Joynagar Murder

‘বড়ভাই’ তৃণমূল নেতাকে খুনের নির্দেশ দিয়েছিলেন! কে তিনি? জানালেন জয়নগরকাণ্ডে ধৃত শাহরুল

প্রশ্ন উঠেছে, কে এই ‘বড়ভাই’? সে জবাবও দিয়েছেন শাহরুল। জানিয়েছেন, কোথায় এই ‘বড়ভাই’য়ের বাড়ি। এই খুনের জন্য এখন পর্যন্ত কোনও টাকা যে তিনি পাননি, তা-ও দাবি করেছেন শাহরুল।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

জয়নগর শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২৩ ১৬:৪৬
Share:

জয়নগরকাণ্ডে ধৃত শাহরুল শেখ। — নিজস্ব চিত্র।

আদালত থেকে বেরিয়ে শাহরুল শেখ বার বার দাবি করেছেন, তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিনকে তিনি খুন করেননি। খুন করার নির্দেশ দিয়েছিলেন ‘বড়ভাই’ নাসির। জয়নগরকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত শাহরুলের এই দাবির পরেই প্রশ্ন উঠেছে, কে এই ‘বড়ভাই’? সে জবাবও দিয়েছেন শাহরুল। জানিয়েছেন, কোথায় এই ‘বড়ভাই’য়ের বাড়ি। এই খুনের জন্য এখন পর্যন্ত কোনও টাকা যে তিনি পাননি, তা-ও দাবি করেছেন শাহরুল। পুলিশ এখন এই ‘বড়ভাই’কেই খুঁজছে।

Advertisement

তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিন লস্করের খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সোমবার গ্রেফতার করা হয়েছে শাহরুলকে। মঙ্গলবার তাঁকে বারুইপুর আদালতে হাজির করানো হয়। সেখান থেকে বেরিয়ে তিনি দাবি করেন, ‘‘আমি খুন করিনি। খুন করেছে সাহাবুদ্দিন। খুন করার অর্ডার দিয়েছিল বড়ভাই। নাসির।’’ এর পর এই ‘বড়ভাই’য়ের হদিসও দিয়েছেন শাহরুল। জানিয়েছেন, আদতে তিনি ফেরি এবং চুরির কাজ করতেন। তাঁর বাড়ি ডায়মন্ড হারবারের নেতড়ায়। সেখান থেকে তাঁকে চুরির কথা বলে নিয়ে আসা হয়েছিল। তাঁর কথায়, ‘‘ফেরি ও চুরির কাজ করতাম। আমি খুন করিনি। বড়ভাই, যাঁর বাড়ি সংগ্রামপুর সংলগ্ন টেকপাঁজা, তিনি নিয়ে আসেন। চুরির কথা বলেই আনা হয়েছিল। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনও টাকা পাইনি।’’ শাহরুল আরও দাবি করেছেন, তিনি কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন।

তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিনের খুনের পর ‘গণপিটুনি’তে সাহাবুদ্দিন নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ। ধৃত শাহরুল দাবি করেছেন, এই সাহাবুদ্দিনই খুন করেছেন তৃণমূল নেতাকে। তিনি খুন করেননি। নিরাপত্তার কারণে গ্রেফতার করার পর জয়নগর থানার পুলিশ শাহরুলকে বারুইপুর থানায় রাখে। মঙ্গলবার দুপুরে বারুইপুর থানা থেকে তাঁকে আদালতে হাজির করানো হয়। জয়নগর থানার পক্ষ থেকে শাহরুলের ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজত চাওয়া হয়। অভিযুক্তের পক্ষে কেউ আইনজীবী ছিলেন না। বিচারক তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, তাঁর কোনও শারীরিক সমস্যা রয়েছে কি না! জবাবে তিনি জানান, তৃণমূল নেতার মৃত্যুর পর মারধর খাওয়ায় তাঁর শরীর খুব খারাপ। এর পরেই তদন্তকারী অফিসারকে সঠিক সময়ে ধৃতের মেডিক্যাল পরীক্ষা করানোর নির্দেশ দেন বিচারক। কোর্ট লকআপে যাতে কোনও অত্যাচার না হয়, তা নিশ্চিত করারও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। ধৃতকে ১০ দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে বারুইপুর আদালত।

Advertisement

শাহরুলকে জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, সইফুদ্দিন কখন, কোথায় যান, তাঁর গতিবিধির উপর নজর রাখতে তৃণমূল নেতার বাড়ির পাশেই একটি বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন শাহরুল। জয়নগরের বামনগাছির যে জায়গায় সইফুদ্দিনের প্রাসাদোপম বাড়ি আছে, তার একটু দূরেই কয়েক দিন ধরে থাকছিলেন তিনি। শাহরুল আদতে ডায়মন্ড হারবারের নেতড়ার বাসিন্দা। পুলিশ সূত্রে খবর, বছর তেইশের শাহরুল চুরি-ছিনতাইয়ের সঙ্গে যুক্ত। পুলিশের খাতায় আগেও তাঁর নাম উঠেছে। পাশাপাশি, দর্জির কাজও করতেন তিনি। পুলিশি জেরায় শাহরুল জানিয়েছেন, তিনি ‘নতুন কাজের বরাত’ পান কিছু দিন আগে। তাঁকে বলা হয়, একটি ‘চুরির কাজ’ আছে। তাই একটি বাড়িতে নজর রাখতে হবে। রাজি হয়ে যান ওই যুবক। তার পর তিনি চলে আসেন বামনগাছি এলাকায়। সোমবার তৃণমূল নেতাকে গুলি করে খুনের সময় তিনিও ছিলেন। পুলিশের দাবি, শাহরুলই খবর দিতেন যে, কখন নমাজ পড়তে মসজিদে যান সইফুদ্দিন। তাঁর কথা মতোই ‘অপারেশন’-এর সময় ঠিক করে নেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন