বেতন অমিল, ভাটপাড়ায়  বিক্ষোভে অস্থায়ী কর্মীরা

সাফাই কর্মীরা কর্মবিরতি শুরু করায় পরিষেবায় প্রভাব পড়বে  বলে মনে করছেন শহরের বাসিন্দারা। পুর কর্তৃপক্ষও তা মেনে নিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:৩৪
Share:

বিক্ষোভ: অস্থায়ী কর্মীদের। —ফাইল চিত্র।

সাড়ে তিন হাজার অস্থায়ী কর্মী। দীর্ঘ পাঁচ মাস ধরে তাঁদের বেতন অমিল। ভাটপাড়া পুরসভার এই অস্থায়ী কর্মীদের অধিকাংশই সাফাই কর্মী। বেতন না পেয়ে বৃহস্পতিবার থেকে কর্মবিরতি শুরু করলেন তাঁরা। এ দিন পুরসভার সামনে দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভও দেখান। পরে পুরসভায় একটি স্মারকলিপি জমা দেন। বেতনের আশ্বাস অবশ্য মেলেনি বলেই জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

Advertisement

সাফাই কর্মীরা কর্মবিরতি শুরু করায় পরিষেবায় প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন শহরের বাসিন্দারা। পুর কর্তৃপক্ষও তা মেনে নিয়েছেন। তাঁদের অবশ্য অভিযোগ, এই পুর বোর্ড বিজেপির হাতে আসার পর থেকে রাজ্য সরকার তাঁদের টাকা বন্ধ করে দিয়েছে। সে জন্যই বেতন মেটানো যাচ্ছে না। যদিও তৃণমূল সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

ভাটপাড়া পুরসভা দীর্ঘ দিন ধরেই তৃণমূলের দখলে রয়েছে। পুরপ্রধান ছিলেন ভাটপাড়ার বিধায়ক, তৃণমূলের অর্জুন সিংহ। লোকসভা ভোটের আগে এপ্রিল মাসে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন অর্জুন। পরে তৃণমূলের আনা অনাস্থা প্রস্তাবে অপসারিত হন তিনি। অভিযোগ, সেই সময় থেকেই বেতন বন্ধ অস্থায়ী কর্মীদের। লোকসভা ভোটে অর্জুন জেতার পরে বদলে যায় এলাকার রাজনৈতিক সমীকরণ। তৃণমূল শিবির থেকে একের পর এক কাউন্সিলর যোগ দেন পদ্ম শিবিরে। পুরপ্রধান পদে অর্জুনের ভাইপো সৌরভ জিতে যান। বোর্ড বিজেপির দখলে এলেও অস্থায়ী কর্মীদের বন্ধ বেতন চালু হয়নি। এর আগে বেতনের দাবিতে বার কয়েক আবেদন জানিয়েছেন অস্থায়ী কর্মীরা। সুরাহা হয়নি। অস্থায়ী কর্মীরা জানান, সামনে উৎসবের মরসুম। বেতনের অভাবে সংসার অচল হয়ে পড়েছে।

Advertisement

আগে থেকেই সাফাই কর্মীরা ঘোষণা করেছিলেন, বৃহস্পতিবার থেকে তাঁরা কর্মবিরতি শুরু করবেন। পুরসভার স্থায়ী সাফাই কর্মীর সংখ্যা খুবই কম। ফলে এ দিন থেকেই সাফাই ও নিকাশির কাজ ব্যাহত হয়েছে। এ দিন সকাল থেকে সাফাই কর্মীরা পুরসভার সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে তাঁরা পুরসভার মধ্যে ঢুকে পড়েন। অন্যান্য বিভাগের অস্থায়ী কর্মীরা অবশ্য ওই আন্দোলনে সামিল হননি। বিক্ষোভের জেরে পুরসভার কাজও ব্যাহত হয়। আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিরা পুরপ্রধানকে স্মারকলিপি দেওয়ার জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করলেও এ দিন পুরসভায় আসেননি সৌরভ। ফলে পুরসভার এগজিকিউটিভ অফিসারকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। তিনি আশ্বাস দেন, এক মাসের বেতন মেটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু কবে তা দেওয়া হবে, তার স্পষ্ট ভাবে জানাতে পারেননি ওই অফিসার।

মোবাইল বন্ধ থাকায় সৌরভের প্রতিক্রিয়া মেলেনি। উপ পুরপ্রধান সোমনাথ তালুদার বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার পাঁচ মাস ধরে আমাদের প্রাপ্য ২৮ কোটি টাকা আটকে রেখেছে। বোর্ড বিজেপির হাতে আসার জন্য তৃণমূলের সরকার এমন করছে।’’ নৈহাটির তৃণমূল বিধায়ক পার্থ ভৌমিক অবশ্য বলেন, ‘‘পুরসভার অস্থায়ী কর্মীদের বেতন রাজ্য সরকার দেয় না। অপরিকল্পিত ভাবে প্রচুর অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। এখন ওদের বেতন বন্ধের ছকে পরিষেবা বন্ধ করে সাধারণ মানুষকে তাতানোর রাস্তা নিয়েছে বিজেপি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন