‘ফোন নিও না কাকু, আমাদের বাঁচাও’

এ দিন বাস থামিয়ে তারা এগিয়ে গেল বাস চালকদের দিকে। চালকদের হাতে গোলাপফুল ও লজেন্স দিয়ে অনুরোধ করল, ‘‘কাকু আর কানে ফোন দিয়ে বাস চালিও না। সাবধানে গাড়ি চালিয়ে জীবন বাঁচাও।’’ সকাল সাড়ে ৯টায় এমন দৃশ্য দেখে অবাক বাস চালকেরাও।

Advertisement

নির্মাল্য প্রামাণিক

বাগদা শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:৪২
Share:

পড়ুয়ারা লজেন্স দিয়ে সচেতন করছে চালকদের। নিজস্ব চিত্র

কোনওটায় লেখা ‘কাকু তোমরা খুব ভাল, কানে ফোন না নিয়ে আমাদের প্রাণ বাঁচাও।’ আবার কোথাও, ‘সাবধানে চালাও গাড়ি, জীবন বাঁচাও।’—এমনই প্ল্যাকার্ড নিয়ে বাগদার সিন্দ্রাণী বাজারে রবিবার একঝাঁক স্কুল পড়ুয়া বাস চালকদের সচেতন করতে পথে নামল।

Advertisement

এ দিন বাস থামিয়ে তারা এগিয়ে গেল বাস চালকদের দিকে। চালকদের হাতে গোলাপফুল ও লজেন্স দিয়ে অনুরোধ করল, ‘‘কাকু আর কানে ফোন দিয়ে বাস চালিও না। সাবধানে গাড়ি চালিয়ে জীবন বাঁচাও।’’ সকাল সাড়ে ৯টায় এমন দৃশ্য দেখে অবাক বাস চালকেরাও।

শুধু বাস চালকদের নয়, ট্রাক ও মোটরবাইক চালকদেরও সচেতন করল সিন্দ্রাণী সাবিত্রী উচ্চ বিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। তাদের সঙ্গে ছিলেন সিন্দ্রাণী অ্যাথেলেটিক অ্যাকাডেমি ও সিন্দ্রাণী যুব উন্নয়ন সমিতির সদস্যরা।

Advertisement

নবম শ্রেণির ছাত্রী বীথিকা দাস বলে, ‘‘কাকুদের বলেছি, আমাদের অনেক বন্ধু বাসে করে স্কুলে আসে। তাদের জীবন তোমাদের হাতে। তোমরা মোবাইল কানে নিয়ে আর গাড়ি চালিও না।’’

অষ্টম শ্রেণির দেবার্ঘ্য সাহা, শুভজিৎ সাধুখাঁ, সপ্তম শ্রেণির মৌ রায়রা বলল, ‘‘মুর্শিদাবাদের ঘটনাটা আমরা সবাই টিভি দেখে, কাগজ পড়ে জেনেছি। চালকেরা মোবাইলে কথা বলতে বলতে যাতে গাড়ি না চালান সে জন্যই আমাদের এই পদক্ষেপ।’’

বনগাঁ-দত্তপুলিয়া রুটের বাসচালক অসিত সাহা পড়ুয়াদের কাছ থেকে গোলাপ ও লজেন্স পেয়ে খুশি।

তিনি বললেন, ‘‘যদিও আমি মোবাইলে কথা বলতে বলতে কখনও গাড়ি চালাই না। তবুও পড়ুয়াদের এই চেষ্টা খুব ভাল লেগেছে। আমিও সকলকে বলব গাড়ি চালানোর সময় ফোন না ধরতে।’’

হেলেঞ্চা থেকে কালনা রুটের বাসচালক অরুণ বর্মন জানান, গাড়ি চালানোটা একটা দায়িত্বের কাজ। ফোন আসলে রাস্তার পাশে গাড়ি দাঁড় করিয়ে কথা বলা উচিত। ট্রাকচালক কানাই সরকারেরও একই মত। তবে ছাত্রছাত্রীদের এই কাজে খুশি তিনিও। বলেন, ‘‘ এ বার এ বিষয়ে সবার সচেতন হওয়া উচিত।’’

স্কুল পড়ুয়াদের সঙ্গে সদস্যদের নিয়ে হাজির ছিলেন সিন্দ্রাণী যুব উন্নয়ন সমিতির সুজিত বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘‘দৌলতাবাদের ঘটনা খুবই মর্মান্তিক। এরকম আর যেন না হয়। সেই কারণেই আজকের এই কর্মসূচি।’’

সিন্দ্রাণী অ্যাথেলেটিক অ্যাকাডেমির সদস্যদের পক্ষে গৌর রায় বলেন, ‘‘মোবাইল কানে গাড়ি চালানোটা একটা খারাপ অভ্যাস। সেই অভ্যাসটাকে বদলানোর চেষ্টা করা হয়েছে।’’ ছাত্রছাত্রীদের এই চেষ্টাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সিন্দ্রাণী বাজারের পথচলতি মানুষজনও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন