প্রেমের টানে মেলা প্রাঙ্গণে

সরস্বতী পুজোর দিন ভারত– বাংলাদেশ সীমান্তে এমন বিশেষ উৎসবে সামিল হতে আসেন বহু তরুণ-তরুণী। এই দিনে সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর চোখ রাঙানি থাকে না। বাইক থামিয়ে তল্লাশিও চলে না।  বর্ডার রোড ধরে প্রেমিকাকে বসিয়ে প্রেমিকের বাইক হুশ হুশ করে ছুটে চলে।

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র

বনগাঁ শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৩৯
Share:

হাতে-হাত: বনগাঁর মেলায়। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

প্রেমের উৎসবে এ বারও ভিড় জমল বনগাঁ মহকুমার সুটিয়া বাঁশঘাটা সীমান্তে।

Advertisement

সরস্বতী পুজোর দিন ভারত– বাংলাদেশ সীমান্তে এমন বিশেষ উৎসবে সামিল হতে আসেন বহু তরুণ-তরুণী। এই দিনে সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর চোখ রাঙানি থাকে না। বাইক থামিয়ে তল্লাশিও চলে না। বর্ডার রোড ধরে প্রেমিকাকে বসিয়ে প্রেমিকের বাইক হুশ হুশ করে ছুটে চলে। নতুন প্রেম নিবেদনের জন্যও বান্ধবীকে নিয়ে অনেকে হাজির হন এখানে।

সোমবার ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, যথারীতি ভিড় জমেছে। কেউ কাউকে বিরক্ত করার নেই। যে যার মতো হাতে হাত চোখে চোখ রেখে ব্যস্ত নিভৃত আলাপচারিতায়। ছোটখাট মেলাও বসে যায় এ দিন। অনেককে দেখা গেল, ভিড় ঠেলে গোলাপ কিনছেন। পছন্দের মানুষটির হাতে তুলে দেওয়ার আকুলতা দু’চোখে।

Advertisement

কী ভাবে শুরু হয়েছিল প্রেমের উৎসব? গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, পারিবারিক আপত্তিতে আটকে গিয়েছিল জনৈক স্মরজিৎ ও রূপাইয়ের প্রেম। বিস্তর লড়াই-ঝক্কি সামলে কোনও এক সরস্বতী পুজোর দিন তাঁদের চার হাত এক হয়েছিল। বাড়ির সকলের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করেই ছিল সে দিনের সাহসী সিদ্ধান্ত।

তারপর থেকে ওই দম্পতি সিদ্ধান্ত নেন, নিজেদের প্রেমকে স্মরণীয় করে রাখতে ও সম্মান জানাতে সরস্বতী পুজোর দিনটিকে বিশেষ ভাবে উদযাপন করবেন।

প্রায় তিরিশ বছর আগের ঘটনা। নিজেরাই সেতুর কাছে ছোট করে পুজোর আয়োজন করেন। সেখানে বাইরে থেকে যে সব প্রেমিক-প্রেমিকা পথ ভুলে বা নিভৃতে সময় কাটাতে আসতেন, তাঁদের স্মরজিৎ-রূপাই সাগ্রহে আগলে রাখতেন।

সেই শুরু। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উৎসবের প্রচার হয়েছে মুখে মুখে। স্মরজিৎ-রূপাইয়ের খোঁজ আজ আর পাওয়া যায় না। কিন্তু তাঁদের দেখানো পথ ধরে প্রেমের টানে অনেকে ছুটে আসেন এই দিনটিতে।

এক দম্পত্তি গাড়ি নিয়ে এসেছিলেন। জানালেন, এখানে এসেই কোনও এক সরস্বতী পুজোর দিন আলাপ হয়েছিল। সেখান থেকে প্রেম। যা গড়ায় ছাদনাতলা পর্যন্ত। সময়ের অভাবে বহু দিন আসতে পারেননি। এ বার এসেছেন। বললেন, ‘‘দুনিয়াটা তো হিংসা আর হানাহানিতে ভরে গিয়েছে। এমন উৎসব দেশের আরও নানা প্রান্তে হলে ভাল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন