ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত দুই কিশোরী

শ্রীপল্লি এলাকা এখন শোকস্তব্ধ। প্রতিবেশীরা ওই কিশোরীদের বাড়িতে ভিড় করছেন। দেবী বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান। বাবা বিমলবাবু পেশায় রাজমিস্ত্রি। বলছিলেন, ‘‘মেয়েকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল। সব শেষ হয়ে গেল।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গোপালনগর শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৭ ০২:৫৬
Share:

মৌমিতা মল্লিক, দেবী ঢালি

সাইকেল করে গৃহশিক্ষকের কাছে পড়তে যাচ্ছিল দুই কিশোরী। পথে আনাজ-বোঝাই ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হল দু’জনেরই।

Advertisement

রবিবার দুর্ঘটনাটি ঘটেছে গোপালনগরের কালীবাড়ি মোড় এলাকার বনগাঁ-চাকদহ সড়কে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম মৌমিতা মল্লিক (১৭) ও দেবী ঢালি (১৭)। বাড়ি শ্রীপল্লি এলাকায়। দু’জনেই শ্রীপল্লি প্রিয়নাথ হাইস্কুলে একাদশ শ্রেণিতে পড়ত। পুলিশ ট্রাকটি আটক করেছে। চালক পলাতক।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুরে মৌমিতা সাইকেল করে দেবীকে নিয়ে রামচন্দ্রপুরে পড়তে যাচ্ছিল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কালীবাড়ি মোড়ের কাছে রাস্তার পাশে একটি ছোট গাড়ি দাঁড়িয়ে ছিল। রাস্তার মাঝখানে আবার স্প্রিং পোস্ট বসানো হয়েছে। ফলে রাস্তাটি সরু হয়ে গিয়েছে। ওই ছোট গাড়ির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময়ে মৌমিতা ও দেবী নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তায় পড়ে যায়। সে সময়ে পিছনে থাকা ট্রাকটি তাদের পিষে দেয়। স্থানীয় বাসিন্দারা ও পুলিশ এসে দেহ দু’টি বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসকেরা তাদের মৃত বলে ঘোষণা করেন।

Advertisement

শ্রীপল্লি এলাকা এখন শোকস্তব্ধ। প্রতিবেশীরা ওই কিশোরীদের বাড়িতে ভিড় করছেন। দেবী বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান। বাবা বিমলবাবু পেশায় রাজমিস্ত্রি। বলছিলেন, ‘‘মেয়েকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল। সব শেষ হয়ে গেল।’’ মৌমিতার বাবা নৃপেনবাবুও রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। তাঁর কথায়, ‘‘ওই রাস্তায় আর কত মৃত্যু হবে।’’

ওই গৃহশিক্ষকের কাছে পড়তে যাচ্ছিল মৌমিতাদের আরও এক বন্ধু। পিয়ালি বিশ্বাস নামে ওই কিশোরীও ঘটনার পরে আর পড়তে যেতে পারেনি। আতঙ্কে রয়েছে। সাইকেল চালিয়ে পড়তে যায় সে-ও। সাইকেলে নিয়ে আর ওই পথে যাওয়ার সাহস নেই, জানায় পিয়ালি।

স্থানীয় বাসিন্দারা এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ। তাঁদের অভিযোগ, এমনিতেই দীর্ঘ দিন ধরে ওই সড়কের পাশ দখল করে বেআইনি ভাবে সারি দিয়ে ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকে। গোপালনগর কালীবাড়ি এলাকায় বিভিন্ন দোকানের সামনে বাইক, ছোট গাড়ি, সাইকেল দাঁড়িয়ে থাকে। রাস্তার উপরে ভ্যান থাকে। ফলে রাস্তা অপরিসর হয়ে যায়। সেখান দিয়ে যাতায়াতে অসুবিধা হয়। প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নেয় না।

স্থানীয় বাসিন্দা প্রশান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘এখানে বৃহস্পিতবার ও রবিবার হাট বসে। আনাজ নিয়ে ট্রাকগুলি এখান থেকে ভিন রাজ্যে যায়। ট্রাকগুলি বেপরোয়া গতিতে যাতায়াত করে। ফলে দুর্ঘটনা বাড়ছে।’’ এলাকার মানুষ সড়ক থেকে ট্রাক সরানোর দাবিতে ফের একবার সরব হয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন