নির্দল প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন জমা দিলেন তৃণমূল নেতা

বনগাঁ শহর তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক তথা দলের শিক্ষক নেতা মনোতোষ ওরফে লাল্টু নাথ নির্দল প্রার্থী হিসাবে হিসাবে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন। শেষ মুহূর্তে দলের অন্দরের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে প্রার্থী তালিকা নিয়ে যাতে গোলমাল না বাধে, সে জন্য এ বার আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রার্থী তালিকা প্রকাশের রাস্তাতেই হাঁটেনি তৃণমূল। অশোকনগর-কল্যাণগড়ের ক্ষেত্রে প্রার্থীদের নিয়ে গিয়ে সরাসরি জেলাশাসকের অফিসে মনোনয়নপত্র জমা করানো হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বনগাঁ শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৫ ০২:৫৬
Share:

বনগাঁ শহর তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক তথা দলের শিক্ষক নেতা মনোতোষ ওরফে লাল্টু নাথ নির্দল প্রার্থী হিসাবে হিসাবে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন।

Advertisement

শেষ মুহূর্তে দলের অন্দরের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে প্রার্থী তালিকা নিয়ে যাতে গোলমাল না বাধে, সে জন্য এ বার আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রার্থী তালিকা প্রকাশের রাস্তাতেই হাঁটেনি তৃণমূল। অশোকনগর-কল্যাণগড়ের ক্ষেত্রে প্রার্থীদের নিয়ে গিয়ে সরাসরি জেলাশাসকের অফিসে মনোনয়নপত্র জমা করানো হয়েছে। বনগাঁয় মনোনয়ন জমা দেওয়ার আগের মুহূর্তে মহকুমাশাসকের অফিসের সামনেই প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু পুরভোটের মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন, বুধবার ঘরোয়া কোন্দল প্রকাশ্যে এসেই পড়ল শাসক দলের।

ঘটনাটি বনগাঁ পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের। ওই ওয়ার্ড থেকে বর্তমান কাউন্সিলর সুফল হালদার তৃণমূলের প্রতীকে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। এ দিন কয়েকশো কর্মীকে নিয়ে মিছিল করে ওয়ার্ড থেকে লাল্টুবাবু বনগাঁ মহকুমাশাসকের দফতরে পৌঁছন। মিছিল থেকে কর্মীরা স্লোগান দিতে থাকেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ। তৃণমূল কংগ্রেস জিন্দাবাদ।”

Advertisement

মনোনয়ন জমা দেওয়ার পরে লাল্টুবাবু বলেন, “আমি ভোটে দাঁড়াতে চাইনি। কিন্তু ওয়ার্ডের দলীয় কর্মী-সমর্থকদের চাপে আমাকে ভোটে দাঁড়াতে হয়েছে।” তিনি ‘উদীয়মান সূর্য’ প্রতীকে দাঁড়িয়েছেন। এ দিন থেকে ওয়ার্ডে প্রচারও শুরু করেছেন তিনি।

লাল্টুবাবুর প্রয়াত বাবা পরিতোষ নাথ ১৯৮৫-৯১ সাল পর্যন্ত আমৃত্যু বনগাঁ পুরসভার কংগ্রেসের চেয়ারম্যান ছিলেন। অনেকেই তাঁকে ‘আধুনিক বনগাঁ শহরের রূপকার’ বলে মনে করেন, শ্রদ্ধাও করেন। তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকেই স্থানীয় বনগাঁ ঘোষ ইনস্টিটিউশনের শিক্ষক লাল্টুবাবু তৃণমূলের সঙ্গে আছেন। বছর আটচল্লিশের ওই শিক্ষক দলের পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যামিক শিক্ষক সমিতির বনগাঁ শহরের আহ্বায়ক। তাঁর কাকা প্রয়াত প্রশান্ত ওরফে কেচকো তৃণমূলের হয়ে বনগাঁ বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী ছিলেন। লাল্টুবাবুর মা জ্যোত্‌স্নাদেবী পুরসভার তৃণমূলের প্রাক্তন কাউন্সিলর।

কেন লাল্টুবাবু তৃণমূল প্রার্থীর বিরুদ্ধে দাঁড়ালেন?

দলীয় সূত্রের খবর, এ বার প্রথম থেকেই লাল্টুবাবু প্রার্থী হওয়ার দাবিদার ছিলেন। ওয়ার্ডে প্রার্থী বাছাই কমিটির বৈঠকেও লাল্টুবাবুর পক্ষে বেশিরভাগ কর্মীরা মত দেন। ওয়ার্ডের কর্মীরা দলবদ্ধ ভাবে বনগাঁ উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক বিশ্বজিত্‌ দাসের কাছে গিয়ে লাল্টুবাবুকে প্রার্থী করতে চেয়ে স্মারকলিপিও জমা দিয়েছিলেন।

ওয়ার্ডের তৃণমূল কর্মীদের একাংশের দাবি, সুফলবাবু কংগ্রেস থেকে কিছু দিন আগে ফের কাউন্সিলর হওয়ার লোভে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। তিনি ওই ওয়ার্ডে ২০১০ সালে কংগ্রেসের প্রতীকে জয়লাভও করেছিলেন। অনেক তৃণমূল কর্মীর সঙ্গেই তাঁর দূরত্ব ছিল। তা ছাড়া, তাঁর বিরুদ্ধে কর্মীরা স্বজনপোষণের অভিযোগও তুলেছেন।

লাল্টুবাবুকে কেন প্রার্থী করা হল না?

বিশ্বজিত্‌বাবু বলেন, “দলীয় নির্দেশ ছিল, বর্তমান কাউন্সিলরদের টিকিট দিতে হবে। ফলে লাল্টুবাবুকে প্রার্থী করা যায়নি।” বনগাঁ শহর তৃণমূল সভাপতি শঙ্কর আঢ্য জানিয়েছেন, লাল্টুবাবু দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোটে দাঁড়িয়ে দলবিরোধী কাজ করেছেন। দল ওঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন