বাজেয়াপ্ত ডিজে বক্স। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।
শীত পড়তেই পিকনিকে তারস্বরে ডিজে বক্স বাজানোর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল অনেক। প্রতিবাদে হয়েছিল নাগরিক কনভেনশন। এই সংক্রান্ত খবর প্রকাশিত হয়েছিল আনন্দবাজারে। অবশেষে নড়েচড়ে বসল প্রশাসন। রবিবার উত্তর ২৪ পরগনা জেলা জুড়ে চলল ডিজে বক্সের বিরুদ্ধে অভিযান।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন টাকি, বসিরহাট, বাদুড়িয়া, হাবরা, অশোকনগর, দত্তপুকুর, বনগাঁ, গাইঘাটা-সহ একাধিক জায়গায় এই অভিযান হয়। তার স্বরে ডিজে বক্স বাজানোর অভিযোগে মোট ২৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে অবশ্য তাদের জামিনে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আটক করা হয়েছে কয়েকটি ডিজে বক্স এবং গাড়ি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর কয়েক ধরেই জোরে গাড়িতে ডিজে বক্স বাজিয়ে পিকনিক করতে যাওয়ার রেওয়াজ শুরু হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনায়। সেই শব্দের দাপটে প্রবীণ বাসিন্দাদের অসুস্থ হওয়া এবং বাড়ির কাঁচ ভাঙার ঘটনাও ঘটেছে। ম্যাটাডরে ডিজে বক্স লাগিয়ে জোরে গান বাজানোর সঙ্গেই অশ্লীল নাচ এবং প্রকাশ্য মদ্যপান চলে বলে অভিযোগ। সম্প্রতি ডিজের দাপটে অতিষ্ঠ হয়ে পর্যটন কেন্দ্র টাকির বাসিন্দাদের একাংশ প্রতিবাদ শুরু করেন। টাকি পৌর নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে শব্দ দূষণের প্রতিবাদে কনভেনশন হয়।
রবিবার সকাল থেকেই বনগাঁ, বসিরহাট, হাসনাবাদ-সহ জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় পিকনিকের গাড়িতে ডিজে বক্স থাকলেই সেগুলি আটক করতে শুরু করে পুলিশ। বনগাঁ থানা এলাকায় আইসি সতীনাথ চট্টোরাজের নেতৃত্বে ধরপাকড় হয়। পিকনিকের গাড়িগুলি থানায় এনে ডিজে বক্স খুলে বাজেয়াপ্ত করা হয়। বসিরহাট মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন প্রায় ২৫টি পিকনিক দলকে ডিজে বক্স বাজানোর জন্য কেস দেওয়া হয়েছে। টাকি পৌর নাগরিক কমিটির সম্পাদক প্রণব সরকার বলেন, ‘‘প্রশাসনের এই উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই। কিন্তু এর পরেও যদি পিকনিকে আসা দলগুলি ডিজে বাজানো বন্ধ না করে থাকলে আমরা আবার পথে নামব।’’
জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাস্তায় বেআইনি ভাবে ডিজে বক্স বাজানোর বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর জন্য প্রতিটি থানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। টাকি ও পারমাদনের মতো জেলার গুরুত্বপূর্ণ পিকনিক স্পটগুলিতে যাওয়ার রাস্তায় বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে।’’ শীতের মরসুমে এই অভিযান চলবে বলে জানান তিনি।