ডেঙ্গি রুখতে নয়া পদক্ষেপ, কলের চাতাল পাকা করছে পঞ্চায়েত

সম্প্রতি বনগাঁ ব্লকের ছয়ঘরিয়া পঞ্চায়েত এই পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণের একটি ব্যবস্থা করল। এলাকার প্রতিটি কলের চাতাল পাকা করে দিচ্ছে তারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বনগাঁ শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৯ ০৭:৩৫
Share:

বাঁধিয়ে দেওয়া হয়েছে কলপার। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

প্রতিটি বাড়িতেই এতদিন কলের পাশে কাঁচা গর্ত থাকত। কলের নীচের চাতালও কাঁচা। জল ব্যবহার করার পরে অব্যবহৃত অতিরিক্ত জল গিয়ে পাশের ওই গর্তেই জমত। কিছুটা জল জমে থাকত কলের নীচের কাঁচা চাতালেই। এই জমা জলে মশার বাড়বাড়ন্ত হত। বাড়বাড়ন্ত হত মশাবাহিত রোগেরও।

Advertisement

সম্প্রতি বনগাঁ ব্লকের ছয়ঘরিয়া পঞ্চায়েত এই পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণের একটি ব্যবস্থা করল। এলাকার প্রতিটি কলের চাতাল পাকা করে দিচ্ছে তারা। কলের পাশেই তৈরি করে দিচ্ছে পাকা গর্তও। এই গর্তের উপর দিয়ে দেওয়া হচ্ছে পাকা ঢাকনাও। এলাকাবাসী জানান, এর ফলে মশার উপদ্রব অনেকটাই কমেছে। ছয়ঘরিয়ার পঞ্চায়েত প্রধান প্রসেনজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘কলের চাতাল পাকা করার এই পদক্ষেপ জেলায় মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।’’

কেন এমন পদক্ষেপ?

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর পঞ্চায়েত এলাকার খেদাপাড়া গ্রামে ডেঙ্গির প্রকোপ হয়েছিল। অনেককেই হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল। কী কারণে ডেঙ্গি ছড়িয়েছিল তা খুঁজে বের করতে ব্লক প্রশাসন ও পঞ্চায়েতের তরফে ওই এলাকায় সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। প্রধান বলেন, ‘‘গত বছর খেদাপাড়া এলাকাতেই ১২ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ডেঙ্গির এই প্রকোপের কারণ ছিল প্রতিটি বাড়িতে থাকা ওই কলের চারপাশে জমে থাকা জল। সেই জলেই জন্মায় ডেঙ্গির মশা। এর পরই পঞ্চায়েতের তরফে বাড়ির কলগুলির চাতাল পাকা করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’’ তিনি আরও জানান, লোকসভা ভোটের পর বাকি থাকা কাজ হবে।

পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই ১১২টি বাড়িতে চাতাল এবং গর্ত পাকা করে দেওয়া হয়েছে। একশো দিনের কাজ প্রকল্পে ওই নির্মাণের কাজ করা হয়েছে। এ জন্য কল-প্রতি খরচ হচ্ছে প্রায় ৮ হাজার টাকা। তবে যেসব পরিবারের আর্থিক সামর্থ্য রয়েছে, পঞ্চায়েতের তরফে তাঁদের অনুরোধ করা হয়েছে, তাঁরা যেন ওই কাজ নিজেদের খরচেই করে নেন। এই প্রস্তাবে সাড়াও মিলেছে।

শুধু তাই নয়, জমা জলের ক্ষতিকর দিকটি সম্বন্ধে এতদিন উদাসীনই ছিলেন এলাকাবাসী। পঞ্চায়েতের তরফে তাঁদের ওই বিষয়ে তাই সচেতন করা হচ্ছে। ফলও মিলছে। খেদাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা জরিনা মণ্ডল, অজিত মণ্ডলদের বাড়ির কলের চাতাল পাকা করে দেওয়া হয়েছে। অজিত বলেন, ‘‘আগে জল বের করবার ব্যবস্থা ছিল না। মশার প্রকোপ হত। এখন মশার উপদ্রব অনেকটাই কমানো গিয়েছে।’’

বনগাঁর বিডিও সঞ্জয়কুমার গুছাইত বলেন, ‘‘গ্রামবাসীর মধ্যে ডেঙ্গি প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়াতে নিয়মিত কর্মসূচি চলছে।’’ পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, ছয়ঘরিয়া পঞ্চায়েতের ১৮টি সংসদ এলাকায় সপ্তাহে একদিন করে সাফাই অভিযান হচ্ছে। জঙ্গল কাটা, জমা জল পরিষ্কার এবং মশা মারার তেল, ব্লিচিং ও ধোঁয়া নিয়মিত দেওয়া হচ্ছে। মার্চ মাসের ১ তারিখ থেকেই এই কর্মসূচি নিয়মিত পালন করা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন