Arabul Islam

জগ ছুড়ে ‘খ্যাতি’ পাওয়া আরাবুলের গাড়িতে ছোড়া হল পাথর! দলের প্রতিষ্ঠা দিবসে আক্রান্ত ‘তাজা নেতা’

আরাবুল ইসলামের গাড়িতে হামলার ঘটনা নিয়ে ‘তাজা নেতা’কেই দায়ী করেছেন বিধায়ক শওকত মোল্লা। তাঁর অভিযোগ, পরিকল্পিত ভাবে অশান্তি করছেন আরাবুল। বিষয়টি দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে জানাবেন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২৫ ১৩:০৬
Share:

দলের প্রতিষ্ঠা দিবসে কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন আরাবুল ইসলাম। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসে পতাকা তুলতে গিয়ে ‘আক্রান্ত’ ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম। প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়কের গাড়িতে ছোড়া হল পাথর। ফেরার পথে হামলার মুখে পড়ে তাঁর গাড়ির একাংশ ভাঙল। বছরের পয়লা দিনে এ নিয়ে উত্তেজনা দক্ষিণ ২৪ পরগনার পোলেরহাট থানা এলাকায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে ছুটতে হল পুলিশকে। পুরো ঘটনার জন্য তৃণমূল নেতাকেই দায়ী করলেন তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লা। তাঁর অভিযোগ, পতাকা উত্তোলনের পরে দ্বিতীয় বার ওই কাজ করতে গিয়েছিলেন আরাবুল।

Advertisement

জানা যাচ্ছে, দলের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে বুধবার সকালে ভাঙড় এলাকায় একটি জায়গায় পতাকা উত্তোলন করতে যাচ্ছিলেন ‘তাজা নেতা’ আরাবুল। কিন্তু দলীয় পতাকা উত্তোলন নিয়ে তৃণমূলের দুই পক্ষের মধ্যে অশান্তির সূত্রপাত। জানা যাচ্ছে, বিবাদে জড়ান আরাবুলের অনুগামীরা এবং ক্যানিং পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক তথা ভাঙড়ের তৃণমূল পর্যবেক্ষক শওকতের অনুগামীরা। আরাবুলের অনুগামীদের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ করেন শওকতের লোকজন। সেই ‘রোষ’ গিয়ে পড়ে আরাবুলের গাড়িতে। কয়েক জন আরাবুলের গাড়ি লক্ষ্য করে পাথর ছোড়েন বলে অভিযোগ। গাড়ির পিছনের কাচ ভেঙে যায়। ওই ঘটনার পরে রাস্তা আটকে দুই পক্ষ মারামারি শুরু করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। বেশ কিছু ক্ষণ পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। আরাবুল অবশ্য এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে নারাজ। বিরক্তির সুরে তিনি বলেন, ‘‘আজ দলের প্রতিষ্ঠা দিবস। এ সব নিয়ে কিচ্ছু বলব না। যে যা পারে করুক।’’ ওই কথা বলে যখন আরাবুল হাঁটতে হাঁটতে তাঁর গাড়ির দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন, তখনও একদল তৃণমূল কর্মী বিক্ষোভ দেখান। সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের ঘিরে ধরে পুলিশ।

২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের পর বিতর্কে জড়িয়েছিলেন ভাঙড়ের ‘তৎকালীন দোর্দণ্ডপ্রতাপ’ তৃণমূল নেতা আরাবুল। ভাঙড় কলেজে ওয়েবকুটার প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি আরাবুলের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন ভূগোলের শিক্ষিকা দেবযানী দে। অভিযোগ, দু’তরফের মধ্যে বচসা চলাকালীন আচমকা ওই শিক্ষিকাকে লক্ষ্য করে প্লাস্টিকের জগ ছুড়ে মেরেছিলেন আরাবুল। থুতনিতে আঘাতও পান দেবযানী। ১৪ বছর পরে ভাঙড়ের ‘তাজা নেতা’ এখন দলের অন্দরেই কোণঠাসা। সম্প্রতি অপরাধের মামলায় জেল খেটে জামিনে মুক্ত আরাবুলের সঙ্গে শওকতের সরাসরি বিবাদ দেখা যাচ্ছে। এমনকি, জামিনে মুক্তি পেয়ে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পদে যোগ দিতে গিয়ে আরাবুল দেখেন, তাঁর জন্য বরাদ্দ ঘরটিও আর নেই। পরে কলকাতা হাই কোর্ট আরাবুলকে সপ্তাহে দু’দিন পঞ্চায়েত অফিসে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু ভাঙড়ে তৃণমূলের রাজনীতি এখন শওকতের নিয়ন্ত্রণে। সেই ছবিই দেখা গিয়েছে বুধবার।

Advertisement

আরাবুলের গাড়িতে হামলা নিয়ে শওকত বলেন, ‘‘ভাঙড় বিধানসভায় ১৩টি অঞ্চলে দলের পতাকা উত্তোলন করা হচ্ছিল। দলের পক্ষ থেকে গরিব মানুষদের শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে। বুথ কমিটির নেতারা সেই কাজ করছেন। শুনলাম, এক বার পতাকা তোলা হয়ে গিয়েছে। আবার সেই জায়গায় পতাকা উত্তোলন করতে গিয়েছেন উনি (আরাবুল)।’’ শওকতের সংযোজন, ‘‘এই মুহূর্তে উনি তো দলের কোনও পদে নেই। কেন পরিস্থিতি অশান্ত করার চেষ্টা করছেন, জানি না। বিষয়টি তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানাব। ভাঙড়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। কিন্তু কেন এ কাজ উনি (আরাবুল) করতে গেলেন, জানি না। উনি পরিকল্পিত ভাবে গন্ডগোল করছেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement