দঙ্গল: সংক্রমণের আশঙ্কা এদের নিয়েই। নিজস্ব চিত্র
প্রথমে কাঁপুনি দিয়ে জ্বর। পরে পেট ফোলা। শেষে ছটফট করতে করতে মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়ে মারা যাচ্ছে একের পর এক মোষ।
যার জেরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে অশোকনগরের গুমা ২ পঞ্চায়েতের তাজপুর ঘোষপাড়া এলাকায়। সোমবার ব্লক প্রাণিসম্পদ বিকাশ আধিকারিক গৌতমকুমার নন্দী এলাকায় গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। পশু চিকিৎসকদের অনুমান, অ্যানথ্রাক্সেই আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছে মোষগুলি। গৌতমবাবু জানান, মৃত ও জীবিত মোষের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তা পরীক্ষার জন্য বেলগাছিয়ায় পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট এলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। মোষকে এ দিন অ্যানথ্রাক্সের ভ্যাকসিনও দেওয়া হয়েছে।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তাজপুর ঘোষপাড়া এলাকায় বেশির ভাগ পরিবারের মোষ-গরু রয়েছে। বাসিন্দারা জানালেন, তাঁরা বিহারের কল্যাণপুর থানার জনার্দনপুর এলাকা থেকে মোষ কিনে এনে বাড়িতে পোষেন। এক একটি মোষ কিনে ভিনরাজ্য থেকে আনার খরচ ধরে প্রায় ৮০ হাজার টাকা লাগে। স্থানীয় মোষ মালিক পলাশ ঘোষ বাড়িতে ১০০টি গরু-মোষ পালন করেন। বললেন, ‘‘গত দশ দিনে আমার ১৪টি মোষ মারা গিয়েছে। স্থানীয় ভাবে চিকিৎসক এনে চিকিৎসা করিয়েও বাঁচাতে পানিনি।’’ সোমবার সকালে স্থানীয় বাসিন্দা সঞ্জয় ঘোষেরও একটি মোষ মারা গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরে গিয়ে দিন কয়েক আগে বিষয়টি জানানো হলেও তারা প্রথমে গুরুত্ব দেয়নি। এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘আমরা নিজেরা মোষের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে বিডিও অফিসে দিয়ে এলেও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি।’’
এলাকার মানুষের অন্যতম প্রধান জীবিকা গরু মোষ পালন। এ ভাবে মোষ মারা যেতে থাকায় অর্থনৈতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কায় ভুগছেন মানুষজন।
দিন কয়েক আগেও বিহার থেকে এলাকায় মোষ আনা হয়েছে। বাসিন্দারা মনে করছেন ওই মোষ থেকে এমনটা ঘটতে পারে। গুমা ২ পঞ্চায়েতের প্রধান শাহজাহান মল্লিক জানান, পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকেও পরিস্থিতির উপরে নজর রাখা হচ্ছে।