নতুন বছরে সুন্দরবনে উপছে পড়ল ভিড়

বুধবার সকাল থেকে সুন্দরবনের সোনাখালি, গদখালি, ঝড়খালি জেটিঘাটগুলিতে ভিড় লেগেছিল পর্যটকদের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সুন্দরবন  শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২০ ০০:২০
Share:

নৌকা-ভ্রমণ: জলপথে পর্যটকেরা। নিজস্ব চিত্র

নতুন বছরের প্রথমদিনে পর্যটকদের ঢল নামল সুন্দরবনে। বুধবার সকাল থেকে সুন্দরবনের সোনাখালি, গদখালি, ঝড়খালি জেটিঘাটগুলিতে ভিড় লেগেছিল পর্যটকদের। সেখান থেকেই লঞ্চে চেপে সুন্দরবন ভ্রমণের জন্য পাড়ি দেন তাঁরা।

Advertisement

কিছুদিন আগেও রাজ্য জুড়ে অশান্তির কারণে সুন্দরবনে পর্যটকরা আসছিলেন না। ফলে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছিল পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত মানুষজনের। কিন্তু নতুন বছরের শুরুতেই আবারও পুরনো ছন্দে সুন্দরবনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে সুন্দরবনে হাজির কয়েক হাজার পর্যটক। বুধবার সকাল থেকেই সুন্দরবনের ঝড়খালি, সজনেখালি, পাখিরালয়-সহ অন্য পর্যটনকেন্দ্রগুলিতে ভিড় জমিয়েছিলেন পর্যটকরা।

সারাদিন লঞ্চে চেপে নদী ও ম্যানগ্রোভের জঙ্গলের প্রাকৃতিক শোভা উপভোগের পাশাপাশি দেদার খাওয়া দাওয়ার মধ্যে দিয়েই বছরের প্রথম দিনটি কাটালেন পর্যটকরা। কলকাতার নিউ আলিপুর থেকে সুন্দরবনের পাখিরালয়ে বেড়াতে আসা রবিন গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “সুন্দরবন বরাবরই খুব ভাল বেড়ানোর জায়গা। বছরের প্রথম দিনটিতে আনন্দ করতে তাই পরিবারের সকলের সঙ্গে এখানে বেড়ানোর জন্য এসেছি আমরা।’’

Advertisement

মরসুমের সেরা ভিড় এ দিন হয়েছিল সুন্দরবনের ঝড়খালি পর্যটনকেন্দ্রে। বিপুল পরিমাণে পর্যটকরা এ দিন ঝড়খালিতে আসায় খুশি এলাকার সাধারণ ব্যবসায়ীরা। অনেকদিন পর এ দিন তাঁদেরও ব্যবসা ভাল হয়েছে বলে জানালেন তাঁরা। গোবিন্দ বায়েন, নূপুর মণ্ডলরা বলেন, “বছরের প্রথম দিনে প্রচুর মানুষজন ঝড়খালিতে বেড়াতে আসায় আজ বিক্রি ভালই হয়েছে। অনেকদিন পরে এত পর্যটক একসঙ্গে এলেন ঝড়খালিতে।’’ বছরের প্রথম দিনে পর্যটকদের এই ভিড় মুখে হাসি ফুটিয়েছে সুন্দরবনের পর্যটন ব্যবসায়ীদের। পর্যটন ব্যবসায়ী নিউটন সরকার বলেন, “এই পর্যটন মরসুমের প্রথম থেকেই বিভিন্ন কারণে ব্যবসা ঝার খাচ্ছিল। তবে নতুন বছরের প্রথম দিনে যে ভাবে পর্যটকদের ঢল সুন্দরবনে নামতে শুরু করেছে তাতে আমরা সকলেই আশায় বুক বাঁধছি।’’

বছরের প্রথম দিন ভিড় উপচে পড়েছে ক্যানিং ২ ব্লকের কালিকাতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের নলবুনি ইকো পার্কেও। ক্যানিংয়ের কালিকাতলার নলবুনিতে সম্প্রতি প্রায় ২৫ বিঘা জমির উপর এই ইকো পার্কটি তৈরি হয়েছে। কয়েক বছর আগে কালিকাতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান আব্দুল হাই প্রথমে এখানে একটি শিশুদের পার্ক করার পরিকল্পনা করেছিলেন।

বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয় বিধায়ক সওকত মোল্লা এত বড় জায়গায় শুধু শিশুদের পার্ক তৈরি না করে সবার কথা ভেবে ইকো ট্যুরিজম পার্ক তৈরি করার প্রস্তাব দেন। সেই মতো তৈরি হয় নলবন ইকো ট্যুরিজম পার্ক। বিভিন্ন প্রজাতির ফুল ও ফলের গাছ দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়েছে পার্কটিকে।

ফল-ফুল সমৃদ্ধ পার্কটিতে ভিড় জমায় দেশ-বিদেশের পরিযায়ী পাখির দল। পার্কের ভিতরেই তৈরি হয়েছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অতিথি নিবাস। পর্যটকরা চাইলে সেখানে রাত্রিবাসও করতে পারেন।

পার্কের ভিতরেই আনাজের খেত, মাছ ধরার ব্যবস্থাও রয়েছে সেখানে। চাইলে কেউ এখানে মাছ ধরে, খেতের আনাজ দিয়ে বনভোজনও সারতে পারেন। বোটিং, খোলাধুলার ব্যবস্থাও রয়েছে। পার্ক কর্তৃপক্ষ জানান, বহু মানুষই পার্কে আসছেন। বিশেষ করে শীতকালে সকাল থেকে সন্ধ্যে পার্ক ভরে থাকছে। বর্ষবরণের দিনে পার্কের উপচে পড়া ভিড়ে খুশি কর্তৃপক্ষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন