশাসন ঘটনার কথা জানতে পেরে তৎপর হয়। বিয়ে বাড়িতে হাজির হয় তারা। ছেলে-মেয়ে দু’পক্ষের বাড়ির লোকজনকে বুঝিয়ে-সুজিয়ে আটকে দেওয়া হয় ওই বিয়ে। রানাঘাটের মহকুমাশাসক রাজর্ষি মিত্র বলেন, ‘‘এর আগেও ওই এলাকায় নাবালিকার বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। প্রয়োজনে শিবির করে এলাকার লোকজন নাবালিকা বিয়ের কুপ্রভাব সম্পর্কে সচেতন করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন