গাছ-দখল: পেরেক দিয়ে সাঁটা পোস্টার। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
কোনও গাছে ঘুঁটে দেওয়া। কোথাও বা পেরেক, পিন বা তার দিয়ে পোস্টার সাঁটা। এখানেই শেষ নয়। রাস্তার পাশে থাকা চায়ের দোকান বা হোটেলের গরম জল ঢালা হচ্ছে গাছের গোড়ায়। যশোর রোডের ধারে থাকা ওই ওই সব গাছ বা গাছের ডাল শুকিয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। চোখের সামনে দীর্ঘদিন ধরে বৃক্ষ নিধন চলছে।
এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, যশোর রোডের দু’ধারে থাকা ওই সব গাছগুলি এখানকার ঐতিহ্য। অথচ নীরবে ‘হত্যা’ চললেও প্রশাসনের কোনও নজরদারি নেই। অথচ গাছ ‘হত্যা’ বন্ধ করতে চলছে গান, পথ নাটক, মিছিল, সভাও।
এক পরিবেশ কর্মী জানালেন, যশোর রোডের ধারে থাকা প্রাচীন গাছগুলি বিশেষ করে শিরিষ ‘রেন ট্রি’ হিসেবে কাজ করে। গাছের শিকড় মাটির বহু গভীরে থাকে। ফলে ভূমিক্ষয়ও রোধ করে। কয়েক বছর আগে বনগাঁ-চাকদা সড়ক সম্প্রসারণের সময় বেশকিছু প্রচীন গাছা কাটা পড়েছিল। ওই এলাকার প্রবীণ মানুষেরা জানালেন, ওই গাছ কাটার ফলে পরিবেশের উপর প্রভাব পড়েছে।
বারাসত থেকে পেট্রাপোল সীমান্ত পর্যন্ত প্রায় ৬০ কিলোমিটার যশোর রোডে গেলেই চোখে পড়বে অসংখ্য গাছে পেরেক পোঁতা হয়েছে। উদ্ভিদ বিজ্ঞানি দুলালচন্দ্র পাল বলেন, ‘‘পেরেক পোঁতা হলে গাছে ক্ষত সৃষ্টি হয়। ধীরে ধীরে পচে যায়। গাছের গোড়ায় গরম জল বা গরম চা পাতা ফেলা হলে মূলরোম ভীষণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। গাছ ধীরে ধীরে মারা যেতে পারে।’’ স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এ সবের ফলে ডাল শুকিয়ে এলে গাছ চোরেরা তা কেটে নিয়ে যাচ্ছে। কী বলছে প্রশাসন? জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের বনগাঁ মহকুমার সহকারী বাস্তুকার জয়ন্ত চক্রবর্তী বলেন, ‘‘গাছে বিজ্ঞাপণ দেওয়া বেআইনি। আমাদের নজরে এলে আমরা তা খুলে ফেলার ব্যবস্থা করি।’’