আরামে আবাসিকেরা। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
বনগাঁ শহরের চাঁপাবেড়িয়া এলাকার বৃদ্ধ কানাইলাল রায়। পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল না। নিজের একটি দোকান ঘরে রাত কাটাতেন। একবার আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দারা সে যাত্রায় তাঁর প্রাণ বাঁচান।
রবিবার থেকে বেঁচে থাকার নতুন রসদ খুঁজে পেয়েছেন তিনি। সৌজন্যে, বনগাঁর পুরসভার তৈরি আবাসন। শহরের চাঁপাবেড়িয়া এলাকায় পুরসভার পক্ষ থেকে সম্প্রতি তৈরি করা হয়েছে চারতলা একটি আবাসন। জাতীয় নগর জীবিকা মিশন প্রকল্পে আশ্রয়হীন ও অসহায় মানুষের থাকার জন্য ওই আবাসনটি তৈরি করা হয়েছে। নাম, ‘শরণ্য’। কানাইলাল ঠাঁই পেয়েছেন সেখানে। বললেন, ‘‘বেঁচে থাকার ইচ্ছেটাই চলে গিয়েছিল। এ বার হয় তো অন্য রকম হবে কিছুটা।’’
রবিবার আবাসনের উদ্বোধন করেছেন পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য। ইতিমধ্যেই ওই আবাসনে ঠাঁই হয়েছে কানাইলালবাবুর মতো চল্লিশ জন অসহায় মানুষের।
কথা হচ্ছিল বৃদ্ধা ডলি সর্দার, অশোকতলা বিশ্বাস মতো কয়েকজনের সঙ্গে। কেউ ভিক্ষে করে বেঁচে ছিলেন, কেউ আবার রাস্তার পাশে দিন কাটাতেন। সকলেই এখন নতুন ঠিকানা পেয়ে অন্য জীবনের স্বপ্ন দেখছেন।
পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, ১ কোটি ৫৪ লক্ষ টাকা খরচে বারো কাঠা জমির উপরে ‘শরণ্য’ তৈরি হয়েছে। সেখানে ৮টি পরিবার ও ৫০ জন অসহায় মানুষের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। শুধু মাথায় উপরে ছাদই যাচ্ছেন না এখানকার অতিথিরা। সঙ্গে মিলবে চারবেলা বিনামূল্যে খাওয়া। বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরিষেবাও।
পুরসভার পক্ষ থেকে প্রচারে আশ্রয়হীন ও অসহায় মানুষের কাছে আবেদন করা হচ্ছে, তাঁরা যেন পুরসভার সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
শঙ্করবাবু বলেন, ‘‘সপ্তাহে একদিন করে শরণ্যতে গিয়ে চিকিৎসেকরা আবাসিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবেন। প্রয়োজন মতো বিনামূল্যে ওষুধপত্র দেওয়া হবে।’’
প্রশাসনের সূত্রে জানা গিয়েছে, নিরাপত্তার জন্য ওই আবাসনে বসানো হয়েছে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা। বিকেলে অবসর সময় কাটানোর জন্য আবাসনের সামনে সৌন্দর্যায়ন করা হয়েছে। এ ছাড়া বসার জন্য ব্যবস্থাও করা হয়েছে।