মন্দা: খদ্দেরের দেখা নেই। অলস সময় কাটছে কর্মীদের। রবিবার হিঙ্গলগঞ্জে। নিজস্ব চিত্র।
বড় দুর্যোগের পূর্বাভাষ ছিল। তবে রবিবার সন্ধে পর্যন্ত দুই জেলায় তেমন ঝড়-বৃষ্টির দাপট দেখা যায়নি। আবহাওয়া দফতর অবশ্য জানিয়েছে, অন্য একটি নিম্নচাপে আগামী ২-৩ দিন বৃষ্টি হতে পারে। ফলে জেলা প্রশাসনের তরফে প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে। এ দিনও বেশ কিছু জায়গায় মাইকে প্রচার করে মানুষকে সতর্ক করা হয়েছে। বকখালির মতো পর্যটনকেন্দ্রে আগামী ২-৩ দিনের বুকিং বাতিল করা হয়েছে।
ঝড়-বৃষ্টি না হলেও, দুই জেলার পুজোর বাজারে তেমন ভিড় জমেনি রবিবার। দুর্গাপুজোর আর কয়েকদিন বাকি। অন্যান্য বছর এই সময়ে রবিবারগুলিতে জেলায় জেলায় বাজারগুলিতে ভিড় লেগে থাকে। কিন্তু এ দিন সেই ছবি চোখে পড়েনি। ব্যবসায়ীদের মতে, এমনিতেই করোনা ও লকডাউন পরিস্থিতিতে এ বার বাজার খারাপ। তার উপরে দুর্যোগের আশঙ্কা থাকায় অনেকে বাড়ি থেকে বেরোননি। এখনও অনেক এলাকায় জল জমে রয়েছে। ফলে সেখানকার মানুষও বেরোতে পারছেন না।
এ দিন ভাঙড়, ডায়মন্ড হারবার-সহ দক্ষিণের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেল ক্রেতার দেখা নেই। অধিকাংশ কাপড়, জুতো এবং মনোহারির দোকান ফাঁকা। ভাঙড় বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সাবিরুল ইসলাম বলেন, “অন্যান্যবার পুজোর আগে এই সময়ে বাজারে ভিড় উপচে পড়ে। এ বার অন্য রকম পরিস্থিতি। একে করোনা, তার উপরে প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষ বিপর্যস্ত। মানুষের হাতে টাকা নেই। ফলে বাজারে ভিড় নেই।”
ডায়মন্ড হারবার স্টেশন বাজারের এক ব্যবসায়ী জানান, প্রাথমিক ভাবে মন্দা চললেও, বিশ্বকর্মা পুজোর কেনা কাটার হিড়িক কিছুটা বেড়েছিল। কিন্তু তারপরেই টানা বৃষ্টি এবং খারাপ আবহাওয়ায় জন্য কেনাকাটায় ভাটা পড়েছে।
উত্তর ২৪ পরগনার অন্যতম ব্যবসা কেন্দ্র হাবড়া। পুজোর আগে কাপড়ের দোকানগুলি ভিড়ে উপচে পড়ে। উত্তর ২৪ পরগনা ও নদিয়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ এখানে পুজোর কেনাকাটা করতে আসেন। দোকানের কর্মচারীরা দুপুরে খাওয়ার সময় পান না। দোকান মালিকেরা ভিড় সামাল দিতে অতিরিক্ত কর্মী নিয়োগ করেন এই সময়ে। এ বার পুজো এসে গেলেও দোকানগুলিতে ভিড় নেই। স্থানীয় রাজা মার্কেটে দোকান অমিতকুমার পালের। রবিবার দোকানে গিয়ে গেল ক্রেতা নেই। অমিত বলেন, “পুজোর দেড় মাস আগে থেকে চারজন অতিরিক্ত কর্মী নিয়োগ করতাম। এখন একজন কর্মীকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছি। দোকানে কাজ আমি নিজেই করছি।”
বনগাঁ শহরেও বেশিরভাগ দোকান ফাঁকা ছিল। ব্যবসায়ীরা জানান, আপাতত মহালয়া পর্যন্ত আশায় আছেন। মহালয়ার পরে হয় তো ক্রেতা বাড়বে। বনগাঁ-বসিরহাটে শপিংমলগুলিতে ক্রেতার দেখা কিছু মিললেও ছোটবড় কাপড়ের দোকানগুলি ফাঁকাই ছিল। হিঙ্গলগঞ্জ বাজারের বস্ত্র ব্যবসায়ী মানস নাথ জানান, দোকানে যে পরিমাণ পোশাক তুলেছিলেন, তার ৮০ শতাংশই এখনও বিক্রি হয়নি।