এই গাড়িতেই ভাঙচুর চলে। —নিজস্ব চিত্র।
জুয়ার ঠেকে অভিযান চালাতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের হাতে মার খেতে হল পুলিশকে। গাড়ি ভাঙচুর করে পুলিশকে আটকে রেখে ধৃত সঙ্গীদের ছাড়িয়ে নিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে দেগঙ্গা থানার সোহাই শ্বেতপুর পঞ্চায়েতের মির্জাপুর গ্রামে। খবর পেয়ে দেগঙ্গা থানার ওসি পলাশ চট্টোপাধ্যায় বিশাল বাহিনী নিয়ে গিয়ে সহকর্মীদের উদ্ধার করেন। সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে রামপ্রসাদ মণ্ডল নামে মির্জাপুর গ্রামের এক বাসিন্দাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈশাখী মেলা উপলক্ষে মির্জাপুর গ্রামে রাতে জলসা হচ্ছিল। সেখানে মদ এবং জুয়ার আসর বসেছে বলে রাত ১টা নাগাদ খবর পেয়ে দেগঙ্গা থানার এক এসআই-সহ কয়েক জন পুলিশ কর্মী ওই মেলায় যান। সেখানে জুয়ার আসর থেকে দু’জনকে পুলিশ আটক করে গাড়িতে তুলতে গেলে দুষ্কৃতীরা তাঁদের ঘিরে ফেলে। শুরু হয় বচসা থেকে হাতাহাতি, ধাক্কাধাক্কি। ওই সময়ে দুষ্কৃতীরা পুলিশ তোলা আদায় করতে এসেছে বলে ছড়িয়ে দিলে মেলার মানুষ পুলিশকর্মীদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে আরম্ভ করে। সেই সুযোগে ধৃত সঙ্গীদের ছিনিয়ে নেয় দুষ্কৃতীরা। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে পুলিশকর্মীরা গাড়িতে উঠে এলাকার ছাড়ার চেষ্টা করলে জনতা ইট-পাটকেল ছুড়তে শুরু করে। ইটের আঘাতে পুলিশ গাড়ির কাচ ভাঙে।
এ দিকে হুড়োহুড়িতে জলসা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হওয়ায় জনতার ক্ষোভ গিয়ে পড়ে পুলিশের উপরে। তারা পুলিশ গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। খবর পেয়ে দেগঙ্গা থানার ওসি বাহিনী নিয়ে গিয়ে উত্তেজিত জনতাকে বুঝিয়ে কোন রকমে শান্ত করেন। পুলিশের কাজে বাধাদান, সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর এবং পুলিশকর্মীদের হেনস্থার অভিযোগে একজনকে গ্রেফতার করা হলেও ধরা পড়া দুই দুষ্কৃতী পালায়। পুলিশ একটি মামলা রুজু করে পলাতক দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে।
তবে এক পুলিশকর্তার দাবি, কয়েক হাজার মানুষের উপস্থিতিতে কোনও জলসার আসরে ৫-৬ জন পুলিশকর্মীর দুষ্কৃতী ধরতে যাওয়াটাই উচিত হয়নি। পরিকল্পনার অভাবে আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারত।
মেলা উদ্যোক্তাদের আবার বক্তব্য, এ ভাবে গভীর রাতে পুলিশকর্মীদের মেলায় আসা উচিত হয়নি। মদ-জুয়া বন্ধের জন্য সত্যই যদি ইচ্ছা থাকত, তা হলে গভীর রাতের বদলে সন্ধ্যায় উদ্যোক্তাদের নিয়ে অবৈধ কাজ বন্ধ করা যেতে পারত। এ সবের মধ্যে পড়ে দুষ্কৃতীদের মিথ্যা প্রচারে যে ভাবে পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল, তাতে বড় রকম দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। সময় মতো ওসি এসে সামাল দেওয়ায় তেমনটা ঘটেনি। কিন্তু গোলমালের জেরে জলসা পণ্ড হওয়ায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় বহু মানুষ।