তিন প্রতারককে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে বড়সড় প্রতারণা চক্রের সন্ধান পেল পুলিশ। নিজেদের ‘সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ভিজিল্যান্স কমিশন’-এর অফিসার বলে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে নানা ভাবে মানুষকে হুমকি দিয়ে টাকা আদায় করত দীপক বসন, জয়দেব ঘোষ এবং অভিষেক দাসেরা। নানা ধরনের অভিযোগ নিয়ে সেখানে সাধারণ মানুষকে আসতে বলা হত। সেই সূত্র ধরেই তোলাবাজির ব্যবসা ফেঁদেছিল তারা। উত্তর ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই প্রতারণা চক্রটির হদিস প্রথম বার মিলেছিল হাবরা থেকে। কিন্তু তখন কাউকে ধরা যায়নি। পরে বসিরহাটের ঘটনায় ধরা পড়েছে তিন জন। আরও বিশদে তদন্ত চলছে।’’ পুলিশ জানায়, প্রতারণা সংস্থাটির মধ্যমগ্রামে একটি অফিসের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। সেখানে ধৃতদের বেশ কিছু পরিচয়পত্র, নথি, মোবাইল মিলেছে। ঘরটি সিল করে দেওয়া হয়েছে। কলকাতায় তাদের আরও একটি দফতরেরও সন্ধান পেয়েছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত শুক্রবার দুপুরে বসিরহাটের ভ্যাবলা স্টেশন-সংলগ্ন এলাকায় লগ্নি সংস্থার এজেন্ট রহমতুল্লা আলমামুনের বাড়িতে যায় প্রতারকেরা। নিজেদের সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ভিজিল্যান্স কমিশনের অফিসার বলে নিজেদের পরিচয় ৫ লক্ষ টাকা দাবি করে। পুলিশের দ্বারস্থ হন গৃহকর্তা। পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই জনতার হাতে ধরা পড়ে মারধর খায় তিন প্রতারক। পুলিশের দাবি, দীপক বসন থানায় এসে নিজেকে আইপিএস অফিসার বলে পরিচয় দিয়ে এমন হম্বিতম্বি শুরু করে, প্রথমটায় হকচকিয়ে গিয়েছিলেন পুলিশ কর্মীরাও। কিন্তু তার ভুল ইংরেজি শুনে সাহস করে এক পুলিশ অফিসার চড় কষাতে উদ্যত হন। তখনই বসন নিজের আসল পরিচয় স্বীকার করে। বলে, মাত্র অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে সে।
মামলার তদন্তকারী অফিসার সৌমেন পাল জানান, দু’শোরও বেশি লোক নিয়ে একটা বড় চক্র রাজ্য জুড়ে প্রতারণার কাজ করছে। যাদের কাজ, মূলত মানুষের নানা দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে হুমকি দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতানো। বাড়ি-জমির দখল, ভাড়াটিয়া উচ্ছেদ-সহ নানা কাজে তাদের ডাক পড়ে। এই চক্রে বসিরহাটের কয়েক জন জড়িত আছে বলেও জানতে পেরেছে পুলিশ। তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।