বাসন্তীতে গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনায় ধৃত ৩

সরকারি খাল দখলকে কেন্দ্র করে বাসন্তীর মসজিদবাটিতে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে গোলমাল বেধেছিল সোমবার। ওই ঘটনায় পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই দিন রাতেই হান্নান শেখ, তৌসিফ শেখ ও সাহাবুদ্দিন শেখ নামে তিনজনকে ধরা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ক্যানিং শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:৫৫
Share:

সরকারি খাল দখলকে কেন্দ্র করে বাসন্তীর মসজিদবাটিতে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে গোলমাল বেধেছিল সোমবার। ওই ঘটনায় পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই দিন রাতেই হান্নান শেখ, তৌসিফ শেখ ও সাহাবুদ্দিন শেখ নামে তিনজনকে ধরা হয়। তারা যুব তৃণমূলের সদস্য।

Advertisement

ওই এলাকার যুব তৃণমূল নেতা মান্নান শেখ বলেন, ‘‘পুলিশের তদন্ত নিয়ে কিছু বলব না। তবে যারা প্রকৃত দোষী, তাদের গ্রেফতার না করে কিছু নিরীহ মানুষকে ধরা হয়েছে। যারা ওই ঘটনার সঙ্গে কোন ভাবেই যুক্ত নয়। তাদের ফাঁসানো হচ্ছে।’’

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া নির্দেশ, দলীয় কোন্দল বরদাস্ত করা হবে না। এরপরেও বাসন্তীতে প্রায়ই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব দেখা যাচ্ছে। গণ্ডগোল বাধছে। মারামারিতে জখম হচ্ছেন বহু। প্রাণও যাচ্ছে মানুষের। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই বাসন্তীতে চলছে গোষ্ঠীকোন্দল, তা মানছেন দলেরই একাংশ।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, রবিবার রাতে মসজিদবাটি এলাকায় একটি সরকারি খাল দখলকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। দু’পক্ষের ৮ জন জখম হন। ভাঙচুর করা হয় দু’টি বাড়িও। পুরনো ও নতুন মসজিদ কমিটির মধ্যে খাল দখল নিয়ে গণ্ডগোলের কথা বলা হলেও আদতে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদের জন্যই এই সংঘর্ষ বেধেছিল বলে জানান এলাকাবাসী। পুরনো মসজিদ কমিটি এলাকার যুব তৃণমূল নেতা মান্নান শেখের অনুগামী। নতুন কমিটি আবার এলাকার পঞ্চায়েত প্রধান গৌর সর্দারের অনুগামী। মূলত এলাকা দখলকে সামনে রেখে কে ওই সরকারি খালের দখল নেবে তা নিয়েই মূলত গণ্ডগোল বলে দলের একাংশের অভিমত।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই এলাকার এক তৃণমূল নেতা জানান, বাসন্তীতে মূলত মেছোভেড়ির দখল, সরকারি খাল দখল করে মাছ চাষ করা, সরকারি খাস জমি দখল করা নিয়েই দু’পক্ষের মধ্যে গণ্ডগোল বাধে। বাসন্তী ব্লক এলাকায় এরকম কয়েক হাজার বিঘা বেআইনি মেছোভেড়ি রয়েছে। এই সব এলাকা যাঁর দখলে থাকে তাঁরাই মূলত ওই সব সরকারি খাল, বেআইনি মেছোভেড়ি থেকে মুনাফা নেবে। যা নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর গণ্ডগোল। আগে বাসন্তীতে তৃণমূলের আধিপত্য থাকলেও এখন সেখানে যুব তৃণমূল অনেক শক্তিশালী হয়েছে। যার কারণে প্রায় সব এলাকা তৃণমূলের হাত ছাড়া হতে চলেছে। যে কারণে এলাকা ধরে রাখতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে তৃণমূল। ফলে প্রায় ঘটছে গোষ্ঠী সংঘর্ষ।বাসন্তী ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, যে খালটি নিয়ে সোমবার ঝামেলা হয় তা সেচ দফতরের অধীনে। ওই খাল প্রায় ৪০০ মিটার লম্বা ও ৪০ ফুট চওড়া। সরকারি ওই খাল কোনও লিজ না নিয়েই দখল করে চলছিল মাছ চাষ। তবে এ ক্ষেত্রে যে ভাবে সরকারি খাল, খাস জমি দখল করে বেআইনি ভাবে মাছ চাষ করা হচ্ছে তা নিয়ে অনেক সময় প্রশাসনের কাছে কোনও অভিযোগ জানানো হয় না। তা ছাড়া সংশ্লিষ্ট দফতরের গাছাড়া মনোভাবের কারণে জবর দখল করা হচ্ছে সরকারি জমি, খাল। ব্লক প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘কোথাও সরকারি জমি, খাল দখল করে এ সব করা হচ্ছে এমন খবর পেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। মসজিদবাটি এলাকায় একটি খাল দখল নিয়ে গণ্ডগোলের খবর পেয়েছি। সংশ্লিষ্ট দফতরের কাছে রিপোর্ট চেয়েছি। রিপোর্ট পেলে সেই মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন