Bhangar

গার্লস স্কুলে ঢুকে ডিএ চাওয়া শিক্ষিকাদের ধমক! ভাঙড়ে ‘নতুন আরাবুলের’ দাপটে আতঙ্কে পড়ুয়ারাও

প্রধানশিক্ষিকা সন্ধ্যা মণ্ডল জানান, বালিকা বিদ্যালয়ে ঢুকতে গেলে আগে থেকে সেটা জানাতে হয়। সে সব না করে একদল যুবক বিনা অনুমতিতে স্কুলে ঢুকে অসম্মানজনক কথা বলেছেন।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৭:৩০
Share:

তৃণমূল নেতা সাবিরুল ইসলামের অভিযোগ, তিনি নেতা হয়ে নয়, অভিভাবক হিসাবে স্কুলে গিয়েছিলেন। নিজস্ব চিত্র।

বিনা অনুমতিতে দলবল নিয়ে বালিকা বিদ্যালয়ে ঢুকে শিক্ষিকাদের ধমকানো-চমকানোর অভিযোগ উঠল স্থানীয় তৃণমূল নেতা ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ভাঙড় বালিকা বিদ্যালয়ে। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় তৃণমূল নেতা সাবিরুল ইসলাম ও তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে। চোখের সামনে শিক্ষিকাদের এ ভাবে ধমক দেওয়া দেখে আতঙ্কিত স্কুল পড়ুয়ারাও। যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সাবিরুল।

Advertisement

শুধুমাত্র ৩ শতাংশ ডিএ বাড়ানোর প্রতিবাদে রাজ্য জুড়ে কর্মবিরতি ঘোষণা করেছেন রাজ্যের সরকারি কর্মীদের একাংশ। এই কর্মবিরতির ঢেউ আছড়ে পড়েছে ভাঙড়েও। ভাঙড় হাই স্কুল এবং ভাঙড় বালিকা বিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকারা কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন। অভিযোগ, শুক্রবার স্কুলে আচমকা ঢুকে পড়েন এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা ও ভাঙড় বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সাবিরুল। ১৪-১৫ জন অনুগামী নিয়ে ভাঙড় বালিকা বিদ্যালয়ে ঢুকে তিনি স্কুলের প্রধানশিক্ষিকা এবং অন্যান্য শিক্ষিকাকে ধমকান বলে অভিযোগ। জানতে চান, কেন তাঁরা ক্লাস নিচ্ছেন না। এক শিক্ষিকার কথায়, ‘‘আমাদের কাছে জানতে চাওয়া হয়, কেন রাজ্য সরকারের বদনাম করছি?’’

ভাঙড় বালিকা বিদ্যালয়য়ের প্রধানশিক্ষিকা সন্ধ্যা মণ্ডল বলেন, ‘‘বালিকা বিদ্যালয়ে ঢুকতে গেলে আগে থেকে জানাতে হয়। সে সব না করে একদল যুবক বিনা অনুমতিতে স্কুলে ঢুকে অসম্মানজনক কথা বলেছেন।’’ তিনি কারও নাম না করলেও আঙুল ওই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে।

Advertisement

নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন সাবিরুল। তিনি বলেন, ‘‘আমি তৃণমূল নেতা হিসাবে স্কুলে যাইনি। আমি একজন অভিভাবক হিসাবে স্কুলে গিয়েছিলাম। ওই স্কুলে আমার মেয়ে পড়ে। কেন দু’দিন ধরে পড়াশোনা হচ্ছে না, তা জানতে গিয়েছিলাম।’’

যদিও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে ভাঙড় হাইস্কুলেও। তবে এ ব্যাপারে সাবিরুল ও তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে কোনও মন্তব্য করেননি ভাঙড় হাই স্কুলের প্রধানশিক্ষক গোবিন্দচন্দ্র সরকার। স্থানীয় সূত্রে খবর, শুধু ভাঙড়ের এই দুই স্কুলই নয়, বামনঘাটা হাই স্কুল, হাটগাছা হরিদাস বিদ্যাপীঠ-সহ একাধিক স্কুলে কর্মবিরতি চলছে।

২০১২ সালে ভাঙড় কলেজে ওয়েবকুটার প্রার্থী নির্বাচন ঘিরে ভাঙড়ের তৎকালীন দাপুটে নেতা তথা ওই কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি আরাবুল ইসলামের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েছিলেন সেখানকার ভূগোলের শিক্ষিকা দেবযানী দে। অভিযোগ, দু’তরফের মধ্যে বচসা চলাকালীন আচমকা আরাবুল ওই শিক্ষিকাকে লক্ষ্য করে প্লাস্টিকের জগ ছুড়ে মারেন। থুতনিতে আঘাত পেয়েছিলেন দেবযানী। ওই ঘটনার এক বছর আগেই ২০১১ সালে রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছিল তৃণমূল। এই ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়েছিল শাসকদল। যদিও ভাঙড়ের প্রাক্তন বিধায়ক এবং বর্তমান তৃণমূল নেতা আরাবুলের প্রভাব এখনও যথেষ্ট। এ বার সামনে এল সাবিরুল-বিতর্ক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন