বক্তৃতার লড়াইয়ে কুপোকাত নেতারা

অনেকটা কংগ্রেস বা বামেদের ধাঁচে নতুন প্রজন্ম থেকে ভাল বক্তা তুলে আনাই ছিল শাসকদলের উদ্দেশ্য। কিন্তু একেবার ব্লক, ওয়ার্ড স্তর থেকে জেলার সেরাদের তুলে আনার সেই বক্তৃতা প্রতিযোগিতায় বিষয়বস্তু ছিল অনেকটা রাজনৈতিক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০১৮ ০১:০৭
Share:

জমাটি: মাতিয়ে দিলেন পড়ুয়ারা। ছবি: সুদীপ ঘোষ

ছিল রাজনৈতিক বক্তৃতা প্রতিযোগিতা। কিন্তু শেষমেশ সেই প্রতিযোগিতায় নেতা-কর্মীদের কুপোকাত করে শিরোপা জিতে নিল স্কুল-কলেজ পড়ুয়ারা। বিশেষত মেয়েরাই।

Advertisement

অনেকটা কংগ্রেস বা বামেদের ধাঁচে নতুন প্রজন্ম থেকে ভাল বক্তা তুলে আনাই ছিল শাসকদলের উদ্দেশ্য। কিন্তু একেবার ব্লক, ওয়ার্ড স্তর থেকে জেলার সেরাদের তুলে আনার সেই বক্তৃতা প্রতিযোগিতায় বিষয়বস্তু ছিল অনেকটা রাজনৈতিক। তাই ৭০০ জন প্রতিযোগীর বেশিরভাগই ছিলেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ কিংবা যুব-র নেতাকর্মীরা। কিন্তু উত্তর ২৪ পরগনার ৩৩টি বিধানসভা এলাকা থেকে ধাপে-ধাপে এক জন করে মূল পর্বে ওঠার পর দেখা গেল, চূড়ান্ত পর্বে এক জনও তৃণমূলের সদস্য নেই। সবাই স্কুল কলেজের পড়ুয়া। একেবারেই অরাজনৈতিক ঘরের ছেলেমেয়ে।

৩৩ জনের মধ্যে সেরা দশ জনকে নিয়ে শুক্রবার ছিল সেরার সেরা বাছাই। বারাসত রবীন্দ্রভবনে সেই প্রতিযোগিতায় অবাক হয়ে তৃণমূলের নেতামন্ত্রীরা ছাত্রছাত্রীদের মুখে শুনলেন তাদের বক্তৃতার বিষয়, ‘রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের বাস্তবতা এবং কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যর্থতা।’ শুনলেন একেবারে অন্য আঙ্গিকে, গলার মডিলিউশনে।

Advertisement

বাবা দুধ বিক্রি করেন। সোদপুরের চন্দ্রচূড় গার্লস স্কুলের একাদশ শ্রেণির ফাস্ট গার্ল আইভি দাস শুরুতেই বলেন, ‘‘এক জন মহিলা শিক্ষিত হলে গোটা পরিবার শিক্ষিত হয়, সমাজও।’’ একেবারে অন্য প্রসঙ্গ থেকে ঘুরিয়ে এনে কন্যাশ্রী, সবুজশ্রী, রূপশ্রীর মতো রাজ্য সরকারের এক-একটি প্রকল্পের ব্যাখা দিলেন আইভি।

৬টি বাছাই পর্ব পেরিয়ে এ দিন আইভি-র মতোই মূল পর্বে এসেছিলেন উত্তর দমদমের নিরুপম হালদার, বনগাঁর দেবারতি মুখোপাধ্যায়, মিঠুন দাস, বরাহনগরের জয়িতা বসু, বিথাড়ি কেপি হাইস্কুলের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী আফাত রুবায়েত মণ্ডলের মতো ছাত্রছাত্রীরা। টানা ১০ মিনিট এক-একজনের তথ্য, বাচনভঙ্গি, ইংরাজিতে উপমা দেখে কাছে টেনে তাঁদের সঙ্গে পরিচয় করলেন বিচারকমণ্ডলী— সৌগত রায়, তাপস রায়, ব্রাত্য বসুর মতো বক্তারা।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এমন উদ্যোগে এ দিন উপস্থিত ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদী, মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ, বিভিন্ন পুরসভার চেয়ারম্যান ও বিধায়কেরা। বক্তব্যের মাঝে অজান্তেই হাততালি দিয়ে উঠছিলেন পোড় খাওয়া সব রাজনীতিকরা। মাইক হাতে নিয়ে প্রতিযোগিতার আয়োজক পার্থ ভৌমিককে বলতে হল, ‘‘এই আয়োজন না হলে বোঝাই যেত না, আমাদের থেকেও ছোট ছেলেমেয়েরা এত সুন্দর ভাবে ন্যায়-অন্যায়ের মধ্যে প্রভেদকে উপলব্ধি করে তার ব্যাখ্যা দিতে পারে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন