অবরোধের কর্মসূচি সংবাদমাধ্যমে আগাম আসার পরেই রেল প্রশাসন সচেতন হয়েছিল। মঙ্গলবার সাত সকালে অবরোধ শুরু হতেই পুলিশের তাড়ায় তা বদলে গেল বিক্ষোভে।
শ্যামনগর স্টেশনের সমস্যা নিয়ে প্যাসেঞ্জার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে এ দিন রেল অবরোধের ডাক দেওয়া হয়েছিল। সাড়ে ৭টা নাগাদ শ্যামনগর স্টেশনে অবরোধ শুরু হয়। কিন্তু ভোর থেকে রেল পুলিশ মোতায়েন ছিল স্টেশনে। অবরোধ শুরু হতেই রেল পুলিশ তেড়ে যায় অবরোধকারীদের দিকে। আপ ও ডাউন লাইনে তখন সবে দু’টি ট্রেন ঢুকেছে। রেল ট্র্যাকের উপরেই অবরোধকারীদের সঙ্গে খানিক ধস্তাধস্তি হয়। এরপরেই সাত অবরোধকারীকে পুলিশ গ্রেফতার করে। অবরোধ তুলে দেওয়া হয়। ফের অবরোধ শুরু করার প্রস্তুতি নিলেও প্যাসেঞ্জার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের কাছে অনেক যাত্রীই আর্জি জানান, অবরোধ নয়, বরং বিক্ষোভ চলুক। তাতে তাঁদেরও সমর্থন থাকবে। শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয়বার অবরোধের সিদ্ধান্ত বদল করে বিক্ষোভ শুরু হয়।
শ্যামনগর স্টেশনের ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে আরপিএফ বুথের সামনে বিক্ষোভ শুরু হয়। যা চলে দিনভর। নিত্যযাত্রীদের অনেকে ট্রেন থেকে নেমে অভিনন্দন জানান বিক্ষোভকারীদের। ঘটনাচক্রে, দিন পনেরোর মধ্যেই চার বার রেল অবরোধ হয়েছে শিয়ালদহ শাখার মেইন লাইনে। এর মধ্যে একমাত্র আগরপাড়ায় রেলগেট ভেঙে পথচারী জখম হওয়ার ঘটনা ছাড়া বাকি দু’টি কারণ যাত্রী সমস্যার জন্য হয়নি।
পূর্ব রেলের এক কর্তা বলেন, ‘‘এই অবরোধের কথা সংবাদমাধ্যমে জানার পরে আমরা তড়িঘড়ি প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিয়েছিলাম। তবে রেল পরিষেবা নিয়ে ক্ষোভের জন্য অবরোধ না করে লিখিত ভাবে ওঁরা আমাদের জানাতে পারতেন। অবরোধকারীদের দাবিগুলি লিখিত ভাবে আমাদের কাছে এলে নিশ্চয়ই খতিয়ে দেখে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ প্যাসেঞ্জার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে প্রদীপ চৌধুরী বলেন, ‘‘প্ল্যাটফর্ম নিচু থাকায় বারবার দুর্ঘটনার কথা রেল কর্তৃপক্ষকে বহুবার জানিয়েছি। ইতিমধ্যেই অনেকগুলি প্রাণ গিয়েছে। আর নয়। আমরা বাধ্য হয়েই অবরোধের ডাক দিয়েছিলাম।’’
যাত্রীদের অভিযোগ, শ্যমনগরের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনে বেনিয়ম, নোংরা, সন্ধ্যার পরে মহিলাদের জন্যও অস্বস্তিকর পরিবেশ তৈরি হয় স্টেশন চত্বরেই বসা নেশার ঠেক আর বাইক বাহিনীর আড্ডার জন্য। রেল চাইলেই জায়গা পরিচ্ছন্ন রাখতে পারে। রেলের পক্ষ থেকে এ দিন আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, পর্যালোচনার পরে ব্যবস্থা নেওয়ার।