জমা জলে ঘুরছে বিষাক্ত সাপ, অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটি স্কুলে

নিয়ম করে জল ঠেলে স্কুলে ঢুকে হাজিরার খাতায় সই করছেন দুই শিক্ষক। কিছুক্ষণ স্কুলে কাটিয়ে ফিরে যাচ্ছেন। রায়দিঘির মথুরাপুর ২ ব্লকের দমকল পীরখালি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে হাঁটু সমান জল জমে রয়েছে বহু দিন ধরে।

Advertisement

দিলীপ নস্কর

রায়দিঘি শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:৪৪
Share:

এই পরিস্থিতিতেই চলছে অনির্দিষ্টকালের ছুটি। নিজস্ব চিত্র।

নিয়ম করে জল ঠেলে স্কুলে ঢুকে হাজিরার খাতায় সই করছেন দুই শিক্ষক। কিছুক্ষণ স্কুলে কাটিয়ে ফিরে যাচ্ছেন। রায়দিঘির মথুরাপুর ২ ব্লকের দমকল পীরখালি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে হাঁটু সমান জল জমে রয়েছে বহু দিন ধরে। প্রায়শই সেখানে পড়ুয়ারা পড়ে হাত-পা কাটছে। সাপের উপদ্রবও বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য স্কুলে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

Advertisement

স্কুলে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ১০৫ জন। শিক্ষক দু’জন। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সঞ্জীব হালদার বলেন, ‘‘টানা এত দিন স্কুল বন্ধ রাখায় পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু এ ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। বিষয়টি সমাধানের জন্য সমস্ত স্তরে জানানো হয়েছে।’’

মাসখানেক আগে টানা বৃষ্টিতে জল জমে ছিল স্কুলের সামনে। কিন্তু এখনও সেই জল নামেনি। বহু দিন ওই জল কাদা পেরিয়েই স্কুলে এসেছে কচিকাঁচার দল। জল ঢুকেছে ক্লাসে, মিড-ডে মিলের রান্না ঘরে, শৌচাগারে। কোনও রকমে সেখানেই চলছিল পঠনপাঠন। কিন্তু জলের মধ্যে বিষাক্ত সাপ ঘুরে বেড়াতে দেখে আর স্কুলে আসতে চাইছে না পড়ুয়ারা।

Advertisement

স্কুল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়টি বহু পুরনো। আগে নিকাশি সমস্যা ছিল না। বছর দশেক আগে স্কুলের পাশের রাস্তা উঁচু করে ইটের রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। তারপর থেকেই জল নামতে দেরি হয়।

এ দিকে, টানা ছুটির কারণে সমস্যায় পড়ছে পড়ুয়ারা। এ নিয়ে অভিভাবকেরা স্কুলের শিক্ষকদের কাছে একাধিকবার ক্ষোভ প্রকাশও করছেন। অভিভাবক শিবনাথ হালদার, কল্পনা বৈরাগীরা বলেন, ‘‘ছেলেমেয়েরা স্কুলে না গেলে পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়বে। কাছাকাছি আর কোনও প্রাথমিক স্কুলও নেই, যে সেখানে পাঠাব।’’ তাঁদের অভিযোগ, সরকার শিক্ষার প্রসারের জন্য নানা রকম প্রকল্প করছে। অথচ ছাত্রছাত্রীরা স্কুলেই যেতে পারছে না। অবিলম্বে স্কুলের সামনে মাটি ফেলা উচিত।

মথুরাপুর পশ্চিম চক্রের স্কুল পরিদর্শক মুকুল গায়েন বলেন, ‘‘জল নিকাশির পথ বের করার জন্য একাধিকবার গ্রামবাসীদের নিয়ে সভা ডাকা হয়েছে। কিন্তু কোনও সমাধান হয়নি।’’ জল না নামলে স্কুল খোলা সম্ভব নয় বলে তিনি জানান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন