ভাঙা রাস্তায় নাজেহাল ছাত্রছাত্রীরা

স্কুলে আসতে কাদা মাখতে হয়। ক্লাস করে বাড়ি ফেরার সময়ে পথের লাল ধুলোয় ঢেকে যায় পোশাক। ভাঙাচোরা রাস্তায় প্রতি দিন স্কুলে যাতায়াত করতে এই অবস্থা হয় মেদিয়া হাইস্কুলের ছাত্রছাত্রীদের।

Advertisement

নির্মল বসু

বাদুড়িয়া শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৭ ০২:০৩
Share:

এবড়োখেবড়ো: এই পথেই যাতায়াত। ছবি: নির্মল বসু

স্কুলে আসতে কাদা মাখতে হয়। ক্লাস করে বাড়ি ফেরার সময়ে পথের লাল ধুলোয় ঢেকে যায় পোশাক। ভাঙাচোরা রাস্তায় প্রতি দিন স্কুলে যাতায়াত করতে এই অবস্থা হয় মেদিয়া হাইস্কুলের ছাত্রছাত্রীদের।

Advertisement

স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হরেকৃষ্ণ মিস্ত্রি বলেন, ‘‘দীর্ঘ দিন ধরে সংস্কারের অভাবে স্কুলে আসা-যাওয়ার ৬-৭ কিলোমিটার রাস্তায় পিচ উঠে গিয়েছে। ভয়ঙ্কর অবস্থা। ছাত্রছাত্রীরা সাইকেলে আসতে গিয়ে প্রায়ই উল্টে পড়ছে।’’ তিনি জানালেন, ইটভাটা এলাকায় বেহাল রাস্তায় সুরকি ফেলায় ধুলোয় আরও অস্থির অবস্থা। অবিলম্বে রাস্তা সারানোর বিষয়টি জেলা পরিষদকে জানানো হয়েছে।

বাদুড়িয়া ব্লকে নয়াবস্তিয়া-মিলনি পঞ্চায়েত এলাকায় ইছামতী ঘেরা মেদিয়া হাইস্কুল। ২০০০ সালে বন্যায় নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছিল স্কুল। জেলা পরিষদ ও রাজ্য সরকারের তত্ত্বাবধানে প্রায় ৫২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে দোতলা ফ্লাড সেন্টারের আদলে নতুন করে স্কুলভবন গড়ে তোলা হয়। ২০০২ সালে নতুন ভবনের উদ্বোধন হয়। স্কুলটিতে বর্তমানে ৮ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা আছেন। সাড়ে তিনশোরও বেশি ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করে। পড়ুয়াদের বেশিরভাগ আসে নয়াবস্তিয়া, মেদিয়া, কুলিয়া, মিলনি, কাঁকড়াসুতি-সহ আশেপাশের কয়েকটি গ্রাম থেকে। মছলন্দপুর থেকে একটি মাত্র অটো আসে স্কুল পর্যন্ত। তা-ও আবার সব সময়ে মেলে না। ফলে ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষকদের হেঁটে কিংবা সাইকেল স্কুলে পৌঁছতে হয়।

Advertisement

শিক্ষক দীপক হালদার, প্রদীপ গাইনরা বলেন, ‘‘২০০৩ সালে রামচন্দ্রপুর থেকে মেদিয়া বকুলতলা পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনায় তৈরি হয়েছিল। তারপর থেকে সংস্কার না হওয়ায় বর্তমানে ওই রাস্তার অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয় চেহারা নিয়েছে। রাস্তার পাশে নদীর ধারে ইটভাটা আছে। সেখানে প্রচুর ট্রাক আসে। ফলে রাস্তার সুরকির ধুলো-বালিতে টেঁকা দায়।’’ রাবিয়া খাতুন, অঙ্কিতা গাইন, আয়েসা খাতুন, শিল্পা বিশ্বাসদের মতো পড়িয়াদের কথায়, ‘‘রাস্তার ধুলো বন্ধ করতে গরমের সকালে ইটভাটা থেকে জল ছিটানো হয়। ওই জলকাদা মেখে আমাদের স্কুলে যেতে হয়। বিকেলে বাড়ি ফেরার সময়ে রাস্তার ধুলো-বালিতে পোশাক এমন নোংরা হয় যে একটা জামা এক দিনের বেশি পরা যায় না।’’ ছাত্রছাত্রীরা জানায়, এবড়ো খেবড়ো রাস্তার গর্তে পড়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। রাস্তার ধুলোতে চোখ জ্বালা করে, শ্বাস নিতে কষ্ট হয়।

পাশের রামচন্দ্রপুর-উদয় পঞ্চায়েত এলাকায মাসিয়া প্রাথমিক স্কুল, কুলিয়া হাইস্কুল-সহ বেশ কয়েকটি স্কুল আছে। সেখানেও রাস্তার বেহাল দশা। আশেপাশের বাড়িঘর ধুলোয় ঢাকা। ধুলো আটকাতে রাস্তায় জল ছিটানো হয়। জেলা পরিষদের পূর্ত ও সড়ক কর্মাধ্যক্ষ নারায়ণ গোস্বামী বলেন, ‘‘রামচন্দ্রপুর থেকে মেদিয়া রাস্তার ৪ কিলোমিটার সংস্কারের জন্য ইতিমধ্যে ৫২ লক্ষ টাকার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন