মৃত্যুঞ্জয় দাস
তিনি হালিশহর পুরসভার শাসকদলের কাউন্সিলর। পুর পারিষদও। ‘প্রতিবাদী মুখ’ হিসেবে এলাকার বাসিন্দারা মৃত্যুঞ্জয় দাসকে চেনেন। রবিবার রাতে বাড়িতে চ়ড়াও হয়ে তাঁকে এবং তাঁর স্ত্রীকে মারধর করল এক দল দুষ্কৃতী। দুষ্কৃতীদের মারে জখম হয়েছেন সস্ত্রীক মৃত্যুঞ্জয়বাবু। হামলাকারীদের একজনকে ধরে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেন এলাকার বাসিন্দারা। অন্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।মৃত্যুঞ্জয়বাবু হালিশহর পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। দলের দীর্ঘ দিনের কর্মী। রবিবারের ঘটনায় আতঙ্কিত তাঁর পরিবার। মৃত্যুঞ্জয়বাবুর অভিযোগ, পুকুর ভরাট থেকে শুরু করে এলাকায় সমাজবিরোধী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে তিনি রুখে দাঁড়ান বলেই তাঁর উপরে এই হামলা। বিষয়টি দলের উপর তলায় জানিয়েছেন তিনি।
কী ঘটেছিল রবিবার রাতে?
মৃত্যুঞ্জয়বাবু জানান, কয়েক দিন ধরে তিনি অসুস্থ। খাওয়ার পরে শুয়ে পড়েছিলেন। তাঁর মেয়ে অর্ণবী পাশের ঘরে পড়ছিল। মৃত্যুঞ্জয়ের স্ত্রী রূপালি মেয়ের ঘরে বসেছিলেন। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ আচমকা ধুমধাড়াক্কা শব্দ। বাইরের বারান্দার গেট ভাঙা হচ্ছে। মৃত্যুঞ্জয় ধরে নেন, বাড়িতে ডাকাত পড়েছে। বারান্দায় বেরিয়ে সেই ভুল ভাঙে। মৃত্যুঞ্জয়ের কথায়, ‘‘বাইরে এসে দেখি, বারান্দায় আমার স্ত্রীকে মারধর করছে দুই যুবক। আর এক যুবক বাড়ির জিনিস ভাঙচুর করছে। বাড়ির বাইরে আরও কয়েকজন বাইক নিয়ে দাঁড়িয়েছিল। আমি যেতেই আমার উপরে চড়াও হল ওরা। মেয়ে তক্ষণে ভয়ে চিৎকার শুরু করেছে।
গোলমালের শব্দ শুনে আশেপাশের লোকজন চলে আসেন। পালানোর চেষ্টা করে দুষ্কৃতীরা। বাবাই রায় নামে একজন ধরা পড়ে যায়। তাকে মারধর করেন পাড়া-পড়শিরা। বীজপুর থানায় খবর দেন কাউন্সিলরই। কিছুক্ষণের মধ্যে পুলিশ এসে বাবাইকে গ্রেফতার করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাবাই এলাকারই বাসিন্দা। সমাজবিরোধী কাজের জন্য পুলিশের খাতায় নাম আছে। বাবাইয়ের সঙ্গে ছিল এলাকার আরও এক যুবক। তার নামেও থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃত্যুঞ্জয়।
তিনি বলেন, ‘‘বিভিন্ন দুষ্কর্মের প্রতিবাদ করায় আমার উপরে হামলা হল। আমি কাউন্সিলর হওয়ার পরে আমার ওয়ার্ডে কোনও পুকুর ভরাট করতে দিইনি। যখনই তেমন কিছু দেখেছি, প্রতিবাদ করেছি।’’
পুরপ্রধান অংশুমান রায় বলেন, ‘‘আমি ঘটনাটি শোনামাত্রই পুলিশকে ফোন করেছি। অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি দাবি করছি।’’ এলাকার বাসিন্দাদের প্রশ্ন, ‘‘প্রতিবাদ করে শাসক দলের কাউন্সিলরের হাল যদি এমন হয়, তা হলে সাধরণ প্রতিবাদীদের নিরাপত্তা কোথায়?’’