মেলার কাজ সামলাতে ব্যস্ত প্রধান। নিজস্ব চিত্র
রাজনীতির ছোঁয়া নেই তাঁর ত্রিসীমানায়। অথচ সেই রাজনীতিই আপাদমস্তক এক গৃহবধূকে এনে ফেলেছে লক্ষ মানুষের মেলায়। গঙ্গাসাগরের পুণ্যস্নানে যে লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী আসবেন, তাঁদের নিজের অতিথি বলেই মনে করছেন তিনি।
এর আগে পুণ্যার্থী হিসাবে মেলা প্রাঙ্গণে প্রায় বারো বছর ধরে আসছেন তিনি। এ বার তিনিই আছেন মেলার ব্যবস্থাপনার অংশ হিসেবে। দিনের অনেকটা সময় এখন মেলার হাজারটা কাজ সামলাতেই কাটছে সাগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শোভা দিন্দার। কালীবাজারের বাড়ি থেকে টোটোয় আসছেন। তারপরে নিজের কাজ দেখভাল করছেন। সরকারি-বেসরকারি সব সাহায্যই আছে। তবু স্থানীয় সংস্থার নির্বাচিত প্রধান হিসেবে নিজের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন তিনি। নামখানার মেয়ে, সাগরের বউ শোভার কাছে এখন গোটা মেলাই শ্বশুরবাড়ি। পুণ্যস্নান তো আছেই, তার আগে-পরে মিলিয়ে বিশ-বাইশ লক্ষ মানুষ আসেন সাগরে।
এত অসংখ্য পুণ্যার্থীর আতিথেয়তার গুরুদায়িত্ব জানেন?
শোভার কথায়, ‘‘লক্ষ লক্ষ মানুষ আসেন, তা তো জানি। কিন্তু সেই মেলার কাজে জড়িয়ে থাকার কথা কোনও দিন ভাবিনি। এটা আমার কাছে নতুন।’’ নতুন, কারণ মাস ছ’য়েক আগেই সাগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। তাঁর কাছে বিষয়টি আরও ঘটনাবহুল কারণ, রাজনীতির সঙ্গে একেবারে সম্পর্কহীন শোভা এ বারই প্রথম ভোটে প্রার্থী হয়েছেন এবং জিতেওছেন।
তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে তাঁকে খুঁজে বের করেছিলেন সাগরের তৃণমূল বিধায়ক বঙ্কিম হাজরা। তার পরেই সদস্য এবং সংরক্ষণের কারণে প্রধান হয়েছেন শোভা। সাংসারিক কাজ আর পড়াশোনার আবহ থেকে সটান সাগরমেলায়। শ্বশুরবাড়ির হেঁসেল আর শিশুসন্তান রেখে পঞ্চায়েত সামলানোটাই তাঁর কাছে নতুন অভিজ্ঞতা। সেখান থেকে এই দায়িত্বে তিনি। সাগরমেলায় আলাদা অফিস করেছে পঞ্চায়েত। সেখানেই থাকবেন প্রধান-সহ স্থানীয় পঞ্চায়েতের অন্য সদস্য ও সরকারি কর্মীরা।
শোভা বলেন, ‘‘সরকারের বিভিন্ন দফতর কাজ করছে। মন্ত্রী, অফিসারেরা আছেন। আমরাও কাছাকাছি থাকছি। এত মানুষ আসেন, তাঁদের কোনও সাহায্য প্রয়োজন হলে চেষ্টা করছি।’’ বঙ্কিম খুশি। তাঁর কথায়, ‘‘উৎসাহ আছে শোভার। ভালই কাজ করছে।’’