সুটিয়ার প্রতিবাদী শিক্ষক বরুণ বিশ্বাস খুনে ব্যবহৃত রিভলভারের ফরেন্সিক রিপোর্ট মিলেছে সম্প্রতি। তারই ভিত্তিতে বুধবার ওই মামলায় বনগাঁ আদালতে অতিরিক্ত (সাপ্লিমেন্টারি) চার্জশিট দিল পুলিশ।
চার্জশিটে দাবি করা হয়েছে, বরুণকে যে রিভলভার থেকে গুলি করা হয়েছিল, সেটি উত্তর ২৪ পরগনার গোপালনগর থানার ন’হাটার বাসিন্দা দেবাশিস সরকারের বাড়ি থেকে পুলিশ উদ্ধার করে। বরুণ হত্যা মামলার বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি সন্দীপ ভট্টাচার্য এ দিন বলেন, ‘‘বরুণের দেহ থেকে যে গুলি উদ্ধার হয়েছিল, ফরেন্সিক পরীক্ষায় জানা গিয়েছে, সে গুলি ওই রিভলভার থেকেই চালানো হয়েছিল। অস্ত্রটি দেবাশিসের বাড়ি থেকেই মেলায় তাঁর নামে অস্ত্র রাখা এবং ব্যবহারের অভিযোগে অস্ত্র আইনে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে।’’ বরুণকে খুনের অভিযোগে এর আগেই অবশ্য দেবাশিসকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। এই খুনে ধৃত অন্য চার জনের সঙ্গে বতর্মানে জেলেই রয়েছেন তিনি।
২০১২-র ৫ জুলাই গোবর়ডাঙা স্টেশনের বাইরে আততায়ীরা গুলি করে খুন করে বছর আটত্রিশের বরুণকে। তিনি কলকাতার মিত্র ইন্সটিটিউশনের (মেন) শিক্ষক ছিলেন। ২০০০ সাল নাগাদ গাইঘাটার সুটিয়ায় একের পর এক বাড়িতে ঢুকে মহিলাদের ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছিল এলাকার দুষ্কৃতী সুশান্ত চৌধুরী ও তার দলের বিরুদ্ধে। প্রতিবাদে আন্দোলনে নামেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ‘প্রতিবাদ মঞ্চ’-এর সামনের সারিতে ছিলেন বরুণ।
সুশান্ত-সহ সাত জন দুষ্কৃতী ধরা পড়ে। তাদের সাজাও হয়। কিন্তু গণধর্ষণ কাণ্ডে আরও কিছু বিচারাধীন মামলায় অন্যতম সাক্ষী ছিলেন বরুণ। তদন্তে নেমে সিআইডি জানতে পারে, জেলে বসে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সুশান্ত বরুণকে খুনের ছক কষে। সুশান্ত মারা গিয়েছে।
বরুণকে খুনের পিছনে আরও ‘পাকা মাথা’ থাকার অভিযোগ তুলে সিবিআই তদন্তের দাবি জানায় তাঁর পরিবার। তাঁদের অভিযোগ, স্থানীয় একটি নদী সংস্কারের টাকা নয়ছয় করার অভিযোগ নিয়ে শাসক দলের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ায় খুন হতে হয় বরুণকে।